আলম সাব্বির, তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতাঃ তাহিরপুর মেঘালয় থেকে নেমে আসা ঢল আর টানা বৃষ্টিতে শুক্রবার থেকে তাহিরপুর উপজেলায় দ্বিতীয় দফা বন্যা দেখা দিয়েছে।পানি বৃদ্ধি, ঢেউ আর তীব্র স্রোতে সড়ক ভেঙে যাওয়ায় তাহিরপুরের সাথে সুনামগঞ্জের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ২৩০টি গ্রামের লাখোধিক মানুষ।
উপজেলা পরিষদসহ আভ্যন্তরীণ রাস্তঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।। উপজেলার ছোট বড় ত্রিশটি হাট বাজার, ১৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনোপানির নিচে রয়েছে। হাওর বেষ্ঠিত গ্রামসমুহে ঢেউয়ের কারণে দুই হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে উপজেলা তথ্য অফিস সুত্রে জানা গেছে। সোমবার-মঙ্গলবার বৃষ্টি না হওয়ায় হাওর ও নদীর পানি কমতে শুরু করেছে তবে ধীরগতিতে।
জানা যায় ২৩ টি হাওর নিয়ে গঠিত তাহিরপুর উপজেলার আয়তন প্রায় ৩৩৬.৩৭ বর্গ কিলোমিটার। উপজেলার ৮০ ভাগ লোকজনের বাস হাওর বেষ্ঠিত জনপদে এসব জনপদের মানুষ পানিবন্দী হয়ে বিশুদ্ব পানি, জ্বালানী, চিকিৎসা সেবা, সেইসাথে কর্মহনি দরিদ্র লোকজন পরিবার পরিজন সহ অনাহারে দিনাপাতিপাত করছেন বলে জানিয়েছেন পানিবন্দী শতশত লোকজন।তারা বলেন যদিও সরকারী ভাবে ত্রান সহায়তা দেওয়া হচ্ছে তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
ব্যাক্তিগত ওবিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যানারেও বিভিন্ন এলাকায় শুকনো খাবার, পানি বিশুদ্ব করন টেবলেট ত্রান সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলে লোকজন জানিয়েছেন।ইতিমধ্যে ঢেউয়ের আঘাতে হাওরপাড়ের শহস্রাধিক ঘরবাড়ি ধ্বসে পড়েছে। অভ্যন্তরীণ ৩০ কিলোমিটার কাঁচা পাকা সড়ক ভেঙে গেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও নিচতলায় পানি উঠার কারনে বিঘ্নিত হচ্ছে চিকিৎসা কার্যক্রম। গত ৪ দিন ধরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দ্বিতীয় তলা থেকে পরিচালনা করা হচ্ছে।
গোয়াল ঘর পানিতে ডুবে যাওয়ায় গোবাদি পশু আর গো-খাদ্য নিয়ে বিপাকে পড়েছেন হাজারো কৃষক পরিবার। বাধ্য হয়ে অনেকেই গরুর পাইকারের কাছে পানির দরে গরু-ছাগল বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। নিরোপায়ে অনেক পরিবার সরকারী আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসিন সিংহ বলেন, বন্যায় ৮০ ভাগ এলাকায় ডুবে সাগরের মতো রূপ ধারণ করেছে। এর মধ্যে জেগে থাকা হাওর পাড়ের গ্রাম,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট পানি আর ঢেউয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রশাসন উপজেলাবাসীর পাশে থেকে সহায়তা করার চেষ্টা করছে।
সুনামগঞ্জ-১ আসনের সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, ‘বন্যায় দুর্গতদের জন্য ত্রাণের অভাব নেই। যখন যা প্রয়োজন তা সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নিয়মিত বন্যা দুর্গতদের খোঁজ রাখছেন ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিচ্ছেন জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে। তারা বন্যা দুর্গতদের পাশে রয়েছে।
জেলা প্রশাসক আব্দুল আহাদ জানান,বন্যায় দুর্গতদের জন্য প্রয়োজনীয় শুকনো খাবার ও অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্র খোলাসহ বন্যা পরিস্থিতির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
Posted ৯:৩৬ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই ২০২০
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad