পি সি দাশ শাল্লা, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের শাল্লার হাওরের বুকে প্রাচীন হাওর পুজার আয়োজনে মহিলাদের সমাগম দেখা যায়। এই পুজাকে আবার অনেকেই কৃষাণ খেলা পুজা ,আবার কেউ কেউ জগন্নাথ পুজা ও বলেন। তবে হাওর পুজা নামেই এলাকায় এ পুজার পরিচিত বেশি।
বুধবার সন্ধ্যায় সরজমিনে দেখা যায় উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের চাকুয়া, মহেশপুর, পশ্চিম পাড়াসহ পাশের গোপালপুর সহ আরো কয়েকটি গ্রামের মহিলার দিনভর উপবাস করে সন্ধ্যায় হাওরে এই পুজায় অংশগ্রহণ করেন।
এবিষয়ে পুজায় আগত চাকুয়া গ্রামের বনানী সরকারের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন আমাদের মা দাদীরা বলেছেন মুলত হাওরের ফসল মঙ্গলমত যাতে কৃষক বাড়ি নিতে পারে সেই জন্যই এ পুজা করেন মহিলারা।তিনি আরো বলেন প্রাচীন এই ধারাবাহিকতায় আমরা প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের ২০ তারিখ বুধবার সন্ধ্যার সময় গ্রামের মহিলা মিলে এই পুজা করে আসছি।
পুজা নিয়ে কথা হয় এক ই গ্রামের রুমা রানী দাসের সঙ্গে তিনি বলেন, আমার বিয়ের পর থেকেই আমার শ্বাশুরী মা এ পুজা করতে দেখেছি, এখন আমি ও করছি। কেন করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন মুরুব্বিরা বলেছেন কৃষকের মঙ্গলরার্থেই না কি এ পুজা করা হয়।
শুধু চাকুয়া নয় আশে পাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মহিলারা এ পুজা করে থাকেন বলে তিনি জানান । আশে পাশের প্রত্যেকটি গ্রামের মহিলারা তাদের নিজ নিজ হাওরে এ পুজার আয়োজন করেন বলে জানা যায়।
পুজার শেষের দৃশ্য দেখে মনে হল যেন মহিলাদের এক মিলন মেলা হাওরের বুকে। একজন মহিলা প্রসাদ নিয়ে অন্য মহিলার হাতে তুলে দিচ্ছে। আবার পুজা শেষে বাড়ি ফেরার পথে সকল মহিলা এক সঙ্গে উল্লুধনী করে ভক্তি করে আসা সত্যই এক মন মুগ্ধকর পরিবেশ। আজ কাল এই সব প্রাচীন দৃশ্য খুব একটা দেখা যায় না। এলাকাবাসী বলছে তাদের এই প্রাচীন হাওর পুজা যুগ যুগ চলবে ধারাবাহিকভাবে।