বুধবার ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নবীগঞ্জের দিনারপুর এলাকায় বহুগুণ সমৃদ্ধ বিদেশি ফল ড্রাগন চাষ

শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০১৯     265 ভিউ
নবীগঞ্জের দিনারপুর এলাকায় বহুগুণ সমৃদ্ধ বিদেশি ফল ড্রাগন চাষ

মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ থেকে : নবীগঞ্জের মাটি ও আবহাওয়া চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় সম্প্রতি বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে বহুগুণ সমৃদ্ধ বিদেশি ফল ড্রাগন ফল চাষ। এরই মাঝে ড্রাগন চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন মশিউর রহমান নামের এক চাষী।

আর এতে এলাকায় উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে। বাজারে ফলের ভাল দাম ও চাহিদা থাকায় দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ড্রাগন ফলের চাষ। আর অল্প সময়েই অল্প পুঁজিতে ড্রাগন ফল চাষ করে বেকার যুবকদের স্বাভলম্বী হওয়ার বিশাল সুযোগ রয়েছে বলে মনে করে কৃষি অধিদপ্তর।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চল হিসেবে খ্যাত দিনারপুর পরগনার পানিউমদা গ্রামের ভিতের অনেক উচু নিচু পথ ফেরিয়ে ববানি চা বাগান এর অবস্থান। আর পাহাড়ের পাদদেশে এই চা বাগানে একাংশেই প্রায় ১ একর জমিতে বিদেশি ফল ড্রাগন চাষ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বাগানের মালিক মশিউর রহমান। এখন এলাকার অনেকেই এ ফল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

ড্রাগন ফল সম্পর্কে আমাদের দেশের মানুষ আগে তেমন পরিচিত ছিলেন না। বেশ কয়েক বছর আগেও বিদেশ থেকে ড্রাগন ফল আমদানি করা হতো। দেশের বড়ো বড়ো সুপারশপগুলোতে উচ্চদামে ড্রাগন ফল বিক্রি হতো। দেশের বেশ কিছু উৎসাহী ব্যক্তি থাইল্যান্ড থেকে ড্রাগন ফলের চারা এনে পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করেন। এতে তারা সফল হয়। ২০১০ সালের দিকে এদেশে সর্বপ্রথম ড্রাগন ফলের চাষ শুরু হয়। ২০১৫ সাল থেকে বাণিজ্যিকভিত্তিতে ড্রাগন ফলের চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে এ ফলের চাষ হচ্ছে।

ডায়াবেটিস ও খারাপ কোলেস্টেরল কমায় ড্রাগন। এতে প্রচুর আঁশ থাকায় হজম শক্তি বাড়াতে ও চর্বি কমাতে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত ক্যারোটিন থাকায় স্মৃতি শক্তি ও চোখের জ্যোতি বাড়ায়। ত্বকের মসৃণতা ও আর্দ্রতা ধরে রাখে। এটি ভিয়েতনামের জাতীয় ফল ড্রাগন হলেও সম্প্রতি সময়ে বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে এই ফলের আবাদ শুরু হয়েছে। এছাড়া ড্রাগনের সাদা শাঁসের রস প্রসাধন গুণের আঁধার।

নবীগঞ্জের ববান ড্রাগন বাগানের ম্যানাজার বিনয় চন্দ্র ভর্মন জানান, বাগানের মালিক মশিউর রহমানের উদ্যোগে প্রায় ১ বছর আগে চা বাগানের ১ একর জমিতে শুরু করেন ড্রাগন চাষের কর্মপরিকল্পনা। প্রথমে সিমেন্ট দিয়ে প্রায় ৫০০ টি পিলার তৈরী করেন। পরে গর্ত করে ওই স্থানে পিলার গুলোকে দাড় করিয়ে ১টি পিলারের চারিপাশে চারটি করে ড্রাগনের চারা রোপন করেন। এ ভাবে প্রায় ২ হাজার চারা রোপন করেন। এতে পরিচর্যাসহ সব মিলিয়ে ব্যয় হয় প্রায় ৭ লক্ষ টাকা। প্রথম মৌসুমেই দেড় লক্ষাধিক টাকার ফল বিক্রি করেছেন। এখন পরিচর্যা ছাড়া কোন ব্যয় নেই, শুধু আয়ের পালা। কোন ব্যয় ছাড়া সামনে আরো ৩গুন বেশি ফল বিক্রি করে টাকা আয়ের আশা করছেন বাগান কর্তৃপক্ষ।

নবীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.কে.এম মাকসুদুল আলম জানান, রোগ-বালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম বিধায় ড্রাগন ফল চাষে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। নবীগঞ্জ উপজেলায় বেশ কয়েকটি ড্রাগনের বাগান তৈরী হয়েছে। এই ড্রাগন বাগানগুলো দেখে কৃষকরা ফলটি চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছেন প্রায়ই চারার জন্য যোগাযোগ করছেন। এই চারা রোপন করলে সহজে মারা যায় না। কেউ বানিজ্যিকভাবে ড্রাগন চাষ করতে চাইলে উপজেলা কৃষি অফিসের পরার্মশ নিতে বলেন তিনি

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, যেসব জমি পূর্ণ সূর্যলোক পায়। বর্ষায় পানি উঠে না বা স্যাঁতস্যাঁতে থাকে না- এমন স্থানে ড্রাগন ফলের চাষ করা সহজ। বাগান করার মাত্র নয় মাসের মধ্যে গাছে ফল ধরতে শুরু করে। এক একটি ফলের ওজন ২০০ গ্রাম থেকে ৩০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। তবে ৪/৫ বছরের একটির পূর্ণাঙ্গ গাছ থেকে এক কেজি পর্যন্ত ওজনের ড্রাগন ফল পাওয়া সম্ভব হবে। একটি পূর্ণাঙ্গ গাছ থেকে বছরে ৮০ কেজি পর্যন্ত ফলন হতে পারে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১:১৮ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০১৯

Sylheter Janapad |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
সম্পাদক ও প্রকাশক
গোবিন্দ লাল রায় সুমন
প্রধান কার্যালয়
আখরা মার্কেট (২য় তলা) হবিগঞ্জ রোড, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার
ফোন
+88 01618 320 606
+88 01719 149 849
Email
sjanapad@gmail.com