ছাতকের ভাতগাঁও ইউনিয়নের জহিরপুর গ্রামে কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন মুহুর্তে রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষের আশংকা করছেন স্থানীয় বাসন্দিারা। একটি বেসরকারী সংস্থা কর্তৃক গ্রামে বৃক্ষ রোপন কর্মসূচীসহ একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে এ হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জহিরপুর ডেভলাপমেন্ট ট্রাষ্ট ইউকে নামক একটি বেসরকারী সংস্থা গ্রামের সরকারী ভুমিতে বৃক্ষ রোপন কর্মসূচীর উদ্যোগ গ্রহন করে। কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষে গ্রামবাসীর সাথে ট্রাষ্ট কর্তৃপক্ষ এক বৈঠকে করে আনুষ্ঠানিকভাবে বৃক্ষরোপন কর্মসূচী শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
মঙ্গলবার গ্রামের সরকারী ভুমিতে বৃক্ষরোপন কর্মসূচী শুরু করলে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জহিরপুর গ্রামের বাসিন্দা দবির মিয়া এতে বাঁধা প্রদান করেন। কর্মসূচীতে বাঁধা দেয়ায় মঙ্গলবার রাতে গ্রামের প্রবাসী আব্দুর রাজ্জাকের বাড়িতে এক জরুরী বৈঠকে বসে গ্রামবাসী। বৈঠকে গ্রামে বৃক্ষ রোপন কর্মসূচী ও জাইকার একটি প্রকল্প নিয়ে একটি কমিটিও গঠন করা হয়। বৈঠকে ও কমিটিতে দবির মিয়াকে না রাখায় তার ভাতিজা খসরু মিয়া গ্রামবাসীকে উদ্দেশ্য করে কটাক্ষও গালিগালাজ করলে এখানে খসরু মিয়ার সাথে গ্রামের কয়েকজনের হাতা-হাতির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে খসরু মিয়াকে বৈঠক থেকে বের করে দেয়া হয়।
এ ঘটনার জের ধরে দবির মিয়া ও তার লোকজন বৈঠকের আয়োজক জহিরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি, আওয়ামীলীগ নেতা আবুল কালামের বাড়ি হামলা ও ব্যাপক ভাংচুর চালায়। এ ঘটনায় এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য সালিশ-বৈঠকের আহবান করেন। বৃহস্পতিবার সকালে দবির মিয়ার স্বজনরা আবারো আবুল কালামের বাড়িতে হামলা করলে গ্রামবাসী উত্তেজিত হয়ে দবির মিয়ার বাড়িতেও পাল্টা হামলা চালায়। হামলার সময় দবির মিয়াকে নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখে গ্রামবাসী। এভাবে দবির মিয়া পক্ষের সাথে গ্রামবাসীর দফায়-দফায় হামলা-পাল্টা হামলা ও অবরুদ্ধ করার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হায়দরপুর গ্রামের আওয়ামীলীগ নেতা মানিক মিয়া, মন্ডলপুর গ্রামের এড. আফিজ মিয়া, এড. মনিরুজ্জামান সেলিম, মনাফ মিয়া, আব্দুল হান্নানসহ লোকজন ঘটনাস্থলে পৌছে অবরুদ্ধ দবির মিয়াকে উদ্ধার করে বিষয়টি সালিশে নিস্পত্তির উদ্যোগ নেন।
বর্তমানে জহিরপুর গ্রামে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে। গ্রামের বাসিন্দা ও ইউপি সদস্য সাজিল হোসেন বাবুল জানান, গ্রামের অধিকাংশ সরকারী ভুমি দবির মিয়া নিজ দখলে রেখেছেন। এসব সরকারী ভুমিতে বৃক্ষ রোপন করতে অন্যায়ভাবে বাঁধা দিয়ে গ্রামে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছেন দবির মিয়া ও তার স্বজনরা। আবুল কালামের বাড়িতে দবির মিয়া, খসরু মিয়া ও সুহেল মিয়ার নেতৃত্বে দু’দফা হামলা করা হয়েছে। বিষয়টি থানা পুলিশকে মৌখিকভাবে অবহিত করা হয়েছে। জহিরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই দেবাাশিষ ঘটনাস্থলে রয়েছেন।
Posted ৯:০৯ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৬ আগস্ট ২০১৯
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad