দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের বড়মোহা গ্রামের নিহত কলেজ ছাত্র নাজিমুল ইসলাম নাজিম জায়গীরদারের দাফন সম্পন্ন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা আনছার মিয়া জায়গীরদার বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ইতিমধ্যে থানা পুলিশ ঘটনায় জড়িত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছেন।
সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টায় উপজেলার পশ্চিম বীরগাও ইউনিয়নের বড়মোহা গ্রামের ঈদগাহের মাঠে জানাযার নামাজ শেষে গ্রামের পঞ্চায়িতি কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ সময় জানাযার নামাজে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি হাজী তহুর আলী, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক নুর হোসেন, জেলা খেলাফত মজলিসের নির্বাহী সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন মোহন, জেলা কৃষকলীগের সদস্য মাসুক মিয়া, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী এম জমিরুল ইসলাম মমতাজ, বড়মোহা মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মোস্তাক আহমদ গাজীনগরী, বিশিষ্ট মুরুব্বী জমিলুল হক জায়গীরদার, জমসিদ আলী জায়গীরদার, আব্দুল ওয়াহিদ, আক্তার হোসেন, ইউপি সদস্য তেরা মিয়া,ডাঃ সোহেব আহমদ জায়গীরদার, মতিউর রহমান জায়গীরদার, সৈয়দ হোসেন জায়গীরদার রানা, মাওলানা আলাল হোসেন, হোসেন সহ এলাকার বিভিন্ন গ্রামের মুছুল্লীয়ান প্রমূখ।
বিকালে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানায় নিহতের বাবা আনছার মিয়া জায়গীরদার বাদী হয়ে ৫১ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরো ১০/১২ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। থানার মামলা নং ০৯, তারিখ: ২৮.০৬.২০২১ইং।
এ ঘটনায় দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, বড়মোহা গ্রামের খলিল খানের ছেলে আমিন খান (২১), আবুল খয়ের খানের ছেলে জাহির আলম খান (৩৫), মৃত গোলাপ খাঁনের ছেলে মনতছির আলী খাঁন (৬৫)।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী মোক্তাদির হোসেন জানান, খুনের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। ইতিমধ্যে ঘটনায় জড়িত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে, বাকি আসামীদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। গ্রেপ্তারকৃত ৩ জনকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এলাকায় যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা আর না ঘটে সেই জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য: গত রবিবার (২৭ জুন) বিকালে উপজেলার পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের বড়মোহা গ্রামের ঈদগাহের মাঠে গ্রামের ছেলেরা ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে আনছার মিয়ার ছেলে নাজিমুল ইসলাম জায়গীরদার নাজিম ও একই গ্রামের খলিল খানের ছেলে আমিন খানের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। কথাকাটাকটির এক পর্যায়ে খাঁ গোষ্ঠীর লোকজন উত্তেজিত হয়ে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে নাজিমুল ইসলামের লোকদের উপর আক্রমন চালালে তারা বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। তখন প্রতিপক্ষের লোকজন নাজিমুল ইসলাম জায়গীরদার নাজিম’র বাড়িতে গিয়ে আক্রমন চালিয়ে দেশীয় অস্র চুলপি দিয়ে তার বুকে ও খালিছ মিয়ার পেটে ঘাই মারলে গুরুতর আহত হয় তারা। এ ঘটনায় আরো ৩ জন আহত হন। তখন ঘটনাস্থলে ৪ জনই গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় তাদেরকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে নাজিমুল ইসলাম জায়গীরদার নাজিম মৃত্যবরণ করেন। তার মৃত্যুতে পরিবারসহ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মৃত্যুতে বিভিন্ন মহল শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।