পি সি দাশ, শাল্লা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি :অন্য একজন গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিলের মামলায় এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বিপাকে পরেছে। বিপদগ্রস্ত সেই শিক্ষক জ্যোতিষ চৌধুরী পিতা মৃত গিরীন্দ্র চৌধুরী সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার ডুমরা গ্রামে ক্রয়সুত্রে বাড়ি নিয়ে বসবাস করছেন।
তিনি ২০১০ সনের আগষ্ট মাসে সুনীল দাস নামে একজনের নিকট থেকে বাড়িটি ক্রয় করলে ও বসবাস শুরু করেন ২০১৪ সন থেকে । সেই সময় থেকে আজ পর্যন্ত তিনি সৌর সোলার বিদ্যুৎ ব্যবহার করে আসছেন। হঠাৎ ২০১৯ সনের ডিসেম্বর মাসে সিলেট বিদ্যুৎ আদালত, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, সিলেট অঞ্চল সিলেটের পক্ষ থেকে জ্যোতিষ চৌধুরী’র নামে দিরাই বিউবো আবাসিক সহকারী প্রকৌশলী মোঃ হায়দার আলী বাদী হয়ে ১ লাখ ৯ হাজার ৮০৫ টাকার বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য মামলার নোটিশ আসে।
নোটিশের তারিখ অনুযায়ী তিনি সিলেট আদালতে হাজিরাও দিয়েছেন। মামলায় উল্লেখ রয়েছে, সুনীল চন্দ্র দাস হিসাব নং এলটি-/৯৬ গ্রাহক নং ৪৪০০৬১৪১, মিটার নং ০৩৪৯৩৬ একজন বিদ্যুৎ গ্রাহক। হিসাবধারী গ্রাহন ১০ বছর পুর্বে বাড়িটি বিক্রির পর থেকে জ্যোতিষ চৌধুরী না কি সেই গ্রাহকের মিটার ব্যবহার করতেন। এবং বিদ্যুৎ বকেয়া ১ লাখ ৯ হাজার ৮০৫ টাকা বিল পুঞ্জীভূত করেছেন। বিগত ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ইং তারিখে জ্যোতিষ চৌধুরীর ঘর থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ ও না কি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বলে মামলায় লিখা রয়েছে।
সেই সুত্রে ব্যবহারকারী সাকুল্য বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য মামলা দায়ের করা হল বলে মামলায় উল্লেখিত রয়েছে। অথচ শনিবার সকালে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষক জ্যোতিষ চৌধুরী কোন দিন বিদ্যুৎ সংযোগই নেয় নি। পাশের বাড়ির লোকজন বলছে, অনেক দিন হয় জ্যোতিষ মাষ্টার বাড়িটি ক্রয় করছেন সত্য, কিন্তু তিনি বসবাস শুরু করছেন ২০১৪ সালে। এর পুর্বে বাড়ি বিক্রিকৃত ব্যক্তি সুনীল দাস বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে ব্যবহার করেছেন।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী জ্যোতিষ মাষ্টার বলেন, কি আর বলি, সুনীল দাসের বাড়ি কিনে আজ আমি মামলার আসামি। বাড়ি কিনছি ২০১০ সনে, এর ৩ মাস পুর্বেই সুনীল দাস মিটার নষ্ট বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল। সেই অবস্থায় আমি বাড়ি ক্রয় করি এবং ৪ বছর পর ২০১৪ সনে সেখানে ঘর তৈরি করে বসবাস শুরু করি। তার পর ও ১০ বছরের বকেয়ার দায়ে আমার উপর মামলা। আমি সৌর সোলার ব্যবহার করছি। তিনি জানান বাড়ি কিনে আমি মামলার আসামি হলাম এটি আমার জন্য খুবই লজ্জাকর। তবে তিনি বলেন, সম্মান রাক্ষার্থে মিথ্যা সাজানো মামলার বিপরীতে আমি ও মামলার চিন্তা করছি।
নাম প্রকাশে অনেছুক স্থানীয় লাইন ম্যানদের সাথে এনিয়ে কথা বলতে গেলে তারা বলেন, আমাদের নাম পত্রিকায় না লিখলে যা জানি তাই বলবো। তাদের কথা রাখা হবে মর্মে, তারা জানান, সত্য হল মিটার সুনীল দাসের বিল ও তার। জ্যোতিষ মাষ্টার বিদ্যুৎই ব্যবহার করেনা ।
১০ বছর আগে সুনীল দাস বিদ্যুৎ ব্যবহার করতো। আর যিনি বিদ্যুৎ সংযোগই নেয়নি সে মামলার আসামি। বিউবোতে এসব হয় মিটারের সঙ্গে বিলের কোন মিল নাই, ইচ্ছা মাফিক বিল দেওয়া, একজনের বিল অন্যের নামে দিয়ে দেওয়া, আজ দেখলাম বিদ্যুৎ ব্যবহার না করে ও মামলার আসামি, এটি কি কান্ড।
এবিষয়ে আবাসিক সহকারী প্রকৌশলী বিউবো দিরাই বিদ্যুৎ বোর্ড হায়দার আলীর ফোনে বার বার ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
এনিয়ে এলাকায় সমালোচনার অন্তনেই, কেউ কেউ বলছে। যার নামে মিটার তার নামে মামলা নাই, আর যিনি বাড়ি কিনেছেন তার নামে মামলা এটি কেন হবে।