জিয়াউল হক জিয়া, কুলাউড়া প্রতিনিধি:- কুলাউড়ায় ব্যাপক হারে শিশুরা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। হিমশিম খাচ্ছে উপজেলার ৫০ শয্যা হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু হাসপাতালের সকল বেডে ভর্তি থাকায়, অন্যান্য রোগীদের অন্যত্র প্রেরণ করতে বাধ্য হচ্ছেন কর্তব্যরতরা। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর হারে আতঙ্কিত অভিভাবকরা।
বর্তমানে উপজেলা সদর হাসপাতালের চিত্র দেখলে মনে হবে এটি কোন শিশু হাসপাতাল। মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ডের সবক’টি বেডে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুরা অবস্থান করছে। পাশাপাশি শিশুদের পরিবার পরিজন রয়েছেন হাসপাতালে। ১৭ সেপ্টেম্বর কুলাউড়া হাসপাতালে সরেজমিন গেলে সবক’টি বেডে দেখা যায় শিশু রোগি ভর্তি।
কারণ জানতে চাইলে হাসপাতাল সুত্রে জানায়, ভর্তিকৃত প্রায় সব শিশুই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। হাসপাতালের রেকর্ড অনুসারে গত জুলাই মাসে কুলাউড়া হাসপাতালে শুন্য থেকে ২৪ মাস বয়সী নিউমোনিয়া আক্রান্ত ১২০১ জন শিশু চিকিৎসা গ্রহণ করে। এরমধ্যে ৫৭৩ জন ছেলে এবং ৬২৮ জন মেয়ে শিশু।আগস্ট মাসে চিকিৎসা নেয় ছেলে ৬২১ জন এবং মেয়ে ৫৩৫ জন। এরমধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৩৩ জন শিশুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। তবে নিউমোনিয়ায় কোন শিশু মৃত্যুর কোন রেকর্ড নেই হাসপাতালে ।
১৬ সেপ্টেম্বর রাতে উপজেলার ভুকশিমইল ইউনিয়নের গৌড়করণ গ্রামের জাহেদ আলীর স্ত্রী নিউমোনিয়া আক্রান্ত ২ শিশুকে নিয়ে এসেছিলেন কুলাউড়া হাসপাতালে। হাসপাতালে সিট নাই দেখে ঔষুধপত্র কিনে দুই শিশুর কেনোলা লাগিয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন। তিনি জানান, ঔষুধ কিনলাম। কিন্তু হাসপাতাল থেকে কেনোলা লাগিয়ে দিতে একশ টাকা দাবি করেন। দুটি শিশুকে কেনোলা লাগানোর জন্য ২শত টাকা দিতে হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের মতে, অতিরিক্ত গরমে সৃষ্ট ঘাম থেকে ঠান্ডা লেগে শিশুর নিউমোনিয়া, সর্দি, কাশি এই জাতের রোগ বেশি দেখা দিয়েছে। অভিভাবকরা সচেতন হলে শিশুদের রক্ষা করা সম্ভব।
কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরুল হক জানান, মুলত আবহাওয়া জনিত কারণে শিশুরা নিউমোনিয়ায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। আর যেসব বাচ্চা পুরো কোর্স টিকা সময় মতো গ্রহণ করে না, তারাই আক্রান্ত হয় বেশি। নিউমোনিয়া ছাড়াও ব্রংকিউলাইটিস ভাইরালজনিত রোগও আছে। আমরা নিউমোনিয়া হিসেবে চিকিৎসা দিয়ে থাকি। এই রোগের প্রকোপ থেকে বাঁচতে হলে অভিভাবকদের সচেতনতা সবচেয়ে বেশি জরুরী।
Posted ৬:০৩ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad