সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় চুন ঢেলে চোখ উপড়ে ফেলায় অ্যাসিড সন্ত্রাস দমন আইনে ১০ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক প্রাপ্ত এসআই হাবিব এর তদন্তাধীন মামলায় দুপুরে সেশন জজ ও অ্যাসিড দমন অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রাশেদুজ্জামান রাজা এ রায় দেন। সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার রাউতগ্রামের আবদুস সালাম, মো. নুরুল মিয়া, আলতাব মিয়া, রুবেল মিয়া, শামসুল ইসলাম সাদ্দাম, আবদুর রহিম, আয়াত উদ্দিন, মাসুক মিয়া, মোহাম্মদ আলী ও আবদুর রহিম। তাদের মধ্যে দণ্ডপ্রাপ্ত রুবেল পলাতক রয়েছেন।
মামলার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রাউতগ্রামে সরকারি খাসজমিতে বাড়ি বানিয়ে প্রায় ৩০ বছর ধরে বসবাস করে আসছিলেন জমির উদ্দিন ও তার ভাইয়েরা। বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টারত ছিল আসামিরা।
এ ঘটনার বাদীর সঙ্গে আসামিদের মামলাও চলমান ছিল। মামলা দিয়ে উচ্ছেদ করতে না পেরে ২০১৩ সালের ২৬ মার্চ সন্ধ্যা ৭টায় গোয়াইঘাটের উত্তর রাউতগ্রামের আবদুল মৃত জব্বারের ছেলে জমির উদ্দিনের বাড়িতে ঢুকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করে আসামিরা।
এ ঘটনায় জমির ও তার ভাইয়েরা গুরুতর আহত হন। আসামিরা বাদীর ভাই আজির উদ্দিন ও আলাউদ্দিনের চোখে চুন ঢেলে দিয়ে চোখ নষ্ট করে দেয়। ওই বছরের ৩ এপ্রিল জমির বাদী হয়ে গোয়াইঘাট থানায় পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশে সংঘঠিত ঘটনায় ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ৭ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হাবিবুর রহমান। ২৫ ডিসেম্বর অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনায় ওই ১০ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন এসআই হাবিবুর রহমান। এ ঘটনায় পুলিশ ৯ আসামিকে গ্রেফতার করেন।
মামলাটি অ্যাসিড সন্ত্রাস নিমূল দমন ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের পর ২০১৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। মামলায় ২৮ সাক্ষীর মধ্যে ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের পর আদালত ২০০২ সালের অ্যাসিড সন্ত্রাস দমন আইনে আসামিদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
জরিমানার টাকা ভিকটিমদ্বয়ের হাতে তুলে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালতের বিচারক। এ ছাড়া পলাতক আসামির বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট তামিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।