মোঃ আব্দুর রকিব, শায়েস্তাগঞ্জ হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুটি পা হারায় স্কুল ছাত্রী তাজরিন আক্তার নদী (৯)। শায়েস্তাগঞ্জ ইসলামী একাডেমী এন্ড হাই স্কুলের ছাত্রী তাজরিন আক্তার নদী। সে বাঁধাহীন নদীর স্রোতের মতোই চলতে চেয়েছিল। হঠাৎ বিদ্যুৎ নামক দানব তার চলার গতি থামিয়ে দিয়েছে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দু’পা হারিয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে তাজরিন আক্তার নদী।
ইতোমধ্যে অনির্বাণ লাইব্রেরীর প্রতিষ্ঠাতা সিলেটের অতিরিক্ত ডিআইজি জয়দেব কুমার ভদ্র নদী আক্তারের চিকিৎসার দায়িত্বও নিয়েছেন। এরই প্রেক্ষিতে তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগ নেয়ার পাশাপাশি অনির্বাণ লাইব্রেরীর ফেসবুক পেইজে নদীর চিকিৎসার জন্য সাহায্য চেয়ে একটি পোষ্ট করেন। মানবিক সহায়তার এই পোষ্টে চোখ পড়ে দেশ ও বিদেশে থাকা অনির্বাণ লাইব্রেরীর বিপুল সংখ্যাক শুভাকাংখীর। তারা নদীর চিকিৎসার জন্য সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেন। বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলার দক্ষিণ বড়চরে নদীর বাসায় অনির্বাণ লাইব্রেরীর পক্ষ থেকে নগদ ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন অনির্বাণ লাইব্রেরীর প্রধান উপদেষ্ঠা নৌ-পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব অশোক মাধব রায়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ তালুকদার ইকবাল, অনির্বাণ লাইব্রেরীর উপদেষ্ঠা ও হবিগঞ্জ টিভি জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ নাহিজ, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোঃ ফজলুর রহমান, অনির্বাণ লাইব্রেরীর মডারেটর সদস্য বাদল রায়, শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি অজয় চন্দ্র দেব, তদন্ত ওসি আল মামুন, শায়েস্তাগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আ স ম আফজল আলী, সাবেক সভাপতি মোঃ আব্দুর রকিব, সাধারণ সম্পাদক মঈনুল হাসান রতন, সাংবাদিক মোহাম্মদ নুর উদ্দিন, কামরুল হাসান ও ছাত্রনেতা এমদাদুল হক শীতল প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ১৫ মে বিকেলে দক্ষিণ বড়চর (তালুকহড়াই) গ্রামে মর্জিনা খাতুনের নির্মানাধীন বাসার ছাদে সহপাঠীদের নিয়ে বেড়াতে যায় নদী। ছাদে ফেলে রাখা বিদ্যুৎ লাইনে তার দুই পা জড়িয়ে গিয়ে মারাত্মক আহত হয়। তাৎক্ষণিক স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সিলেটে কয়েকদিন চিকিৎসা চলার পর তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হয়। সেখানকার চিকিৎসক আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ২৭ মে ঢাকাস্থ শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে প্রেরণ করেন। গত ৪ জুন চিকিৎসকরা নদীর জীবন বাঁচাতে বাধ্য হয়ে হাঁটুর নীচ থেকে তাঁর দুটি পা বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন।