পি সি দাশ, শাল্লা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের শাল্লায় এমনিতেই করোনা মহামারি, তার উপর বন্যার আহাজারী উভয় পরিস্থিতিতে নিম্ন আয়ের মানুষেরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়ে পড়েছে । উজানের পানি নেমে এসে শাল্লার প্রায় ৩২ টি গ্রাম ৩ থেকে ৪ ফুট বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। বহু পরিবার গবাদিপশুসহ আশ্রয় নিয়েছে উচু জায়গা কিংবা বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে।
গত পাঁচদিন যাবত পানি বৃদ্ধির কারণে নতুন-নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দক্ষিণ ও পশ্চিমের আফালে (বাতাসে) ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে শত শত ঘর বাড়ি। আবার অনেকেই বিপদে পরেছে গোখাদ্যের সংঙ্কটে। একদিকে বন্যা অপরদিকে মানুষের খাবার সহ গোখাদ্যের অভাব সব মিলিয়ে দিশেহারা বন্যায় নিমজ্জিত পরিবারগুলো।
মঙ্গলবার সকালে উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের আনন্দপুর গ্রামের উত্তরপাশে আশ্রয় কেন্দ্র শাহ আরফিন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় ৬ টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।গবাদীপশুসহ আরো কয়েকটি পরিবার রয়েছে অসমাপ্ত দিরাই শাল্লা সড়কে।
কথা হয় আশ্রয় কেন্দ্রে আসা ও পাশের বন্যায় নিমজ্জিত পরিবারের সদস্য দিলিপ বিশ্বাস, আশুতোষ রায়, লক্ষী রানী দাস, প্রবোধ রায়, হরিদাস মাইষ্য, শিবু বিশ্বাস, বিরেন্দ্র দাস, রাজিব রায়, দেবরাজ দাস, হরিমোহন রায়, বাসন্তী মাইষ্য, বেনু রায়, পরিমল দাস, হেলন রানী, বাবুল মিয়া, নিরঞ্জন মাইষ্য জামাল মিয়া, আসীষ রায়, বিরেন্দ্র সরকার গকুল সুত্রধর, দিলিপ শীল, রামপুর গ্রামের সুনীল দাস, প্রভাশু দাস, নিয়ামতপুর গ্রামের ভানু দাস, তনু দাস, হরেন্দ্র দাস,প্রানকান্ত চক্রবর্ত্তী, যোগেশ দাস,নিতাই দাস,সনৎ দাস,কুমেদ দাসসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে।
তাদের মধ্যে লক্ষী রানী বলেন বন্যায় বাড়ি ঘর তলিয়ে যাওয়ায় ৬ দিন ধরে এই স্কুলে আইছি। গরু বাছুর, ছাগল,হাঁস রাখছি রাস্তায়। রান্না করার খুব অসুবিধা হয়। শুনছি সরকার খাওন ( খাবার) দিতাছে। আমরার খবর কেউ নিলনা। পাশে দিলিপ বিশ্বাস জানালেন বন্যায় খুব বিপদে আছি, পাককরা (রান্না) করা যায়না, খাইয়া না খাইয়া দিন জাইতাছে। আবার আফালে বাড়িঘর ভাংতাছে, বাজারে ও জাইতাম পারিনা এক কথায় মহাবিপদ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদির হোসেন বলেন ত্রান কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। দ্রুত সকল আশ্রয় কেন্দ্রে ও বন্যাকবলিত বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রান পৌছানো হবে বলে জানান।
এনিয়ে মঙ্গল বার সাড়ে ১২ টায় কথা হয় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আল আমিন চৌধুরীর সঙ্গে, তিনি জানান শাল্লা ইউনিয়নে ত্রান বিতরণ করেছেন। পর্যায়ক্রমে সকল ইউনিয়নের বন্যায় কবলিত সকল জায়গায়ই ত্রান কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
উল্লেখ্য- শাল্লা ৬১ টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে খুলা হয়েছে। প্রয়োজনে বন্যা মোকাবেলায় সকল স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা খুলে দেওয়া হবে । যাতে করে মানুষের পাশাপাশি গবাীপশু নিয়ে আশ্রয় নিতে পরেন সেটি নিশ্চিত করেছেন প্রকপ্ল বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে।