শুক্রবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

“ভারত এবং বাংলাদেশের শক্তিশালী সিন্ডিকেট এ কাজে জড়িত”

জাফলং সীমান্ত দিয়ে অবাধে আসছে ভারতীয় পণ্য

কাওছার আহমদ, গোয়াইনঘাট থেকে:-   মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট ২০১৯     293 ভিউ
জাফলং সীমান্ত দিয়ে অবাধে আসছে ভারতীয় পণ্য

এভাবেই প্রকাশ্য চলছে অবৈধ্য পথে ভারতীয় পণ্য আমদানী। ছবি- সিলেটের জনপদ

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহযোগিতায় প্রতিনিয়ত চোরাই পথে ভারত থেকে অবাধে বাংলাদেশে আসছে ভারতীয় পণ্য। অবৈধ পথে শুল্ক না দিয়ে প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকার মালামাল আসছে। তবে আগে রাতের আঁধারে আসলেও এখন দিনের বেলা অনেকটা প্রকাশ্যেই চলছে রমরমা চোরাই পণ্য আমদানী।

ভারতীয় এসব চোরাই পণ্যের দখলে চলে গেছে বাংলাদেশের বাজার। বলা চলে অনেকটা অরক্ষিত হয়ে পড়ছে সীমান্ত এলাকা। অভিযোগ আছে, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং, বিছনাকান্দি, সোনারহাট সীমান্তে নিয়োজিত কতিপয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের যোগসাজশে চোরাচালান সিন্ডিকেট অবৈধভাবে ভারতীয় পণ্য আনছে। আগের তুলনায় এই চোরাকারবারি সিন্ডিকেট এখন আরও সক্রিয়। দেদারসে দেশে ঢুকছে ভারতীয় পণ্য।

চোরাই পথে আসা ভারতীয় পণ্যের মধ্যে রয়েছে শাড়ি, থ্রি-পিস, শার্ট ও প্যান্টের থান কাপড়, ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাঁজা, বিয়ার, মোটর সাইকেল, বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, গরু মোটা-তাজাকরণের স্টেরয়েড ট্যাবলেট, হলুদ, জিরা, এলাচি, দারুচিনি, গোলমরিচসহ যাবতীয় মসলা, ফেয়ার এন্ড লাভলিসহ বিভিন্ন কসমেটিকস্। এসব চোরাই মালামালের কিছু কিছু মাঝে মধ্যে বিজিবি আটক করলেও পরবর্তীতে কাস্টমসে জমা দেয়ার আগে বেশিরভাগই পেছনের দরজা দিয়ে চলে যায় চোরাই সিন্ডিকেটের হাতে। এমন অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের।

ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদ উপলক্ষে এ বছর কয়েক কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয়েছে। এর ৮০ ভাগই ভারত থেকে এসেছে। কিন্তু এসব পণ্য বৈধপথে আসেনি। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবাধে ঢুকছে ভারতীয় পণ্য। আর এভাবে কয়েক কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা দেশ থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে।ফলে সরকার বছরে কোটি কোটি টাকার শুল্কক থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

ভারতীয় পণ্যের অবৈধ আমদানির কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশীয় শিল্পোৎপাদন। অবৈধ পথে আমদানিকারকদের শুল্ক পরিশোধ করতে হয় না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাস্টমসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “ভারত এবং বাংলাদেশের শক্তিশালী সিন্ডিকেট এ কাজে জড়িত। রাজনৈতিক প্রভাব আর প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা জড়িত থাকায় ভারতীয় পণ্য এ দেশে বাজারজাতকরণে তাদের খুব একটা বেগ পেতে হয়না”

ব্যবসায়ীরা জানান, ‘চোরাই পণ্য বিক্রিতে লাভ বেশি। শুল্ক ছাড়া এসব পণ্যের বাজার মূল্য অনেক কম থাকে।’ বেশি লাভজনক হওয়ায় বৈধ আমদানির চেয়ে অবৈধ আমদানির দিকেই ঝুঁকছেন ব্যাবসায়ীরা।

এদিকে সীমান্ত এলাকায় মাঝে মাঝে কিছু চোরাচালান জব্দ করা হলেও যে পরিমাণ পণ্য পাচার হয় তা তার এক সিকি ভাগও নয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাফলং এলাকার এক চোরাকারবারী জানান, ‘শুল্ক দিয়ে ভারত থেকে আমদানি করলে দাম দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ পড়ায় ব্যবসায়ীরা চোরাকারবারীদের দিকেই ঝুঁকছে। আর এসব কাজে তাদেরকে মৌন সহযোগিতা করছে কতিপয় বিজিবি সদস্যদের।’

কতিপয় সীমান্তরক্ষী সদস্যরা নিজেদের আখের গোছালেও সরকার হারাচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব। অন্যদিকে ভ্যাট ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে অবৈধ পথে ডুকা এসব পণ্যের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো হয়ে পড়ছে রুগ্ন আর বন্ধ। জাফলং সংগ্রামপুঞ্জি বিজিবি ক্যাম্পের পরিচালক বাবুল সাহেব  জানান, তিনি এখানে নতুন এসেছেন, চোরাকারবারিদের সাথে বিজিবি সদস্যদের যোগসাজশের কথা তিনি অস্বীকার করেন। তবে প্রশ্ন যেখান উঠেছে তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্তে বিজিবি’র কোন সদস্য এই চোরাকারবারীদের সাথে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৪:১৯ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট ২০১৯

Sylheter Janapad |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
সম্পাদক ও প্রকাশক
গোবিন্দ লাল রায় সুমন
প্রধান কার্যালয়
আখরা মার্কেট (২য় তলা) হবিগঞ্জ রোড, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার
ফোন
+88 01618 320 606
+88 01719 149 849
Email
sjanapad@gmail.com