“বানিয়াচং হাসপাতালে বিগত কয়েক মাসে অনেক কুকুরে কামড়ানো রোগী এসেছে। কিন্তু হাসপাতালে কুকুরে কামড়ানোর কোন চিকিৎসা না পেয়ে রোগী নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছে স্বজনদের। প্রতিনিয়ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও বানিয়াচং হাসপাতালে এ রোগের কোন প্রতিরোধক নেই। গ্রামের মানুষ বেঁচে থাকার তাগিদে অপচিকিৎসার দিকে ঝুঁকে পড়ছ”
বানিয়াচং যেন কুকুরের শহরে পরিণত হয়েছে। যত্রতত্র কুকুরের আনাগোনায় পথচলা মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে সাধারণ মানুষের। কুকুরের প্রজননের সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই বানিয়াচং সদরসহ উপজেলাব্যাপী তাদের আনাগোনা বেড়ে যায়। এর সঙ্গে বাড়তি বিপদ হিসেবে সঙ্গযুক্ত হয়েছে কে বা কারা রাতের আধাঁরে অনেক কুকুর বানিয়াচঙ্গে ফেলে গেছে। ফলে চরম দূর্ভোগের মুখোমুখি হচ্ছে রাস্তায় চলা সাধারণ পথচারীদের। স্কুল পড়ুয়া কমলমতি শিশুরা স্কুলে যেতে যেমনি ভয় পাচ্ছে, তেমনি অভিভাবকরা সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে থাকছেন চরম আতঙ্কে।
রাতে বানিয়াচং সদরের প্রাণ কেন্দ্র শহীদ মিনারসহ এর আশপাশের চৌরাস্তায় দলে ২০-২৫ টি কুকুর এক সঙ্গে চলে। একাকি কোন পথচারী কিংবা মটর সাইকেল আরোহীকে দাবড়িয়ে কামড়ানোর চেষ্টা করে। মটর সাইকেল আরোহী অনেক সময় নিয়ন্ত্রন হারিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে বলে জানা যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুকুরের কামড়ে মানুষ অহরহ আহত হচ্ছে। বানিয়াচং হাসপাতালে বিগত কয়েক মাসে অনেক কুকুরে কামড়ানো রোগী এসেছে। কিন্তু হাসপাতালে কুকুরে কামড়ানোর কোন চিকিৎসা না পেয়ে রোগী নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছে স্বজনদের। প্রতিনিয়ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও বানিয়াচং হাসপাতালে এ রোগের কোন প্রতিরোধক নেই। এ ব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আব্দুল হামিদ বলেন, “কুকুরে কামড়ানোর ভ্যাকসিন এবং কুকুর বন্ধ্যাকরণ পদ্ধতি বা জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধক ইনজেকশনও বরাদ্ধ নাই। এগুলো জেলা সদর হাসপাতাল পাওয়া যায়। হয়তো সামনের সময়ে বরাদ্ধ পাওয়া যেতে পারে। কোন রোগী এলে আমরা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে দেই।”
গ্রামের মানুষ বেঁচে থাকার তাগিদে অপচিকিৎসার দিকে ঝুঁকে পড়ছে। ফলে খাপড়া পড়া, পানি পড়া, কলা পড়া, পিতলের থালা পড়া পিঠে লাগানোসহ বিভিন্ন কবিরাজি ঔষুধ সেবন করে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বানিয়াচংয়ের প্রধান প্রধান রাস্তা-ঘাট ছাড়াও প্রতিটি গ্রামে অসংখ্য কুকুর রয়েছে। এই কুকুরের বন্ধ্যাকরণ বা জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধক ইনজেকশন দেয়ার কথা থাকলেও সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
বিষয়টি নিয়ে বড়বাজারের চাউল ব্যবসায়ী মোঃ ফারুক মিয়া বলেন, “এলাকায় যে হারে কুকুরের উপদ্রুপ বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে মানুষ প্রতিনিয়ত ভয়ে রাস্তায় চলাচল করে। কিন্তু কুকুর নিধনে সরকারী কোন উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।”
এ বিষয়ে সরকারীভাবে উদ্যোগ এর পাশাপাশি বেসরকারী সংস্থাগুলোকে কুকুর নিধনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জোরদাবী জানিয়েছেন বানিয়াচংবাসী।
Posted ১১:৪৮ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট ২০১৯
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad