রবিবার ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

সড়ক, সেতু, কালভার্ট ও অবকাঠামো মিলিয়ে জেলায় ক্ষতির পরিমান ২০৯ কোটি টাকা

অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যায় সুনামগঞ্জের সড়কের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি।

আলম সাব্বির তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধি :   রবিবার, ০৪ আগস্ট ২০১৯     324 ভিউ
অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যায় সুনামগঞ্জের সড়কের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি।

সুনামগঞ্জের সড়ক যোগাযোগের বেহাল আবস্থা, ছবি- সিলেটের জনপদ

অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যায় সুনামগঞ্জের সড়কের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখনো অনেক স্থানে সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়নি। সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়কে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের সড়ক গুলো ছাড়াও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে উপজেলার অভ্যন্তরীন সড়কের। এতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে মারাত্বক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে লোক জনকে।

সড়ক, সেতু, কালভার্ট ও অবকাঠামো মিলিয়ে জেলায় ক্ষতির পরিমান ২০৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নিয়ন্ত্রণা ধীন গ্রামীণ সড়কই বেশি। তবে এখনো অনেক উপজেলায় বন্যার পানি নামছে ধীর গতিতে তাই ক্ষয়ক্ষতির পরিমান চুড়ান্ত ভাবে নিরুপন করা সম্ভব হবেনা।

সুনামগঞ্জ এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, এবারের বন্যায এই প্রতিষ্ঠানের নিযন্ত্রণাধীন ২৭৫ টি সডকের ৮১৮ কিলোমিটার ক্ষতি হয়েছে। এ ছাডা ৯৬টি সেতু ও কালভার্ট ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি এল জি ই ডি’র বিভিন্ন স্থাপনাও ক্ষতি হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাডী ঢল, অতিবৃষ্টি এবং সডকের ওপর পানি জমে থাকাই ক্ষতির কারণ।

এলজিইডির সডক, সেতু ও কালভার্ট ও অবকাঠামো মিলিয়ে ক্ষতি হয়েছে ১৯৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকার। এ ছাডা সডক ও জনপথ বিভাগের চারটি সডকের প্রায ৩০ কিলোমিটার নিমজ্জিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ। ক্ষতির পরিমাণ প্রায ১৫ কোটি। এলজিইডির হিসাব অনুযাযী, জেলার দোযারা বাজার উপজেলার ৬৬টি সডকের ১৮৫ কিলোমিটার, শাল্লা উপজেলার ২৩টি সডকের ৪৫ কিলোমিটার, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ৩০টি সডকের ৬০ কিলোমিটার, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার ৪২টি সডকের ১২৬ কিলোমিটার, দিরাই উপজেলায নয়টি সডকের ২৮ কিলোমিটার, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায ৫১ টি সডকের ১৬৮ কিলোমিটার, তাহিরপুর উপজেলায ৩টি সডকে ১৬ কিলোমিটার, জামালগঞ্জ উপজেলার ছযটি সডকে ছয কিলোমিটার, জগন্নাথপুর উপজেলায ২০টি সডকে ৭৫ কিলোমিটার, ধরমপাশা উপজেলায ১৫টি সডকে ৫০ কিলোমিটার এবং ছাতক উপজেলায ১০টি সডকে ৫৮ কিলোমিটার ক্ষতি হযেেছ। এসব জাযগায সডকের পিচ– ঢালাই উঠে গেছে। আবার কোথাও কোথাও ভেঙে গেছে। এ ছাডা জেলার ১১ উপজেলায ৯৬টি সেতু ও কালভার্টের ১ হাজার ১১৯ মিটার ক্ষতি হযেেছ। এর মধ্যে দোযারাবাজার উপজেলায ১০টি, শাল্লা ৫, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায ১২, দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ১৫, দিরাইয়ে ৩, বিশ্বম্ভরপুরে ১০, তাহিরপুর উপজেলায ৪, জামালগঞ্জে ৮, জগন্নাথপুর উপজেলায ৬, ধরমপাশায ২০ এবং ছাতক উপজেলায ৩টি সেতু ও কালভার্টের ক্ষতি হযেছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, এটা ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত চিত্র নয়, বন্যায় গ্রামীণ সড়কের বেশি ক্ষতি হয়েছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এখনো বন্যার পানি আছে। পানি সম্পূর্ণ নেমে গেলে পুরো ক্ষয়ক্ষতির চিত্র পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত অবহিত করছি। বরাদ্দ পাওয়া গেলে কাজ হবে।’

সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবারের বন্যায় সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন সুনামগঞ্জ-সাচনা, সুনামগঞ্জ-কাছিরগাতি, ছাতক-দোয়ারাবাজার এবং আনোয়ারপুর-তাহিরপুর সড়কের প্রায় ৩০ কিলোমিটার পানিতে নিমজ্জিত হয়। এ কারণে বিভিন্ন স্থানে ক্ষতি হয়েছে। কোথাও কোথাও সড়ক ভেঙে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ ও গর্তের। সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়কের আনোয়ারপুর এলাকায় ঢলের পানির তোড়ে ভেঙে যাওয়ায় এই সড়কে সরাসরি যান চলাচল এখনো বন্ধ রয়েছে। এই সড়কের শক্তিয়ারখলা এলাকা নিচু হওয়ায় পাহাড়ি ঢল নামলেই ওই অংশটুকু নিমজ্জিত হয়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এই অংশ এলজিইডির অধীনে। আবার আনোয়ারপুর এলাকায় ঢলের পানিতে প্রায় প্রতিবছর সড়কের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই অংশ আবার সওজের।

সুনামগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের মূলত চারটি সড়কে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এসব সড়কে আপাতত জরুরি সংস্কার কাজ করব, কিছু কিছু সড়কে কাজ শুরু হয়েছে। স্থায়ী কাজ হবে পরে।’

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকরূনা াসিন্ধু চৌধুরী বলেছেন, উপজেলায় ঢলের পানির তোড়ে সড়কের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়ক ছাড়াও উপজেলার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর বেহাল হয়ে পড়েছে। তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়ক এখনো জলমগ্ন। লোকজন চলাচর করতে পারছেন না। সীমান্ত এলাকার সড়কগুলো ভেঙেচুরে একাকার হয়ে আছে। দ্রুত এই সড়কগুলোর সংস্কারকাজ করতে হবে।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বাদাঘাট দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. এরশাদ মিয়া বলেন, বিশ্বম্ভরপুর-তাহিরপুর সড়কের শক্তিয়ারখলা এলাকায় সড়ক নিচু হওয়ায় পাহাড়ি ঢল নামলেই স্থানটি পানিতে প্লাবিত হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। মানুষ বিপাকে পড়ে। তখন তাহিরপুর উপজেলার মানুষ জেলা সদরে যেতে পারে না। এই সমস্যা থেকে কীভাবে মুক্ত হওয়া যায়, এ নিয়ে চিন্তা করা জরূরী।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৪:২৮ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৪ আগস্ট ২০১৯

Sylheter Janapad |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
সম্পাদক ও প্রকাশক
গোবিন্দ লাল রায় সুমন
প্রধান কার্যালয়
আখরা মার্কেট (২য় তলা) হবিগঞ্জ রোড, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার
ফোন
+88 01618 320 606
+88 01719 149 849
Email
sjanapad@gmail.com