রবিবার ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

তাহিরপুরে কাঠালের গ্রাম লাউড়ের গড়

আলম সাব্বির, তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ)   বৃহস্পতিবার, ০৬ মে ২০২১     312 ভিউ
তাহিরপুরে কাঠালের গ্রাম লাউড়ের গড়

তাহিরপুর উপজেলার লাউড়ের গড় গ্রাম।এ গ্রামের প্রতিটি বাড়ির গাছ এখন কাঁঠালে পরিপূর্ণ। এ গ্রামকে কাঁঠালের গ্রাম হিসাবেই আখ্যা দিয়ে থাকেন স্থানীয়রা। লাউড়ের গড়ে ৫’শ পরিবারের বেশির ভাগ পরিবারেই রয়েছে কাঠালের গাছ। গড়ে প্রত্যেক বাড়িতে কমপক্ষে ১০ টি করে কাঁঠাল গাছ রয়েছে।

এক সময় শ্রীহট্রের অর্থাৎ সিলেটের তিন ভাগ তিন জন পৃথক নৃপতি দ্বারা শাসিত হত। গৌড়, লাউড় ও জৈন্তিয়া এই তিন খন্ডে নৃপতির অধীনস্থ ছিলেন আরও অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভূমি মালিক। লাউড় রাজ্য ছিল সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ এবং ময়মনসিংহ জেলার কিয়দাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত। লাউড় ছিল একটি স্বাধীন রাজ্য। তাহিরপুরের সীমান্ত এলাকায় লাউড়ের রাজধানী ছিল। এই রাজ্যের ধ্বংসাবশেষ সীমান্তের হলহলিয়া গ্রামে এখনো বিদ্যমান। হলহলিয়া থেকে লাউড়ের গড়ের দুরত্ব¡ আনুমানিক ৫ কিঃমিঃ। ঐতিহ্যবাহি এই এলাকার লাউড়ের গড় গ্রামটি এখন কাঁঠালের গ্রাম হিসাবই পরিচিত। আলাদা বাগান করে কাঁঠাল লাগানো খুব কম। প্রত্যেকের বাড়িই একেকটি কাঁঠাল বাগান। গ্রামের এমন কোন বাড়ি নেই যার বাড়িতে কমপক্ষে ১০ টি কাঁঠাল গাছ নেই। এমনও বাড়ি আছে যার বাড়িতে ৫০ থেকে ১০০ টি কাঁঠাল গাছ আছে।

গ্রামের বাসিন্দা প্রবীন ব্যাক্তি হাজী মুসলিম উদ্দিন বলেন পাহাড়ের কাছাকাছি অপেক্ষাকৃত উঁচু গ্রাম লাউড়ের গড়ের মাটিতে বেলে ও দোয়াশ মাটির সমন্বয় আছে। এই জন্য এই মাটিতে কাঁঠাল গাছ হয়। এই গ্রামে দুই ধরণের কাঁঠাল গাছ হয়। এক প্রকারের কাঁঠালকে বলা হয় খাঁজা কাঁঠাল, আরেকটা হাজারী কাঁঠাল। খাঁজা কাঁঠালের খোয়া বড় হয়, এই কাঁঠালকে করচা কাঁঠাল বলা হয়, এই কাঁঠালের ভেতর কোয়া কম থাকে। হাজারী কাঁঠালের কোয়া অপেক্ষাকৃত ছোট ও নরম হয়, ভেতরে কোয়া থাকে বেশি। লাউড়ের গড়ের কাঁঠাল গাছে কাঁঠাল আসা শুরু হয় ফাল্গুন মাসে, জৈষ্ঠ্য থেকে আষাড় মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত গাছে কাঁঠাল পাকেঁ।

লাউড়েগড়ের বাসিন্দা আশরাফ মিয়া বলেন, গাছের বয়স যত বাড়বে, কাঁঠাল ততই বেশি ধরবে। ৫০-৬০ বছর বয়সি কাঁঠাল গাছও এই গ্রামে আছে। এসব গাছে ১০০ থেকে ১৫০ টি কাঁঠাল আসে। অর্থাৎ এক মওসুমে এক গাছে কাঁঠাল বিক্রি করে আয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা।

লাউড়েগড় গ্রামের আরেক বাসিন্দা রহমত আলী জানালেন, অনেকে কাঁঠাল ব্যবসায়ীদের কাছে আগেই কাঁঠাল গাছের মওসুমের কাঁঠাল বিক্রি করে দেন।
তিনি জানান, এই গ্রামে এমন ব্যক্তিও আছেন যার প্রতিবছর কাঁঠাল বিক্রি করে আয় হয় লাখ টাকার উপরে।

স্থানীয় বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আফতাব উদ্দিন বললেন, লাউড়ের গড়ের মাটি কাঁঠাল চাষের উপযোগি। তবে কৃষি বিভাগ উদ্যোগি হলে এই গ্রামে কাঁঠালের ফলন ভালো হতো।

 

সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. ফরিদুল হাসান বলেন, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার লাউড়েগড় গ্রামে কাঁঠাল বেশি হয়, কাঁঠালের গ্রাম হিসাবেই এই গ্রামের পরিচিতি বাড়ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের সব রকমের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি তাঁর।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৯:৩৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৬ মে ২০২১

Sylheter Janapad |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
সম্পাদক ও প্রকাশক
গোবিন্দ লাল রায় সুমন
প্রধান কার্যালয়
আখরা মার্কেট (২য় তলা) হবিগঞ্জ রোড, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার
ফোন
+88 01618 320 606
+88 01719 149 849
Email
sjanapad@gmail.com