মঙ্গলবার ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

শাল্লায় লুটপাট ধান্দাবাজির ফাঁদে বাঁধের কাজ   

শাল্লায় লুটপাট ধান্দাবাজির ফাঁদে বাঁধের কাজ      রবিবার, ০৭ মার্চ ২০২১     438 ভিউ
শাল্লায় লুটপাট ধান্দাবাজির ফাঁদে বাঁধের কাজ   

শাল্লায় লুটপাট ধান্দাবাজির ফাঁদে বাঁধের কাজ   

পি সি দাশ পীযূষ, শাল্লা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি :  হাওররক্ষা বাঁধের কাজ নিয়ে ক্ষুব্ধ  সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার কৃষক ও কৃষক সংগঠকরা। তারা বলছেন, যে আকাঙ্খা নিয়ে ২০১৭ সালে অনিয়ম লুটপাটের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে কৃষকদেরকে সম্পৃক্ত করে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি)’র মাধ্যমে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য নয়া নীতিমালা চালু হয়েছিল, সেটি এখন প্রশ্নবিদ্ধ। কিছু অসৎ  সরকারি কর্মকর্তা- রাজনীতিবিদ ও বাঁধ ব্যবসায়ীর জন্য এই প্রক্রিয়া সমালোচিত হচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প, বাঁধের উপর সামান্য পরিমাণে মাটি দিয়ে বড় অংকের বিল উত্তোলন, আবার কোথাও কোথাও বাঁধ নির্মাণ না করে পানির জন্য অপেক্ষা করার মতো দুর্নীতি এখন হাওরজুড়ে। কৃষকদের সম্পৃক্ত না করে বাঁধের কাজের দায়িত্ব দেওয়া, আবার কোথাও কোথাও কাগজে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিতে কৃষকের নাম দিয়ে বাঁধের ব্যবসা করছে একটি শ্রেণির লোকজন। একারণে হাওররক্ষা বাঁধ এখন কৃষকদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জেলায় ৫২ টি বড় হাওরের ফসল অকাল বন্যার কবল থেকে রক্ষার জন্য এবার ৮১১ টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসির) মাধ্যমে বাঁধের কাজ হচ্ছে। এরমধ্যে ১৩০ টির মতো বড় ভাঙন রয়েছে। ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাঁধের কাজ শেষ করার কথা ছিল। ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ না হওয়ায় ৭ মার্চ পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। তাতেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভাঙনে কাজ শেষ হয় নি। কোথাও কোথাও দুয়েক দিন হয় বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে।

সরজমিনে শুক্রবার গিয়ে দেখা যায় শাল্লার বড় কালিকোটা হাওরের  ‘হাওয়ার খালের ‘ বড় ভাঙনে শুক্রবার পর্যন্ত কাজ হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ ভাগ। কৃষক নেতা অমরচাঁদ দাস ও বাঁধের পাশের  কাশিপুর গ্রামের আকমল মিয়া ও আব্বাছ মিয়া বললেন, কাজের সময়সীমা শেষ হলেও বাঁধ নিয়ে চিন্তার শেষ নেই। শুধু হাওয়ার খাল নয় পাশের ৭৩, ৭৪,৭৫,৭৬,৭৭, নং পিআইসির বাঁধের মাটির  কাজই শেষ হয়নি। আবার ছায়ার হাওরের ক্লোজার ১০০ নং পিআইসি খুবই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যেভাবে কাজ করছে পুরো মার্চ মাস কাজ করলেও বাঁধের কাজ শেষ হবে না। কাজের ধরণ দেখে বুঝা যাচ্ছে, তারা (পিআইসি’র লোকজন) মনে হয় পানির অপেক্ষা করছে।

শাল্লা উপজেলার কৃষক নেতা হাবিবুর রহমান হবিব বললেন, বাঁধের কাজে কৃষক নেই বললেই চলে, কোথাও কোথাও কৃষকের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। গত বছরের বহু বাঁধে সরকারি টাকা খরচ করার দরকার ছিলনা। তরা পরও গত বারের চেয়ে  বাধের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে পাউবোর ব্যবসার জন্য। বাঁধ দিলে হাওরের পরিবেশগত প্রতিক্রিয়া কী হবে তাও যাচাই করা হয় নি। বাঁধ নির্মাণে দলীয়করণ হচ্ছে। পুরাতন বাঁধকে নতুন করা হচ্ছে, এক্ষত্রেক্ণ টাকা লুটপাটের ধান্দাই বেশি। উপজেলার হাওয়ার খালের বড় ভাঙনে কাজ শেষ হতে আরও এক মাস সময় লাগবে। উপজেলার দাড়াইন নদীতে গোলা এসেছে, কালনীতে একই অবস্থা। এখনো বৃষ্টি হয় নি। বৃষ্টি হলে দেখতে দেখতে পিয়াইন ও সুরমা নদী পানিতে টই টুম্বুর হয়ে বাঁধে ধাক্কা দেবে। লাখো কৃষকের কপাল ভাঙবে। এই চিন্তা করছেন না সংশ্লিষ্টরা। ২০১৭ সালে আন্দোলন সংগ্রাম করে আমরা বাঁধের কাজে জমি মালিকদের সম্পৃক্ত করার নীতিমালা কার্যকর করেছিলাম। এটি এখন কেবল কাগজেই আছে। নানা কৌশলে এখানে মধ্যস্বত্বভোগীরা ভাগ বসিয়েছে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন চৌধুরী বললেন, এক হাজার মাটি দিয়ে বাঁধ করা যাবে না কোনটিই। বলা যায়, কিছু কিছু  বাঁধে অতিরিক্ত মাটি ধরে প্রাক্কলন হয়েছে, কোনটাতে প্রয়োজনের চেয়ে কম মাটি ধরে প্রাক্কলন হয়েছে। জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সব কয়টি বাঁধের প্রাক্কলন আবার যাচাই করার জন্য নিয়েছেন। উপজেলার হাওয়ার খালের মতো ঝুঁকিপূর্ণ ভাঙনে যে কাজ কম হয়েছে, এর ছবি তুলে আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে পাঠিয়েছি, আমি বলেছি এভাবে বাঁধের কাজ চললে হাওরের সর্বনাশ হয়ে যাবে। উপজেলায়  বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-অবহেলা এবং লুটপাটে ক্ষুব্দ কৃষকরা।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান বললেন, কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি কাজ বাস্তবায়ন করতে অপারগতা প্রকাশ করায় নতুন প্রকল্প কমিটি করা হয়েছে। ওখানে কাজ শেষ হতে বিলম্ব হচ্ছে। হাওরের সকল বড় ভাঙনে ডিজাইন লেবেল পর্যন্ত মাটি ফেলার কাজ শেষ পর্যায়ে জানি আমি, কোন ভাঙনে কাজ কম হয়ে থাকলে দ্রুত ডিজাইন লেবেল পর্যন্ত কাজ করা হবে। অপ্রয়োজনীয় কাজ হয় নি কোথাও বলে জানানি তিনি।

 

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১১:১০ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৭ মার্চ ২০২১

Sylheter Janapad |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
সম্পাদক ও প্রকাশক
গোবিন্দ লাল রায় সুমন
প্রধান কার্যালয়
আখরা মার্কেট (২য় তলা) হবিগঞ্জ রোড, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার
ফোন
+88 01618 320 606
+88 01719 149 849
Email
sjanapad@gmail.com