সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে পুড়ে গেছে ১০টি বসত ঘর। বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) রাত ১০ টার দিকে উপজেলার পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের টাইলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা।
জানা গেছে, টাইলা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মৃত মরম আলীর ছেলে বকুল মিয়ার ঘরে গ্যাস সিলিন্ডার লিক হয়ে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। আগুনের লেলিহান শিখা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে একে একে পুড়ে ছাই হয়ে যায় মুক্তিযোদ্ধা মৃত মরম আলীর ছেলে মাওলানা গুলজার আহমদ, মৃত জহুর আলীর ছেলে রহমান উল্লাহ, মৃত আফতর আলীর ছেলে আব্দুল মতিন ও ওয়াকিব মিয়া, মো.হুসমত আলীর ছেলে আব্দুল হাসিম, মৃত তইয়ব উল্লাহর ছেলে রছদ উল্লাহ, মৃত ছমেদ উল্লার ছেলে ফছন্দর উল্লাহসহ প্রায় ১০টি বসত ঘর।
সংবাদ পেয়ে দিরাই ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুণ নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগেই সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তবে সময়মতো ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোয় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে বেঁচে গেছে আশপাশের অনেক বাড়িঘর।
স্থানীয়রা জানান, রাত ১০ দিকে হঠাৎ আগুন দাউ দাউ করে জ্বলতে দেখে সবাই আগুন আগুন করে শোর চিৎকার শুরু করে। আমরা এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও কোনো কিছুই করতে পারিনি। শুধু দেখেছি সব স্বপ্ন পুড়ে যেতে।
এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্থ মো. বকুল মিয়া বলেন ,গ্যাস সিলিন্ডার লিক হওয়ার কারণে আমার ঘরে প্রথমে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। কিছু সময়ের মধ্যেই পাশের ঘরের আরো কমপক্ষে দশটি পরিবারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে নিমিষেই আগুনের লেলিহান শিখায় সবকিছু ধবংস হয়ে গেছে। আমি সরকার ও প্রশাসনের নিকট দাবী জানাই ক্ষতিগ্রস্থদের পূর্ণবাসনের ব্যবস্থা করার জন্য।
এ ব্যাপারে ঘটনাস্থলে উপস্থিত দিরাই ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নদীর জন্য পৌছতে কিছুটা বিলম্ব হলেও গ্রামবাসীর সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়েছি।
এ দিকে তাৎক্ষনিক খবর পেয়ে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক নুর হোসেন ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে পুড়ে যাওয়া ১০টি বসত ঘর পরিদর্শন করেন ও ক্ষতিগ্রস্থদের খোজ খবর নেন।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ প্রতিবেদককে বলেন পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের টাইলা গ্রামে গ্যাস সিলিন্ডার লিক হয়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় বেশ কয়েকটি বসত বাড়ি ও ধানের ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু অর্থসাহায্য প্রদান করা হয়। পরবর্তী দ্রুততম সময়ের মধ্যেই ঘর তৈরির জন্য টিন ও নগদ অর্থ সাহায্য পৌঁছে দেয়া হবে।