হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বিপিএম-পিপিএম বলেছেন- একটি পরিবারকে ধ্বংস করতে মাদকের চেয়েও ভয়াবহ অবস্থানে স্মার্টফোন। এই স্মার্টফোনের কারণে কোমলমতী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাচ্ছে। বর্তমান যুগে এই স্মার্টফোনের উপকারিতার পাশাপাশি অপকারও রয়েছে যথেষ্ট। তবে সেটা কে কিভাবে গ্রহন করবে এটা তাদের ব্যাপার। বর্তমানে স্মার্টফোনে আসক্তি বাড়ছে। ফলে শিক্ষার্থীদের মূল্যবান সময় তাদের শিক্ষা জীবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।
তিনি মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) বানিয়াচংয়ের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দাঙ্গা,মাদক,ইভটিজিং ও বাল্যবিবাহের উপর রচনা প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণকালে এসব কথা বলেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বিপিএম-পিপিএম আরো বলেন-ইভটিজিং করে কেউ পার পাবেনা। দ্রুত তাকে আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে। কিছু মানুষ ধর্মের নামে অধর্ম কাজ করছে। এদের থেকে বিরত থাকা দরকার। পরিবারকে দাঙ্গামুক্ত রাখতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। দাঙ্গা প্রতিরোধে পুলিশ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এসময় তিনি সরকারের ৯৯৯ এর সেবা সম্পর্কে সবাইকে অবহিত করেন। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা তার সাফল্যের পিছনের গল্প উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরেন। পাশাপাশি তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার সব শিক্ষার্থীদের কাছে পৌছে দেন। রাস্তা-ঘাটে যদি কোনো বখাটে বিরক্ত করে তাহলে তাকে জানানোর জন্য তাদেরকে বলেন।
তিনি আরো বলেন-সমাজে বাল্যবিবাহ নামে একটি ব্যাপার আছে,যার মাধ্যমে মা-বাবা সন্তানের মঙ্গল করতে চেয়ে অমঙ্গল করে বসেন। সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করে এই বাল্যবিবাহ। অল্প বয়সী মেয়েকে বিয়ে দিলে তার ক্ষতি করা হয়-এসই সত্য অনেক মা-বাবা উপলব্ধি করতে পারেননা। গ্রামাঞ্চলে যেসব পরিবার অল্প বয়সী মেয়েদের বিয়ে দেয়,তাদের অশিক্ষা ও অজ্ঞতার সীমা নেই। পরবর্তীতে তৈরী হয় নানা জটিলতা।
তিনি বানিয়াচংয়ের সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,এল আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও ডা: ইলিয়াছ একাডেমিতে জনসচেতনামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। দাঙ্গা,মাদক,ইভটিজিং ও জঙ্গি বিরোধী রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনকারী সকলকে খাতা,পেন্সিলসহ আনুষঙ্গিক উপকরণ তুলে দেন।
পরে জেলা পুলিশের দাঙ্গা,মাদক ও জঙ্গি বিরোধী নানা শ্লোগান সম্বলিত ব্যানার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের হাতে তুলে দেন তিনি। পুলিশ সুপার এই কার্যক্রম সবকটি উপজেলায় পরিচালনা করে আসছেন। সকল মহলে সাড়া ফেলেছে তার এই মহতি উদ্যোগ। হবিগঞ্জে পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদানের পর থেকেই হবিগঞ্জসহ সব উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা সর্বক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন তিনি। বিশেষ করে দাঙ্গা-হাঙ্গামা রোধে পুলিশ সুপার জেলা প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে সভা,সমাবশেসহ নানা জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
এছাড়াও পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার পরিচয় দিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বিপিএম-পিপিএম। তার এমন কর্মকান্ডে অনেকেই তাকে মানবিক পুলিশ সুপার হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন।
এর আগে বানিয়াচং বড়বাজারস্থ সিএনজি স্টেশনে সিএনজি চালকের মাঝে জনসচেতনতামূলক বক্তব্য রাখেন। পাশাপাশি দাঙ্গা রোধে প্রত্যেক সিএনজি গাড়ির পিছনে জেলা পুলিশের নানা শ্লোগান সম্বলিত স্টিকার মেরে দেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বিপিএম-পিপিএম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন-বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদ মোবারক,বানিয়াচং (উত্তর) সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান খান,সাংবাদিক ফোরামের সেক্রেটারি রায়হান উদ্দিন সুমন প্রমুখ।
Posted ১১:৩০ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad