রবিবার ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

শায়েস্তাগঞ্জে শীতের শুরুতে ব্যস্ত লেপ তোষকের কারিগররা 

বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২০     192 ভিউ
শায়েস্তাগঞ্জে শীতের শুরুতে ব্যস্ত লেপ তোষকের কারিগররা 

মোঃ আব্দুর রকিব, হবিগঞ্জ থেকে ॥ সারাদেশের ন্যায় হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলাতেও শীত পড়তে শুরু করেছে। ভোরের আকাশে ঘন কূয়াশার আড়ালে সূর্যের লালিমা জানিয়ে দিচ্ছে শীতকাল শুরু হয়েছে। গ্রামের মেঠোপথে হেঁটে যেতে অনুভব হচ্ছে শিশির ভেজা দুর্বা ঘাসের হীম শীতল স্পর্শ। শীতের শুরুতে এবং শেষের দিকে হালকা শীতের আমেজ উপভোগ করতে পাতলা কাঁথা বা নকশী কাঁথার জুরী নেই।

কাঁথা বা নকশী কাঁথা সাধারণত গ্রাম বাংলার নারী শিল্পী কর্তৃক পুরাতন শাড়ী দিয়ে রঙ্গিন সুতায় সেলাই করা এক প্রকার শীত নিবারণ উপকরণ। ওই কাঁথার উপর নানান ধরনের নকশা করে বানানো বিশেষ প্রকারের কাঁথাকে নকশী কাঁথা বলা হয়। নকশী কাঁথা শত শত বছরের পুরনো বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য সংস্কৃতির অংশ। ইদানিং নতুন কাপড়ে তৈরী নকশী কাঁথা ব্যবসা কেন্দ্রিক তৈরী করা হয়। অধুনা নকশী কাঁথা বিদেশেও রপ্তানী হচ্ছে। নকশী কাঁথা বাংলাদেশের লোক শিল্পের একটা অংশ। সাধারণত কাঁথা সেলাইয়ের পর এর উপর মনের মাধুরী মিশিয়ে ফুঁটিয়ে তোলা হয় বিভিন্ন ফুল, লতা, পাতা, পশু পাখি ইত্যাদি। পুরো বাংলাদেশেই নকশী কাঁথা তৈরি হয় তবে ময়মনসিংহ, রাজশাহী, ফরিদপুর ও যশোর আঞ্চল নকশী কাঁথার জন্য বিখ্যাত। এ জন্যই পল্লীকবি জসিম উদ্দিন নকশী কাঁথাকে ভালবেশে কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ “নকশী কাঁথার মাঠ” রচনা করেন।

শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার লেপ-তোষক তৈরির কারিগরদের এখন ব্যস্ত সময় যাচ্ছে। এরই মধ্যে তৈরীকৃত শীত নিবারণ উপকরণ লেপ বিক্রি প্রায় শেষ। আসন্ন তীব্র শীতের কাঁপুনির সঙ্গে ঘন কুয়াশার কথা মনে করে এখন লেপ-তোষক তৈরীতে বাড়তি সময় ব্যয় করছেন কারিগররা। বিশেষ করে উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বিকালে হালকা শীত অনুভূত হচ্ছে। রাত বাড়ার সাথেসাথেই কাঁথা বা পাতলা কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমাতে হয়।

উপজেলার শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকার পুরাণবাজারে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় লেপ-তোষক তৈরির কারিগররা আপন কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। শত ব্যস্ততার মাঝেই পুরাণবাজারের লেপ তোষক ব্যবসায়ী কামাল উদ্দিন বলেন শীতের শুরুতেই আমরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছি হাতে অনেক অর্ডার আছে। দাম দরের ব্যাপারে বলেন- শিমুল তুলা- কেজি ৬শ টাকা, লেপের তুলা ১০০ থেকে ১২০টাকা, লেপের কাপড় প্রকার ভেদে- ৩০/৪০ টাকা, একটি তোষক- ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা, জাজিমের মূল্য-৩হাজার ৫শ টাকা।

দাউদনগর বাজার এলাকার “মদিনা বেডিং এর মালিক জানান, শিমুল তুলা- কেজি ৬৫০ টাকা, লেপের তুলা ৮০ থেকে ১২০টাকা, লাল শালু ৩৫/৬০ টাকা মিটারে বিক্রি হচ্ছে। তৈরী করা লেপ ১ হাজার থেকে ১২শত টাকা। লেপ-তোষক তৈরির কারিগররা জানান, এলাকার অনেকেই প্রায় প্রতি বছরই নতুণ লেপ ক্রয় করেন। শীতের আগেই নতুন লেপ ও তোষকের অর্ডার দেন তারা। এবার আগাম শীত অনুভূত হওয়ায় নতুন লেপ তৈরির পাশাপাশি পুরনো লেপ-তোষক মেরামতের কাজ পুরোদমে চলছে। কারিগররা আরো জানান, নিম্ন আয়ের লোকজন শিমুল তুলা এড়িয়ে চলেন। কারন শিমুল তুলা দিয়ে তৈরি করা লেপের খরচ অনেক। এর অর্ধেক দামে গার্মেন্টস তুলায় তৈরী করা লেপ পাওয়া যায়। বাজারের দোকানে লেপ তোষক বিক্রি করা ছাড়াও দোকানীরা গ্রামে, পাড়া-মহল্লায় লেপ-তোষক পৌঁছে দিচ্ছেন এখন ফেরী ওয়ালারার মাধ্যমে। এতে করে যারা বাজারে বা দোকানে এসে শীত নিবারণ দ্রব্য কিনতে পারেননা তারা ঘরে বসেই তা ফেরী ওয়ালা থেকে কিনতে পারবেন। গ্রামের অনেক ক্রেতা জানান, ফেরী ওয়ালার নিকট লেপ তোষক সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যায়।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১২:৩৮ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২০

Sylheter Janapad |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
সম্পাদক ও প্রকাশক
গোবিন্দ লাল রায় সুমন
প্রধান কার্যালয়
আখরা মার্কেট (২য় তলা) হবিগঞ্জ রোড, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার
ফোন
+88 01618 320 606
+88 01719 149 849
Email
sjanapad@gmail.com