আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:
দিল্লি সংঘর্ষে হাহাকারের মধ্যেই সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্ঠান্ত দেখালেন মুস্তাফাবাদের বাবুনগরের মুসলিমরা। মুসলিম অধ্যুষিত এ অঞ্চলে শিব মন্দির রক্ষায় মুসলিমরাই এগিয়ে এলেন।
আশেপাশের অঞ্চলে সম্প্রদায়িক দাঙ্গা ভয়ঙ্কর রূপ নিলেও এই অঞ্চলের বাসিন্দারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রুখে দিয়েছেন সংঘর্ষ। তুলে ধরেছেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজির।
কলেজ পড়ুয়া মহম্মদ হাসিন এর কথায়, ‘‘পরিস্থিতি যেমনই হোক, আমরা চেয়েছিলাম সব সময়েই ঐক্যবদ্ধ থাকতে। যাতে হিংস্র জনতার মোকাবিলা করা যায়।’’
একদিকে মসজিদ জলছে অন্যদিকে মুসলিমরা পাশের মন্দির রক্ষায় এগিয়ে এসেছেন।পারস্পরিক বিশ্বাস ও ভাতৃত্ব অটুট রাখাই ছিল তাঁদের সংকল্প। মন্দির বাঁচাতে ওই কয়েকটা দিন পাহাড়া দিয়েছেন তাঁরা।
হাসিনের জানান, ‘‘দুই ধর্মের মানুষই ছোট ছোট দল তৈরি করে সতর্ক থেকেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাতে তুলে নিয়েছিলাম লাঠি।’’
স্থানীয় চায়ের দোকানে খাবার সরবরাহ করে কামরুদ্দিন । তাঁর কন্ঠেও সম্প্রীতির সুর। ‘‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা একসঙ্গে রয়েছি। কখনও সংঘর্ষের কথা ভাবতেই পারিনি। এই কঠিন সময়ে মানবতা রক্ষা করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মসজিদ জ্বলে গিয়েছে জানি, কিন্তু মন্দিরে কোনও আঁচ লাগতে দেব না।’’
গত ৩০-৩৫ বছর ধরে মন্দিরের তত্ত্বাবধায়ক রীনা (৫২)। দৈনন্দিন পুজোর সমস্ত দায়িত্বই তাঁর। এই বিপদের সময়ে তিনিও ধর্ম বিচার না করে আস্থা রেখেছেন ভিন্ ধর্মের ভাইদের উপরেই। তুলে দিয়েছেন মন্দিরের চাবি। ‘‘ওরা তো নিজেদেরই লোক। গত কয়েক দিন মন্দিরে যেতে পারিনি। কিন্তু আমি নিশ্চিত ছিলাম, ওরা থাকতে মন্দিরের কোনও ক্ষতি হবে না। এত দিন একসঙ্গে রয়েছি। পরিস্থিতি খারাপ বলে কি সব বদলে যাবে? আমরা পৃথক ভাবে ধর্মাচরণ করলেও ঈশ্বর তো একই,’’ বললেন রীনা। তাই মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলেও নিজের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত নন ৫২ বছরের এই মহিলা।
সুত্র- আনন্দবাজার পত্রিকা
Posted ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad