মঙ্গলবার ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

মানচিত্রের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু

সিলেটে বঙ্গবন্ধু

গোবিন্দ রায় সুমন   বৃহস্পতিবার, ১৫ আগস্ট ২০১৯     2660 ভিউ
সিলেটে বঙ্গবন্ধু

ফাইল ছবি

মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বাংলাদেশ এ তিনটি নাম এক অবিচ্ছেদ্য। স্বপ্নদ্রষ্টা, নির্মাতা, স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর প্রেম ও দ্রোহের ইতিহাস হয়তো সবটুকু আমাকে জানা নেই। সাতচল্লিশের রেফারেন্ডাম থেকে শুরু করে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, চুয়ান্নর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬৬ এর ৬ দফা, ৬৯ এর গণঅভুত্থ্যান এবং একাত্তরের স্বাধীনতা। সে সব আন্দোলনে বহুবার বঙ্গবন্ধুকে আসতে হয়েছিল শাহজালাল শাহ পরানের পূণ্যভূমি সিলেটে। ইতিহাসের বিশাল মানচিত্রে বঙ্গবন্ধুর সিলেট ভ্রমনের ইতিহাস আমাদের অনেকের কাছেই অজানা। সিলেটের মানুষজনের সাথে শেখ মুজিবুর রহমানের ছিল গভীর সম্পর্ক আর সে কারণেই বঙ্গবন্ধু এই পূণ্যভূমিতে একটি বাড়ি নির্মাণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু সিলেট আসতেন ভ্রমণের জন্য নয় সংগ্রাম, রাজনীতি ও স্বাধীনতার দাবি নিয়ে।
বখতিয়ার বিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি বিজড়িত এই স্কুল। ১৯৪৭, সেই সময়ে বঙ্গবন্ধু কলকাতা ইসলামিয়া কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। তখন প্রায় ৫০০ জন ছাত্র নিয়ে বঙ্গবন্ধু আসেন সিলেটে। এটাই তার প্রথম সিলেট সফর। সে সময় তাকে এই স্কুলটিতেই থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আর তখনই শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে পরিচিত হন দেওয়ান ফরিদ গাজী। তখন তরুণ ছাত্রনেতা ফরিদ গাজীর উপর দায়িত্ব পড়ে কলকাতা থেকে আগত ছাত্র নেতাদের দেখাশোনা করার। ফরিদ গাজীর কর্তব্যনিষ্ঠা, অসীম সাহস, অমায়িক ব্যবহার ও বিচক্ষণতা শেখ মুজিবুর রহমানকে আকৃষ্ট করে। তিনি হয়ে যান শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রিয় পাত্র।
যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হবার পর শেখ মুজিব ১৯৫৪ সালের সিলেট আসেন। তখন তিনি প্রথম যুক্তফ্রন্ট সরকারের বন, পরিবেশ ও প্রাদেশিক মন্ত্রী। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী আতাউর রহমান খানের সফর সঙ্গী হয়ে তিনি সিলেট এসেছিলেন।
১৯৬৭, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের দলীয় কাজে সিলেট এসেছিলেন। তাঁর সাথে সিলেটের তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের যে ছবি পরবর্তীতে পাওয়া যায় সেই ছবিটি তালতলা গুলশান হোটেলে অবস্থানকালে তোলা ছবি। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিময় গুলশান হোটেল পরবর্তীতে সিলেট আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রিয় স্থানে পরিণত হয়। জানা যায় ১৯৬৭ সালে এই গুলশাল হোটেলে বসেই বঙ্গবন্ধু বৃহত্তর সিলেটের আওয়ামী লীগের কাজকে ত্বরান্বিত করার পরিকল্পনা করেছিলেন।
১৯৬৭ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত জাতীয় নির্বাচনের সময় বঙ্গবন্ধু বেশ কয়েকবার সিলেটে আসেন। তখন তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জন্য সমাবেশে বক্তৃতা দেন। সবচেয়ে বড় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল কর্নেল ওসমানী সাহেবের নির্বাচনী এলাকা ফেঞ্চুগঞ্জে। তখন বঙ্গবন্ধু ওসমানী সাহেবের সিলেট নায়রপুলস্ত বাসায় উঠেছিলেন।
সিলেটের প্রবেশদ্বার হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানা। ১৯৬৯ সালে মে মাসে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে মুক্তিলাভ করার পর বঙ্গবন্ধু সারাদেশে গনসংযোগ করেন। তখন ছিল এহিয়া খানের মার্শাল’ ল। বঙ্গবন্ধু তখন সড়কপথে ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়ার পথে মাধবপুরে যাত্রাবিরতি করেন। তখন মাধবপুর ডাকবাংলায় কিছুক্ষন তিনি বিশ্রাম নেন। তারপর তাঁর বিশেষ পরিচিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামী মাহবুব উদ্দিন চৌধুরী, মাওলানা আসাদ আলী ও আন্দিউড়া নিবাসী দুলাল চৌধুরী প্রমুখের সঙ্গে কিছুসময় মতবিনিময় করেন।
ছয়দফা দাবিতে যখন সারাদেশ উত্তাল তখন বঙ্গবন্ধু আসেন বিয়ানীবাজারে। ১৯৬৯ সালে বঙ্গবন্ধু যখন সারা দেশ সফর করছিলেন তখন তিনি আবার আসেন বিয়ানীবাজারে। সে সময় বঙ্গবন্ধু বিয়ানীবাজার সদর পোষ্ট অফিস মোড়ে জনসভায় ভাষন দেন। সেদিন তিনি বলেছিলেন- বিয়ানীবাজারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে আমার মনে হচ্ছে এটি যেন বাংলার কাশ্মীর।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চা-শ্রমিকদের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৫৭-৫৮ সালে তিনি চা-বোর্ডের প্রথম বাঙ্গালী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এসময় তিনি শ্রীমঙ্গলে চা-বাগান পরিদর্শনে আসেন। শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত চা-মিউজিয়ামে বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত চেয়ার, টেবিল, খাট সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। যা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বহন কওে চলছে। ১৯৫৭ সালে চা-বোর্ডেও অধীন পাকিস্তান টি রিসার্চ স্টেশন বর্তমানে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট শ্রীমঙ্গলে প্রতিষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুর সরাসরি হস্তক্ষেপে ও তৎপরতায় এ প্রতিষ্ঠানের নিমার্ণ কাজ দ্রæততার সাথে সম্পন্ন হয়। বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ সংগ্রামের ফলে চা শ্রমিকরা নাগরিকত্ব ও ভোটাধিকারপ্রাপ্ত হয়।
১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে বঙ্গবন্ধু মুক্তি লাভ করার পর সারাদেশে গণসংযোগ করেন। সে সময় বঙ্গবন্ধু আবার আসেন শ্রীমঙ্গলে। বঙ্গবন্ধু আগমনের খবর শুনে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় ভিড় জমান বঙ্গবন্ধুকে সংবর্ধনা জানানোর জন্য। কথা ছিল বেলা ২ টায় আসবেন কিন্তু আসলেন রাত তিনটায়। শ্রীমঙ্গল শহর তখনও লোকে লোকারণ্য। মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় বঙ্গবন্ধু আপ্লুত হন। বঙ্গবন্ধু সে সময় উঠলেন আব্দুল আলী সাহেবের বাসায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৯ সালের প্রথম মৌলভীবাজার এসেছিলেন। উঠেন শহরের বর্তমান শাহমোস্তোফা সড়কের ওয়াবদা রেষ্ট হাউসে। তাঁর আগমন ও আয়োজনের মূল ব্যবস্থাপক ছিলেন ওই সময়ের আওয়ামী লীগের সংগঠক মির্জা আজিজ আহমদ বেগ। চৌমুহনা টাউন দেওয়ানি জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় শেষে বিকেল আড়াইটার সময় স্থানীয় জনমিলন কেন্দ্রে মতবিনিময় ও পরিচিতি সভায় যোগ দেন। উনসত্তরের পর ১৯৭০ ও ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু আবারো মৌলভীবাজার আসেন। ১৯৭০ সালে সারাদেশে নির্বাচনী প্রচারের এক পর্যায়ে মৌলভীবাজারে এসে রাত্রি যাপন করেন বঙ্গবন্ধু। পরদিন কুলাউড়া জুড়ী বড়লেখা ও টেংরাবাজার জনসভা শেষে মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে লক্ষাধিক জনতার সমাবেশে শেখ মুজিব পাকিস্তানের শোষনের ধারাবাহিক বিবরণ তুলে ধরেন। স্বাধীনতা পর ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু আবারো মৌলভীবাজার আসেন। তখনোও সরকারি স্কুল মাঠে বক্তৃতা রাখেন। সে দিন স্কুলের মাঠ সহ চার দিকের রাস্তাঘাট, দোকানের চাল, গাছের ঢাল সর্বত্র কেবল মানুষ আর মানুষ।
১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় বঙ্গবন্ধু সিলেটে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কর্নেল ওসমানী সাহেবের জন্য এসেছিলেন। তখন আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের জনসমাবেশে তিনি বক্তৃতা করেন। সবচেয়ে বড় সমাবেশ হয়েছিল কর্ণেল ওসমানী সাহেবের নির্বাচনী এলাকা ফেঞ্চুগঞ্জে। তারপর তিনি যান বালাগঞ্জ।
হবিগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম আসেন ৭০ এর নির্বাচনের পূর্বে। সে সময় হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগ শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জনসভার আয়োজন করেছিল। বঙ্গবন্ধু ভাষণ দেবেনÑখবরটি শুনেই মানুষের মধ্যে অন্যরকম উত্তেজনা কাজ করছিল। স্বচক্ষে বঙ্গবন্ধুকে একনজর দেখা আর তাঁর ভাষণ শুনার জন্য লাখো মানুষ জড়ো হয়। বঙ্গবন্ধু তখন বাঙালির মনে এক অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে স্থান করে নিয়েছেন। তাঁকে ঘিরে ততদিনে বাঙালি কৃষক, শ্রমিক, মেহনতী মানুষ আর যুবসমাজ নতুন এক স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। রমজান মাস। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। বঙ্গবন্ধু তখন সভাস্থলে আসতে পারেননি। বঙ্গবন্ধু এলেন রাত ১০ টায়। হবিগঞ্জের ছোট তিন কামরার সার্কিট হাউসের দক্ষিনের রুমে বঙ্গবন্ধু শুয়েছিলেন।
বঙ্গবন্ধু আবার হবিগঞ্জ আসলেন ১৯৭৩ সালের প্রথম দিকে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় পরিষদ নির্বাচনের পূর্বে। হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারি কলেজ সংলগ্ন পশ্চিমের আনসার ফিল্ড বা নিউফিল্ড নামক স্থানে এক ঐতিহাসিক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সকাল ১১ টায় সভা আরম্ভ হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর ভাষনের পূর্বে জেনারেল ওসমানী সাহেব বক্তব্য পেশ করেছিলেন। জয়বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু আওয়াজে চারদিক মুখরিত। বঙ্গবন্ধু দুইহাত উপরে উঠিয়ে উত্তাল জনমসদ্রে সবাইকে অভিবাদন জ্ঞাপন করেন।

১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলনের সময় জনমত তৈরির সময় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন সমস্ত বাংলাদেশ সফর করছিলেন তখন তিনি সিলেটেও আসেন। সে সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমান তাঁর জীবদশায় ৩০৫৩ দিন জেলখানায় ছিলেন। এর মধ্যে ৫ দিন তিনি ছিলেন সিলেট কেন্দ্রিয় কারাগারে। বঙ্গবন্ধুকে যে ঘরটিতে রাখা হয়েছিল বর্তমানে সেটি বঙ্গবন্ধু মিউজিয়াম নামে সংরক্ষন কওে সেখানে স্থাপন করা হয়েছে একটি লাইব্রেরি। কারণ এই ঘরটিতে বসেই বঙ্গবন্ধু চিঠি লিখতেন তাঁর স্বজনদের কাছে।

হবিগঞ্জ জেলার ভাটি এলাকার থানা আজমিরীগঞ্জ। ভেরা, মোহনা নদীর তীঁরে আজমিরীগঞ্জ এককালে ভাটি-বাংলার ব্যবসা-বানিজ্যের প্রধান কেন্দ্র ছিল। নদীপথে ভৈরব ও ঢাকার সঙ্গে সহজ যোগাযোগ মাধ্যম ছিলো। ১৯৭০ সালের সেপ্টেম্বর মাস বর্ষাকালে সর্বত্র পানি আর পানি। বঙ্গবন্ধু লঞ্চযোগে ময়মনসিংহের কুলিয়ারচর হয়ে আজমিরীগঞ্জ এসে পৌছলেন। নৌকাযোগে হাজার হাজার জনতা বঙ্গবন্ধুকে দেখার জন্য সমবেত হলো। তিনি প্রথমে লঞ্চ থেকে নেমে শাহ ইসহাক রাহ‘ র মাজার জিয়ারত করেন। বঙ্গবন্ধু লঞ্চে দাঁড়িয়েই ভাষন দিলেন। ভাষণে তিনি ৬ দফাসহ আওয়ামী লীগের স্বাধীকার আন্দোলনের কথা বললেন। নবীগঞ্জ, বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ নির্বাচনী এলাকায় বঙ্গবন্ধুর মনোনিত প্রার্থী কর্নেল এম, এম, রব সাহেব ও বানিয়াচং আজমিরীগঞ্জ প্রাদেশিক পরিষদে প্রার্থী গোপাল কৃষ্ণ মহারতœকে জনতার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। তখন আওয়ামী লীগের বিপক্ষে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধী ছিলেন রফিক মিয়া। বঙ্গবন্ধু ১৫-২০ মিনিটের ভেতর ভাষণ সমাপ্ত করে লঞ্চযোগে দিরাই চলে যান।
ভাটি বাংলার রাজধানী সুনামগঞ্জের সাথে বঙ্গবন্ধু ছিল ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। সুনামগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর বহু রাজনৈতিক সহচরের জন্ম। পাঁচ র্মাচ ১৯৭৩, দিরাই উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণ দিকের মাঠে জনতার ঢল নেমেছিল সেদিন। অত্র অঞ্জলের প্রতিটি গ্রাম থেকে বাঁধভাঙা জোয়ারের মত জনতার ঢল নেমেছিল বঙ্গবন্ধুকে দেখার জন্য। হেলিকপ্টারে চড়ে এলেন বঙ্গবন্ধু। বাংলার মুকুটহীন রাজার পরনে সেই চিরপরিচিত পোশাক সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি আর মুজিব কোট। সেটি ছিল বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয়বারের মতো সুনামগঞ্জে আশা। নির্ধারিত সময়ের মিনিট খানেক আগেই বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শেষ হয়। বঙ্গবন্ধু ভাষণ শেষ করে মঞ্চ থেকে নামবেন এমন সময় ঘোষণা এলো এখন গান গাইবেন বাউল শাহ আব্দুল করিম। এমন সময় নেতা ঘুরে দাঁড়ালেন বলেন-‘করিম গান গাইবে আর আমি চলে যাবো তা হয় না গান শুনেই যাবেন’ আবার এসে বসলেন মঞ্চে। প্রিয় শাহ আব্দুল করিম কে সেদিন পাঁচশত টাকা সম্মানী দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।
সিলেটের অপরূপ প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের টানে নয়, মুক্তিসংগ্রামের নানা আন্দোলনকে ঘিরে বঙ্গবন্ধুর সিলেট সফর। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবনের বহু সহযোদ্ধা ও ঘনিষ্ট সহচর রয়েছেন এই সিলেট অঞ্চলে। তাদের মধ্যে জননেতা দেওয়ান ফরিদ গাজী, জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী, মেজর জেনারেল এম এ রব বীর উত্তম, জননেতা আব্দুল সামাদ আজাদ, কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরী, এনামুল হক মোস্তফা শহীদ, জননেতা মোহাম্মদ ইলিয়াস, সৈয়দ মহসিন আলী প্রমুখ সহ বঙ্গবন্ধুর স্নেহভাজন সিলেটের তিন আমলা এম এস কিবরিয়া, হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী ও আব্দুল মাল আবদুল মুহিত।
২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি সেনাদের হাতে প্রেফতারের পূর্ব মুহূর্তেই সারাদেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও পরিচিতজনদের কাছে তিনি একটি তার বার্তা প্রেরণ করেন। এটাই ছিল মূলত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র। যা পরদিন সারাদেশে নানাভাবে প্রচার হতে থাকে এই ঘোষণাপত্রটি। সিলেটে যাদের কাছে এই তার বার্তা পৌঁছে ছিল তারা হলেন- জননেতা আলহাজ্ব দেওয়ান ফরিদ গাজী, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, অ্যাডভোকেট মোস্তফা আলী, কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরী ও মোহাম্মদ ইলিয়াছ।
স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক ও জাতি হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম বাঙালি জাতি যেমন কোন দিন ভুলতে পারবে না। তেমনি সিলেটের সাথে বঙ্গবন্ধুর যে গভীর হৃদতা ও ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল তা কোনদিন ভুলবার নয়।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৬:০৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৫ আগস্ট ২০১৯

Sylheter Janapad |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
সম্পাদক ও প্রকাশক
গোবিন্দ লাল রায় সুমন
প্রধান কার্যালয়
আখরা মার্কেট (২য় তলা) হবিগঞ্জ রোড, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার
ফোন
+88 01618 320 606
+88 01719 149 849
Email
sjanapad@gmail.com