বিজয় রায়, ছাতক প্রতিনিধিঃ ছাতকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের একটি তুচ্ছ ষ্ট্যাটাস নিয়ে হিন্দুবাড়ি হামলার ঘটনা ঘটেছে। রোববার রাতে শহরের তাতিকোনা এলাকায় এ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। হামলায় নারীসহ আহত হয়েছে ৮ ব্যক্তি। আহতদের ছাতক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ গোলাম কবির, সুনামগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার, ছাতক সার্কেল বিল্লাল হোসেন, ছাতক থানার ওসি মোস্তফা কামাল ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল ওয়াহিদ মজনু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ ঘটনায় সোমবার তাতিকোনা এলাকার বাসিন্দা রবীন্দ্র দাসের পুত্র তাপস দাস বাদী হয়ে একই এলাকার সাহেদ আলী সরকারের পুত্র আরিফ আহমদকে প্রদান করে ২২ জনের বিরুদ্ধে ছাতক থানায় একটি মামলা(নং-৯) দায়ের করেন।
সোমবার দুপুরে সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে হামলায় ক্ষতিগ্রস্থদের শান্তনা দেন তিনি। বিষয়টি আইনীভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চ্ঞ্চাল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
তাতিকোনা গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা স্বরাজ কুমার দাস, শিক্ষক প্রনব দাস মিটু ও গ্রামের নুপুর দাস জানান, আরিফ আহমদ ও তাপস দাসের বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্কের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে তাদের মধ্যে মনমালিন্য চলে আসছিল। এরই মধ্যে তাপস দাস তার ফেইসবুক আইডিতে ‘গরুর কাছে ঘাসের গল্প করতে হয়, ফুলের গল্প তার নিকট বেমানান’ এমন একটি ষ্ট্যাটাস গরুর ছবিসহ পোষ্ট করে।
এ ষ্টাটাসকে কেন্দ্র করে আরিফসহ ১৫-২০জন যুবক দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা স্বরাজ দাস, শিক্ষক প্রনব দাস মিটু ও মোবাইল ম্যাকানিক পবলু দাসের বাড়িতে হামলা চালায় এবং ব্যাপক ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে এসব বসতঘরের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। হামলায় আহত হয় তাপস দাস, পবলু দাস, পিলু দাস, রাতুল চৌধুরী, শিমুল দাস, শিপরু দাসসহ ৮ ব্যক্তি।
তারা আরো জানান, এসময় হামলাকারীরা গ্রামের কালী মন্দির লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে। এতে কালী মুর্ত্তির কোন ক্ষতি না হলেও মন্দিরের থাকা আনুসাঙ্গিক জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যায়। হামলাকারীদের আধ ঘন্টাব্যাপী তান্ডবে তাতিকোনা এলাকায় বসবাসরত হিন্দু পরিবারগুলোর মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। হামলায় কয়েকজন নারীও লাঞ্চিত হয়েছেন বলে তারা জানিয়েছেন।
এদিকে আরিফ আহমদের ভাই শরীফ আলম জানান, একসঙ্গে চলাফেরা করা এলাকার বন্ধু মহলের মধ্যে ফেসবুক ষ্ট্যাটাস নিয়ে মারামারি হয়েছে। হিন্দুদের বাসাবাড়ি বা মন্দিরে হামলার কোন ঘটনা ঘটেনি। এটি কোন গোষ্ঠির বা সম্প্রদায়ের ঘটনা নয়। ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম মোস্তফা জানান, এ ঘটনায় মামলা নেয়া হয়েছে। সুষ্ট তদন্তের মাধ্যমে আইনী ব্যস্থা নেয়া হবে।
Posted ১:০৩ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১২ মে ২০২০
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad