অজামিল চন্দ্র নাথ, গোলাপগঞ্জ : শতবর্ষ উৎসবের বর্ণিল সাজে সজ্জিত উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীট ভাদেশ্বর নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ। আগামী ২৫ ও ২৬ ডিসেম্বর দুই দিনব্যাপী জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠানের শতবর্ষ পূর্তি উৎসব উদযাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন উদযাপন কমিটি।
রবিবার (২২ ডিসেম্বর) বিকালে প্রতিবেদকের সাথে কথা হলে উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ সুনীল চন্দ্র দাস জানান, অনুষ্ঠান সূচিতে থাকছে মিলাদ মাহফিল, আনন্দর্যালী, আলোচনা সভা, স্মৃতিচারণ মূলক অনুষ্ঠান ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সহ নানা কর্মসূচী। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশের বরেণ্য শিল্পীরা অংশ নেবেন।
অনুষ্ঠানের প্রথম দিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি ও দ্বিতীয় দিন থাকবেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি। শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে বাড়তি আকর্ষণ হিসেবে থাকছে বিদ্যালয়ের ৯৭ব্যাচ এর প্রাক্তন চার শিক্ষার্থীর উদ্যোগে হেলিকপ্টার নিয়ে নান্দকি অবতরণ ও উড্ডয়ন।
সরজমিনে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, অভিবাদন ও শুভেচ্ছা বাণী সংবলিত অসংখ্য তোরণ, ব্যানার-ফেস্টুনে ছেঁয়ে গেছে ভাদেশ্বর-ঢাকাক্ষিণ-গোলাপগঞ্জ সড়কের কয়েক কিলোমিটার এলাকা। মঞ্চ তৈরির কাজ শেষে চলছে সাজসজ্জার কাজ। ইতিমধ্যে শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে নাম রেজিস্ট্রেশন করেছেন প্রায় তিন সহস্রাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থী। পাশাপাশি অধ্যয়নরত প্রায় ১৫’শ জন শিক্ষার্থী অংশ নিবেন এ উৎসবে।
এদিকে শতবর্ষ উৎসবকে সফল করতে গতকাল রোববার বিদ্যালয় অডিটোরিয়ামে সেচ্ছাসেবকদের নিয়ে দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন শতবর্ষ উদযাপন কমিটির আহবায়ক মাছুম চৌধুরী, উদযাপন কমিটির সদস্য ময়নুল হক, সদস্য সচিব ও অধ্যক্ষ সুনীল চন্দ্র দাস, ভাদেশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান জিলাল উদ্দিন, রেজিষ্ট্রেশন কমিটির সদস্য এমএ হান্নান, মুর্শেদুল আজাদ পলাশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি কমিটির সদস্য তাহের উদ্দিন তাজ্জুব, অমল কান্তি দাস প্রমুখ।
সেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালনের জন্য প্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থী কর্মশালায় অংশ নিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও কলেজ অধ্যক্ষ সুনীল চন্দ্র দাস। শতবর্ষ উদযাপনকে সফল করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও শতবর্ষ উদযাপন কমিটির আহবায়ক মাছুম চৌধুরী।
উল্লেখ্য ১৮১৯ সালে উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের জনহৈতষী ব্যক্তিত্ব খান বাহাদুর নাছির উদ্দিন চৌধুরী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ওই সময় গ্রামের সর্বস্থরের জনগণ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে স্কুল প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক পর্যায়ে ইংরেজি শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে একটি বাড়িতে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা হয়েছিল বলে জানাযায়। পুরোদমে ছাত্র ভর্তি শুরু হলে জায়গা সংকুলান থাকায় ভাদেশ্বরের দক্ষিণ ভাগের দক্ষিণ পূর্বে অবস্থিত এক বড় টিলায় স্কুল স্থাপন করা হয়।
প্রাকৃতিক সুন্দরমন্ডিত পরিবেশে যথারীতি স্কুলের কার্যক্রম চলছিল। তবে গ্রামের শেষ প্রান্তে স্কুল স্থাপন হওয়ায় দূর দূরান্তের গ্রাম থেকে স্কুলে আসা যাওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য কষ্টকর হয়ে উঠে। ২ বছর পর আবারও স্থান পরিবর্তন করে ১৯২১ সালে পূর্ব ভাগের বর্তমান স্থানে স্থানান্তরিত করা হলে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করছে এই বিদ্যালয়। এতদঞ্চলে শিক্ষার আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে এই বিদ্যালয়। ২০১৫ সালে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পাঠদান কার্যক্রম চালুর মাধ্যমে কলেজে উন্নীত হয়।
Posted ১০:১২ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০১৯
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad