সোমবার ২৭শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে ধীরগতি, শুরু হয়নি ৯ টি বাঁধের কাজ

শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২০     125 ভিউ
দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে ধীরগতি, শুরু হয়নি ৯ টি বাঁধের কাজ

কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার কৃষকদের একমাত্র ভরসা বোরো ফসল। বর্তমান সরকার যখন খাদ্য সংকট মোকাবিলা করতে সুনামগঞ্জের অন্যতম শস্য-ভান্ডার বোর ফসল রক্ষার্থে ক্রুটিপুর্ণ বাঁধ নির্মান ও ক্লোজার (ভাঙ্গা) মেরামতের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করার নিয়মনীতি বেঁধে দিলেও দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ৫০টি বাঁধের মধ্যে এখনও শুরুই হয়নি ২৫,২৬,৪০,৭,৫,৪,৩,৮ ও ৩৯ বাঁধের কাজ।

যার ফলে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার দেখার হাওর, সাংহাই হাওর, কাচিভাঙ্গাঁ হাওর, জামখলা হাওর ও খাইহাওরের কৃষকদের ২২হাজার হেক্টর জমির একমাত্র বোরো ফসল হুমকির মুখে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দেখার হাওরের হলদির খাড়া, উতারিয়া, পাথালিয়া, জামখলা হাওরের জামখলা বাঁধ, খাই হাওরের রাঙ্গামাটি কিছু অংশে বাঁধের কাজ শুরু হলেও পূর্ব বীরগাঁও, পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের ১৮ টি পিআইসির মধ্যে দু একটি ছাড়া সবগুলোইতে মাত্র ধুমড়া ছাপ করার কাজ শুরু হয়েছে, মাটি কাটা এখন শুরু হয়নি।

পিআইসির সাথে আলাপকালে জানা যায়, কেউ কেউ এস্কেভেটর যন্ত্রের অপেক্ষায় আছেন, আবার কারও কারও বাঁধের পরিমান করে দেওয়া হয়নি, কারও কারও মেশিন নষ্ট। সরেজমিন আরও দেখা যায় পশ্চিম বীরগাঁও ৭টি পিআইসির সাইনবোর্ড লাগানো হয়নি। এছাড়া ডিজিটাল সাইনবোর্ড দিলেও সাইনবোর্ডে জায়গার দৈর্ঘ্য ও উচ্চতা লেখা না থাকায় কাজ করতে ও যারা কাজ পরিদর্শনে যান কি পরিমান কাজ হবে তা বুঝতে বিরাট সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

বিগত বছরগুলিতে বিপদগ্রস্থ যে বাঁধগুলোর অংশ দিয়ে হাওরে পানি ঢুকে সোনালী ফসল তলিয়ে গিয়ে ছিল এবারো সেই অংশগুলোই বিপদগ্রস্থ বলে মত প্রকাশ করছেন অনেক কৃষক। বোর মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ী ঢল হলে মহাসিং নদীর পানি বিপদ সীমার কাছাকাছি। যা পানির প্রথম ধাক্কায় বাঁধগুলো হুমকির সম্মুখীন। পিআইসি’র মাধ্যমে যে কাজগুলো হচ্ছে তা বর্তমানে অগোছালো অবস্থায় আছে ড্রেসিং ও দুরমুছ করা হচ্ছে না অধিকাংশ বাঁধেরই।

পাউবো’র নিয়ম অনুযায়ী যে মাপের ভিত্তিতে কাজ করার কথা ছিল সে অনুযায়ী কিছু কিছু পিআইসি কাজ করলে ও অধিকাংশ পিআইসি তা না করে বাঁধের একেবারে নিকট থেকেই বড় বড় গর্ত করে এস্কেভেটর দিয়ে মাটি তুলে বাঁধ দিচ্ছে যা বাঁধের জন্য বিরাট হুমকি স্বরুপ।

সরকার প্রতিবছর ফসল রক্ষা বাধঁ নিমার্নের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিলে ও বিগত বছরগুলোতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু সুযোগ সন্ধানী দূনীর্তিবাজ কর্মকতা ও ঠিকাদারদের ব্যাপক অনিয়ম-দূনীতির কারণে সময়মতো সুনামগঞ্জ জেলার হাওর ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মানের নামে লুকোচুরি, অসমাপ্ত কাজ, টেকসই বাধঁ নির্মান না হওয়া, সময় কালক্ষেপন ইত্যাদি কারণে আাগাম বন্যায় কৃষকরা তাদের সোনালী ফসল হারাতে হয়েছিল।

কাজ শুরুর কথা ২৩ ডিসেম্বর হলেও কাজ শুরু হয় জানুয়ারীর প্রথম দিকে তা আবার ২৮ ফেব্র“য়ারীর মধ্যে কাজ শেষ করার নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়। ফলে এখন পর্যন্ত কাজে গতি না আসায় এবং অধিকাংশ বাঁধে কাজ শুরু না হওয়ায় আদৌ কাজ শুরু হবে কি হবে না বা কবে সম্পন্ন হবে কি হবেনা এ নিয়ে চরম হতাশা আর শঙ্কায় রয়েছেন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার প্রায় পৌনে একলাখ কৃষক।

কৃষকরা আরও জানান এবারে কাজের গতি কম হলে আর কাজ শুরু করতে দেরী হলে আগাম বন্যার কবল থেকে তাদের ফসল রক্ষা করতে পারবে কিনা এ নিয়ে ও রয়েছে কৃষকদের মাঝে বন্যা আতংঙ্ক। এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও ফারুক আল মামুন জানান, উপজেলার ৫০ টি পিআইসির মধ্যে ৪৩ টি কাজ বুঝিয়ে দিলেও কাজের অগ্রগতি খুবই কম।

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেবুন্নাহার শাম্মী জানান, কাজের সময়সীমা অনুযায়ী বাঁধের কাজের প্রথম দিকে কাজ পেয়ে পিআইসিদেরকে দ্রুত শেষ করার জন্য বার বার তদারকি করেছি, আশা করি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বেরিবাঁধের কাজ শেষ হয়ে যাবে এবং যারা এখন ও কাজ শুরু করেনি তাদের বিষয়টা আমি খতিয়ে দেখব।

 

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৮:৫৩ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২০

Sylheter Janapad |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
সম্পাদক ও প্রকাশক
গোবিন্দ লাল রায় সুমন
প্রধান কার্যালয়
আখরা মার্কেট (২য় তলা) হবিগঞ্জ রোড, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার
ফোন
+88 01618 320 606
+88 01719 149 849
Email
sjanapad@gmail.com