সুমন আহমেদ বিজয়, লাখাই থেকেঃ লাখাইয়ে আলোচিত স্কুলছাত্রী ফাহমিদা আক্তার আঁখির আত্মহত্যার প্ররোচনাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে মানববন্ধন করেছে কালাউক উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রী ও এলাকাবাসী।
লাখাই উপজেলার কালাউক উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে সামাজিক দুরত্ব মেনে নিহত ফাহমিদা আক্তার আঁখির সহপাঠী সহ এলাকার শত শত মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সকাল ১১ ঘটিকার সময় আমরা সবাই আঁখির ভাই আঁখি হত্যার বিচার চাই এই স্লোগান কে সামনে রেখে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মানববন্ধনে উপস্থিত সবাই সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ করে আঁখি হত্যার প্ররোচনাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবী জানান।
আঁখি আক্তারের পিতা মোঃ রহুল আলম ওরপে রহুল আমিন কান্না কন্ঠে বলেন আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে আমার মেয়ের হত্যার বিচার চাই। তিনি আরও বলেন আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি কিন্তু এখন ও থানায় মামলা রেকর্ড করে নাই এবং লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পর থেকে আসামীরা প্রভাবশালী হওয়ায় আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় লাখাই উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের রুহুল আমীনের মেয়ে কালাউক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী আঁখি আক্তারের সাথে একই গ্রামের শাহ আলম মাষ্টারের ছেলে সাফায়াত হোসেন রানার দীর্ঘ দিন যাবত প্রেম চলে আসছিল।
ইদানিং আঁখি আক্তারের পারিবারের কাছে বিবাহের প্রস্তাব আসে বিভিন্ন এলাকা থেকে। বিষয় টি আঁখি তার প্রেমিক রানা কে জানায়। সেই সাথে তাকে ঘরের তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানায় কিন্তু রানা এখন তার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময় বলে তাকে এড়িয়ে যায় এবং তাকে বিবাহ করতে অস্বীকৃতি জানায়। এতে বিমর্ষ হয়ে পড়ে আঁখি আক্তার।এক পর্যায়ে প্রেমিক রানার উপর অভিমান করে বুলেট নামক কীটনাশক সেবন করে আত্মহত্যার পথ বেঁচে নেয়।
ফেইসবুকে ভাইরাল হওয়া কথোপকথনের তথ্য অনুযায়ী রানা বলেন, আমি আঁখি কে অনেক ভালবাসতাম কিন্তু বিয়ে করা এখন সম্ভব ছিল না। আমি আঁখিকে তার পরিবারের পছন্দেই রাজী হতে বলছিলাম। ও কিছুতেই আমাকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করবে না। তাই আমি রাগে বলে দিছি আমি তাকে কে ভালবাসি না, ওর সাথে অভিনয় করছি এই রাগের কারনেই আজকে আমার ভালবাসার মানুষ টা লাশ হয়ে গেল, বুক টা আমার ফেটে যাচ্ছেরে খুব খারাপ লাগতাছে, যদি জানতাম এমন হবে তাহলে কখনো এরকম করতাম না।
এ ব্যাপারে লাখাই থানার ওসি (তদন্ত) অজয় চন্দ্র দেব জানান, নিহত আঁখি আক্তারে পিতা বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আর ও বলেন আঁখি ও তার চাচাত ভাই সাফায়াত হোসেন রানার মধ্যে দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে ধারণা করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১০ জুন বিকালে আঁখি আক্তার পরিবারের সকলের অগোচরে বুলেট নামক কীটনাশক সেবন করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। বিষয়টি পরিবারের লোকজনের দৃষ্টি গোচর হলে প্রথমে লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরবর্তীতে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার অবস্থা চরম অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন রাতেই আঁখি আক্তার মৃত্যুর কোলে ডলে পড়েন।