আব্দুল হাদী , ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধি : ভোর হলে খাবারের সন্ধানে নিঃশব্দে চলে যায় দূর দুরান্তে। সূর্য অস্ত যাওয়ার মিনিট পনের আগে শুরু হয় আবাসস্থলে আসা । নিজ নিজ স্থানে বসার আগ পর্যন্ত চলে কিচির মিচির শব্দ , পাখিদের ডাকে চারিদিক মুখরিত হয়ে উঠে। দেশী প্রজাতির পাখি এক জায়গায় জড়ো হওয়া বর্তমান সময়ে দূর্লভ। তবুও বিশ্বনাথ উপজেলার জমির আহমদ বহু মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শতাধিক বনজ গাছে ভিন্ন ভিন্ন জাতের অসংখ্য পাখির আশ্রয় নেওয়াকে মনে হয় যেন পাখির অভয়ারণ্য।
ওসমানীনগর উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের নতুন বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া আমির দিন নদীর দক্ষিনে ওসমানীনগর এবং উত্তরে বিশ্বনাথ উপজেলা। দুই উপজেলার সীমান্তে অবস্থিত মাধ্যমিক স্কুলটিতে রয়েছে উচু উচু বনজ গাছ। এসব গাছগুলোতে বুলবুলি , দোয়েল , চড়ই সহ ভিন্ন ভিন্ন জাতের অসংখ্য পাখিরা তাদের আবাস স্থল হিসেবে বেছে নিয়েছে। প্রতিষ্টানটির আশেপাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ থাকলেও অন্য কোথাও না বসে পাখিরা তাদের আবাস স্থল হিসেবে বেচে নিয়েছে স্কুলটিকে।
১৯৭৪ সালের বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনের পাখি শিকার দন্ডনীয় অপরাধ হলেও সে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নেই। তাই প্রতিনিয়ত দেখা যায় বন্দুক কিংবা বিভিন্ন ধরনের ফাদ পেতে শিকারীরা পাখি শিকার করে।অবৈধভাবে পাখি শিকারের কারনে বিলীন হতে চলেছে দেশীয় প্রজাতির অনেক পাখি। পাখিদের যত্রতত্র আশ্রয় নেওয়াটা নিরাপদ নয় কেননা রাতের আধারেও শিকারির হাত থেকে পাখিরা রেহাই পায়না। তবুও জমির আহমদ হাই স্কুলটাকে পাখিগুলো তাদের নিরাপদ আশ্রয় হিসেবেই গড়ে তুলেছে।
সন্ধ্যার পর থেকে নিঃশব্দে রাত কাটায় পাখিরা। ভোর হলেই চলে যায় আবার সন্ধ্যার আগেই ফীরে আসে।শিকারিদের নজর পড়েনি তা নয়। কিন্তু ভেতরে কেউ প্রবেশ করতে না পারায় পাখিগুলো নিরাপদে রাত কাঠায় এমনটাই জানালেন বিদ্যালয়ের এম এল এস এস আব্দুল খলিল।
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক অজিত চন্দ্র দেব জানান ,চলতি বছরের মার্চ মাসের প্রথম থেকে পাখিগুলো বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে।কোন শিকারী যাতে পাখি মারতে না পারে সেজন্য রয়েছে কড়া নিষেধাজ্ঞা।এছাড়াও অকারনে বিদ্যালয়ে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়না।পাখিগুলো যাতে এখানে নিরাপদে বাস করতে পারে সেজন্য যে কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
নতুন বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান , সন্ধ্যার আগে বিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকাজুড়ে পাখির কিচির মিচির শব্দে মনমুগ্ধকর এক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। পাখিগুলো এখানে যেভাবে নিরাপদে থাকতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহন করলে বিদ্যালয়েই দীর্ঘস্থায়ী বসবাস করতো।
Posted ১২:৫৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট ২০২০
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad