মঙ্গলবার ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

হবিগঞ্জের নৈসর্গিক বনাঞ্চল-  রেমা-কালেঙ্গা

রবিবার, ০৮ মার্চ ২০২০     772 ভিউ
হবিগঞ্জের নৈসর্গিক বনাঞ্চল-  রেমা-কালেঙ্গা

মোঃ আব্দুর রকিব,  হবিগঞ্জ থেকে : ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের পছন্দের জীববৈচিত্র সমৃদ্ধ নৈসর্গিক বনাঞ্চল রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্য। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হবিগঞ্জের রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্য ও বিনোদন কেন্দ্র।

হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের ২য় বৃহত্তম প্রাকৃতিক পাহাড়ি বনাঞ্চল রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। দেশের সর্ববৃহৎ বনাঞ্চল সুন্দরবনের পরেই প্রাকৃতিক ও নৈসর্গিক বনাঞ্চল এটি।

তথ্যে জানা যায়, ১৯৪০ সালে প্রায় ১৭৯৫ হেক্টর আয়তনের এ বনভূমি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এ বনভূমিটি, অভয়ারণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায় ১৯৮২ সালের দিকে। ১৯৯৬ সালে এ নৈসর্গিক বনাঞ্চলের আয়তন সম্প্রসারণ করা হয়।

সিলেট বনবিভাগের কালেঙ্গা রেঞ্জের বিট- কালেঙ্গা, রেমা, ছনবাড়ী ও রশিদপুর এ ৪টি বিটের মধ্যে ৩টি বিট কালেঙ্গা, রেমা ও ছনবাড়িকে একইভূত করে বিস্তীর্ণ ঘনবন নিয়ে রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য গঠিত হয়। এখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি পাহাড়-টিলা এবং এ পাহাড়গুলোর উচ্চতা সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬৭ মিটার।

পরিসংখ্যান মতে রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে রয়েছে প্রায় ৩৭ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৭ প্রজাতির উভচর, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ ও ১৬৭ প্রজাতির বিভিন্ন রংয়ের পাখি। এছাড়া ৬৩৮ প্রজাতির গাছপালা ও লতাগুল্ম দেখতে পাওয়া যায় এ অরণ্যে।

পাঁচ প্রজাতির কাঠবিড়ালীর মধ্যে বিরল প্রজাতির মালায়ন কাঠবিড়ালীর বসবাস একমাত্র এ বনেই রয়েছে। কুলু, রেসাস আর লজ্জাবতীসহ তিন প্রজাতির বানর দেখা যায় এ অভয়ারণ্যে। এছাড়াও রয়েছে মুখপোড়া হনুমান, চশমা হনুমান, উল্লুক, মায়া হরিণ, মেছোবাঘ, বন্যশুকর, গন্ধগোকুল, বেজি ও সজারু ইত্যাদি।

এ বনে বিদ্যমান ১৮ প্রজাতির সরীসৃপের মধ্যে কোবরা, দুধরাজ, দাঁড়াস, লাউডগা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। বনের শোভা পাখির মধ্যে জাতীয় পাখি দোয়েলসহ বিভিন্ন রঙের ঘুঘু, হরিয়াল, শালিক, বড় শারশ, ভীমরাজ, টিয়া, হিল ময়না, লাল মাথা কুচকুচি, সিপাহি বুলবুল, বসন্তবৌরি, শকুন, মথুরা, বনমোরগ, পেঁচা, মাছরাঙ্গা, ঈগল, চিল ইত্যাদির দেখা এ বনেই পাওয়া যায়।

বাংলাদেশের ঐতিহ্য আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে কিছু আদিবাসীও বংশানুক্রমিক ভাবে বসবাস করছে এ বনে। এদের মধ্যে ত্রিপুরা, সাঁওতাল, তেলুগু ও উড়ং এ চারটি আদিবাসী সম্প্রদায় যুগযুগ ধরে বসবাস করছে রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্যে।

বিশেষ করে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বসতি রয়েছে কয়েকটি পাড়া জুড়ে। এছাড়াও সাঁওতাল, তেলুগু ও উড়ং সম্প্রদায়ের আদিবাসীরা এ বনের গভীরে বসবাস করছে নিশ্চিন্তে নির্বিঘ্নে।

সর্বাধিক সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র হতে পারে এ ঐতিহ্যমন্ডিত জীববৈচিত্র সমৃদ্ধ নৈসর্গিক বনাঞ্চল রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্য। আমাদের দেশে বিনোদন কেন্দ্র ও পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও সম্প্রসারণে অনেক বড় ভুমিকা রাখতে পারে হবিগঞ্জের রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্য।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৮:৪১ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৮ মার্চ ২০২০

Sylheter Janapad |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
সম্পাদক ও প্রকাশক
গোবিন্দ লাল রায় সুমন
প্রধান কার্যালয়
আখরা মার্কেট (২য় তলা) হবিগঞ্জ রোড, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার
ফোন
+88 01618 320 606
+88 01719 149 849
Email
sjanapad@gmail.com