জানা যায়, দেড় মাস আগে মেঙ্গো টেকনোলজিস্ট’ এর মালিক মামুদুল হাসান সোহান শাল্লার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বায়োমেট্রিক হাজিরা’র জন্য জেকেটেকো ডিভাইস লাগানোর কাজ শুরু করেন। ৪০ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তারা ডিভাইস লাগানোর কাজ করেন। এসময় অনেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ডিভাইস লাগাতে বাধা দেন। তারা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে জানান, টাকা পাবার পর তারা ডিভাইস লাগাবেন। সরবরাহকারীরা শিক্ষকদের এই বাধা উপেক্ষা করেই ডিভাইস লাগান এবং শিক্ষকদের জানিয়ে দেন টাকা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পরে দিলেই চলবে। কয়েকজন শিক্ষক ২৬ হাজার টাকা’র ব্যবস্থা করে সরবরাহকারীদের ওই সময়েই দিয়ে দেন।
উপজেলার নোয়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গুরুপ্রসাদ দাস জানালেন, দেড় মাস আগে আমার বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক হাজিরার ডিভাইস লাগানো হয়েছে। আমি ২৬ হজার টাকা দিয়েছি। পরে শুনলাম এই ডিভাইসের মূল্য ১২ হাজার টাকা। আমার বিদ্যালয়ে ডিভাইস যেভাবে লাগানো হয়েছিল, এইভাবেই আছে, এটি কোন কাজ করছে না।
উপজেলার জাতগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনাদি তালুকদার জানালেন, তাঁর অনুপস্থিতে বিদ্যালয়ে ডিভাইস লাগানো হয়েছে। পরে ২৬ হাজার টাকা দেবার কথা বলায় তিনি বাজারে খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, এই ডিভাইসের মূল্য ১২ হাজার টাকা। এজন্য ডিভাইস খুলে ভক্সে রেখে দিয়েছেন, তাদেরকে ফেরৎ দেবার জন্য।
শাল্লা উপজেলার সুধন খল্লি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক লিটন চন্দ্র তালুকদার বলেন, ৪০ টি ডিভাইস লাগানো হলেও একটিও কাজ করছে না। সবগুলোই যেভাবে লাগানো হয়েছে, সেভাবেই আছে। আমরা পরে বিষয়টি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলামিন চৌধুরীকে জানিয়েছি। শেষে শিক্ষকরা সভা করে লিটন চন্দ্র তালুকদারকে আহ্বায়ক, অসীম কান্তি সিংহ ও সিদ্দিকুর রহমানকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে বায়োমেট্রিক হাজিরা ডিভাইস ক্রয় সংক্রান্ত কমিটি করেছেন। আমরা জানিয়ে দিয়েছি, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক ভাল ডিভাইস বাজার মূল্যে যার যার মতো করে ক্রয় করবে। ১২ হাজার টাকার ডিভাইস ২৬ হাজার টাকায় কিনবো না আমরা।
শিক্ষকরা জানান, মেঙ্গো টেকনোলজিস্ট’এর লোকজন ডিভাইস লাগানোর সময় একাধিক প্রধান শিক্ষক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে জানতে চেয়েছেন, তিনি বলেছেন ডিভাইস আপনাদের যেহেতু লাগানো লাগবে, তাদের কে দিয়েই লাগাতে পারেন।
শাল্লা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দ্বীন মোহাম্মদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ডিভাইস লাগানো নিয়ে কোন কোম্পানীর সঙ্গে কথা হয় নি আমার। কোন কোম্পানীর ডিভাইস লাগানোর জন্য বলি নি আমি। এটি আমার বিষয়ও নয়। ডিভাইস কাজ করছে কী-না, সেটি মনিটরিং করবে এই সংক্রান্ত জেলা কমিটি।
ডিভাইস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেঙ্গো টেকনোলিজষ্ট’এর মালিক মাহমুদুল হাসান জানালেন, এই ডিভাইসগুলোর বর্তমান মূল্য ১৮ হাজার টাকা। শাল্লায় যখন কিছু ডিভাইস লাগানো হয়, তখন বেশি দাম দিয়ে ডিভাইসগুলো কেনা হয়েছিল। ওখানে ডিভাইস লাগানোর কাজ বন্ধ রাখা রয়েছে। ৪০ টি ডিভাইস লাগানো হলেও ৩-৪ টির টাকা নেওয়া হয়েছে। ডিভাইসের মূল্য শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেই নির্ধারণ হবে। ওখানে বিদ্যুত, সোলার এবং কম্পিউটারও নেই। ল্যাপটপের প্রয়োজন হবে। অতিরিক্ত কিছু কাজও করতে হবে। এজন্য কিছু টাকা বেশি নির্ধারণ করা হয়েছিল।
Posted ৪:৩১ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০১৯
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad