দিরাই (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি :
সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জগদল ইউনিয়নের কালধর গ্রামে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় প্রতিপক্ষের বন্দুকের গুলিতে ঘটনাস্থলেই আমির উদ্দিন নামে একজন নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন সালিশসহ আরো ২০ জন। নিহত আমির উদ্দিন কালধর গ্রামের সাইদ উল্লার পুত্র।
১৫ ডিসেম্বর রোববার সকালে গ্রামের মনু মিয়ার বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে দিরাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে এবং হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে গ্রামের মৃত হাজী আবদুল অলীর পুত্র ফারুক মিয়াকে বন্দুক সহ আটক করে থানা হেফাজতে নিয়ে আসা হয়।
ঘটনার সময় ঝগড়া থামাতে এসে পাশের কলিয়ার কাপন গ্রামের শফিক মিয়ার পুত্র দেলোয়ার হোসেন (৩০) ও নাজির উদ্দিনের ছেলে রাজেল মিয়া (৩২) গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন এছাড়াও কালধর গ্রামের গুলিবিদ্ধ এলাইছ মিয়া (৫২), শহিদ মিয়া (৩৬), চন্দন মিয়া (৩০), মিলন মিয়া (৩০), করম আলী (৫২), বিল্লাল মিয়া (২৯), জাকারিয়া (২৫), ছাদ হোসেন (২৯), মাহবুব মিয়া (১৮), জুয়েল মিয়া (১৯), কুতুব মিয়া (৩০) কে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
গ্রামবাসী ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, ফারুক মিয়া, মনু মিয়া ও আওয়াল মিয়ার কাছে থাকা গ্রামের উন্নয়ন ফান্ডের প্রায় ১০-১২লক্ষ টাকা নিয়ে গ্রামবাসীর সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছিলো। এনিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকাবাসী কয়েকবার শালিস বৈঠকের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হলেও তারা ব্যার্থ হয়।
রোববার সকালের দিকে গ্রামের শফিক মিয়া, আইয়ুব মিয়া ও জুয়েল মিয়া মোটর সাইকেল যোগে দিরাই আসার পথে মনু মিয়ার বাড়ীর সামনে আসলে মনু মিয়া, মিলিক মিয়া ও ফারুক মিয়াসহ তাদের লোকজন এদের উপর হামলা চালায়। এখবর পেয়ে গ্রামের লোকজন তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসলে ফারুক মিয়ার নেতৃত্বে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান আমির উদ্দিন।
গ্রামের সাবাজ মিয়া জানান, আজ তিন বছর ধরে গ্রামের উন্নয়ন ফান্ডের প্রায় ১০-১২ লক্ষ টাকা ফারুক মিয়া, মনু মিয়া ও আউয়াল মিয়ার কাছে রয়েছে। গ্রামবাসী টাকার হিসাব চাইলে তারা বিভিন্ন টালবাহানা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রামবাসীকে হয়রানী করে আসছেন।
ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শিবলী আহমেদ বেগ জানান, বিষয়টি সমাধানের জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও সমাধান হয়নি। দিরাই থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেএম নজরুল ইসলাম জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ফারুক মিয়াকে তার বন্দুকসহ আটক করে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। গ্রামের পরিবেশ এখন শান্ত রয়েছে। নিহত আমির উদ্দিনের লাশ ময়না তদন্তের জন্য সুনামগঞ্জে প্রেরণ করা হয়েছে।