কানাইঘাটের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্তবর্তী সবচেয়ে উচু টিলায় শায়িত আছেন হজরত শাহজালালের ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম সফর সঙ্গী হজরত শাহ মিরাপিং (রহঃ)। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খাসিয়া-জৈন্তিয়া পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এ মোকামটিলা এক সময় আসামের অধিনের ছিলো। সেই হিসাবে উক্ত মাজার দেখাশুনার দায়িত্ব পালনে এক সময় ছিলো আসামের জেলা প্রশাসন।
এলাকাবাসী জানান, কানাইঘাটের লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউপির মোকামটিলা থেকে ভারতের জলালপুর পর্যন্ত যাতায়াতের জন্য একটি প্রাচিনতম রাস্তা রয়েছে। বৃটিশ সরকার বিভিন্ন সময় উক্ত রাস্তাটি সংস্কার করায় ভারত-বাংলাদেশের লোকজন উক্ত রাস্তাদিয়ে চলাফেরা সহ মাজার জিয়ারতে আসতো। কোন একদিন আসামের জেলা প্রশাসক মাজারটি দেখতে আসেন। এ সময় ভারতের করিমগঞ্জ থেকে আসা মনোহর আলী নামের এক ব্যক্তিকে মাজারের সংস্কার কাজে দেখে তিনি তাকে মাজারের খাদিম হিসাবে নিয়োগ দিয়ে মাজার এলাকার জঙ্গল পরিস্কারের দায়িত্ব প্রদান করেন। এরপর মনোহর আলীকে মোকাম টিলার পাশে ডাউকেরগুল নামক গ্রামে মুয়াজির হিসাবে বসতি স্থাপনের সুযোগ দিয়ে তাকে মাজারের খাদিম নিয়োগ দিয়েছিলেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, মোকাম টিলার চুল্লিতে (সমতল ভূমি থেকে প্রায় ৭ শত ফুট উপরে) রয়েছে হজরত শাহজালালের ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম সফরসঙ্গী হজরত শাহ মিরাপিং (রহঃ) মাজার। জানা যায়, হজরত শাহজালালের সাথে সিলেটে এসে কয়েকজন সফরসঙ্গী নিয়ে কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী উচু টিলা হিসাবে পরিচিত মোকামটিলায় অবস্থান নিয়েছিলেন। তার সফর সঙ্গীদের মধ্যে হজরত সুন্দর শাহ, হজরত সৈয়দ শাহ, হজরত সৈয়দ আবীর শাহ, হজরত সৈয়দ কাশিম আলী শাহ এর মাজার রয়েছে এখানে।
এছাড়া মোকামটিলা থেকে ভারতের জলালপুর পর্যন্ত যাতায়াতের জন্য একটি রাস্তা রয়েছে। বৃটিশ সরকার বিভিন্ন সময় রাস্তাটি সংস্কার করায় ভারত-বাংলাদেশের লোকজন মাজার জিয়ারতে আসতেন এ রাস্তা দিয়ে। আসামের জেলা প্রশাসক ভারতের করিমগঞ্জ থেকে আসা মনোহর আলী নামের এক ব্যক্তিকে মাজার সংস্কারের কাজে দেখে তাকে মাজারের খাদিম হিসাবে দায়িত্ব প্রদান করেন। পরবর্তীতে মনোহর আলীকে মোকাম টিলার পাশে ডাউকেরগুল নামক গ্রামে বসতি স্থাপনের সুযোগ দিয়ে মাজারের খাদিম নিয়োগ দিয়ে ছিলেন তিনি।
সেই থেকে মনোহর আলীর উত্তরসুরী হিসাবে মরহুম জোনাব আলী, মরহুম সিদ্দেক আলী, মরহুম মসদ আলী, মরহুম বায়েজিদ আলী। বর্তমানে মরহুম বায়েজিদ আলীর পুত্র মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মুছব্বির মাজারের খাদিমের দায়িত্বে রয়েছেন। তাছাড়া ডাউকেরগুল গ্রামের ফকির আব্দুস ছাত্তার নামের এক ব্যক্তি মাজারের হেফাজতকারী হিসাবে রয়েছেন। মাজারে একটি জামে মসজিদ, একটি অজু খানা, একটি মুসাফির খানা, একটি খাদিমের ঘর, একটি পানির ইন্দারা (কূয়া), এবং সৌচাগার সহ পানী ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা রয়েছে।
এছাড়া উক্ত মাজারের ৫ শত ফুট দক্ষিণে একটি গেইট ও ১২ শত দক্ষিণে আরেকটি গেইট রয়েছে। প্রতি বৎসর ভক্তনোরাগীরা মাজার জিয়ারত করতে আসেন। এছাড়া প্রতি বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক উরস ও প্রতি বৎসর মাঘ মাসের ১৫ তারিখ এ মাজারে বার্ষিক উরস হয় জানা গেছে।
Posted ৯:০৭ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৪ আগস্ট ২০১৯
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad