কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের কাউয়াজুরী হাওরের ৬ টি ভাঙ্গা অরক্ষিত প্রায় ১০হাজার হেক্টর বোর ফসল হুমকির মুখে রয়েছে।
সরেজমিন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাউয়াজুড়ী হাওরের ছিফতখালী, বগলাজুড়ী, শীমেরখাল, কাপতানের খাড়া, আলমখালীর খাড়া, কাউয়াজুরীর খাড়া নামক এই ৬টি ভাঙ্গায় মাটি ভরাট না হওয়ায় ঐ এলাকার ঠাকুরভোগ, মৌখলা, সাপেরকোনা, টাইলা, দূর্গাপুর, উপ্তিপাড়, ধীতপুর, কাউয়াজুরী, উমেদনগড় গ্রামের প্রায় ১০হাজার হেক্টর বোর ফসল হুমকির মখে রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জ জেলা সুত্রে জানা যায়, টেন্ডারের মাধ্যমে এই ৬টি ভাঙ্গা বন্ধকরনের কাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আল মামুনের স্বত্তাধিকারী ঠিকাদার অমর ফারুক হারুন মিয়া। ৬টি ভাঙ্গা বন্ধকরনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বরাদ্দ দেওয়া হয় ৪লাখ ৬৫ হাজার টাকা। কিন্তু বরাদ্দ পাওয়ার পর ঠিকাদারের খামখেয়ালীর কারণে এখনও পর্যন্ত ঝুকিপূর্ণ ভাঙ্গায় মাটি ফেলা হয়নি ফলে হাজার হাজার কৃষকের সোনালী ফসল রয়েছে হুমকির মুখে।
ঠাকুরভোগ গ্রামের ছালামত মিয়া বলেন আমাদের এই হাওরের বাঁধের জন্য সরকার কোটি টাকার উপরে বরাদ্দ দিয়েছেন, বেরিবাঁধের কাজও প্রায় শেষের দিকে কিন্তু ঠিকাদারের অবহেলায় যদি এই ছিফতখালীর ভাঙ্গা সহ অন্যান্য ভাঙ্গা গুলো বন্ধ করা না হয়, তাহলে এই কোটির টাকার বরাদ্দ কোন কাজে লাগবে না।
সাপেরকোন গ্রামের ইউসুফ আলী বলেন, আর কিছুদিন পরেই ঝড়-বৃষ্টি নামার সম্ভাবনা রয়েছে সময়ের মধ্যে যদি এই ভাঙ্গা বন্ধ করা না হয় তাহলে আমাদের কষ্টের সোনার ফসল রক্ষা করা যাবে কিনা তা নিয়ে আমরা হুমকির মুখে রয়েছি।
মৌখলা গ্রামের অরুন দেবনাথ বলেন, আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা ঠিকাদারী প্রথা বাতিল করেছিলাম। এখন দেখি আবার মাঝখানে ঠিকাদার ডুইকা আমাদের সোনার ফসল নিয়ে খামখেয়ালী শুরু করেছে। আমাদের ফসল নিয়ে চিনিমিনি করলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আমরা এলাকাবাসী মিলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার হারুন মিয়া বলেন, ইতিমধ্যে দুটি ভাঙ্গায় মাটি ফেলা হয়েছে আগামীকাল থেকে অন্যান্য ভাঙ্গায় মাটি কাটা শুরু করা হবে।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, আমি এই বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও‘র সাথে আলাপ করেছি তারা বলেছেন আগামী সপ্তাহের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ বলেন, বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখে সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য তাগিদ দেব।
সুনামগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে ২টি ভাঙ্গায় মাটি ফেলা হয়েছে আগামী সপ্তাহে সবগুলো ভাঙ্গা বন্ধ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেবুন নাহার শাম্মী বলেন, এই ভাঙ্গাগুলো বন্ধকরণের জন্য টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হয়েছে আমরা তাগিদ দিয়েছি আগামী সপ্তাহে কাজ শেষ করার জন্য।
Posted ১:৪৭ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad