মোঃ আব্দুর রকিব, হবিগঞ্জ থেকে : হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ রেল স্টেশনের ভিক্ষুক রাজা মিয়া (৫০) এর মরদেহ তার গ্রামের বাড়িতে প্রেরণ করা হয়েছে। রাজা মিয়ার মৃতদেহ হবিগঞ্জ থেকে কুষ্টিয়ায় নেওয়ার মত কোন সামর্থ না থাকায় বিষয়টি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল রবিউল ইসলাম, পিপিএম এবং পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা, বিপিএম, পিপিএমকে অবহিত করা হয়। তাহাদের অনুমতিক্রমে অফিসার ইনচার্জ থানার অন্যান্য অফিসারদের সহায়তায় ১৫ হাজার টাকায় একটি এ্যাম্বুল্যান্সে করে একজন পুলিশ সদস্যসহ মৃতদেহ কুষ্টিয়ার কুমারখালিতে প্রেরণ করেন।
জানা যায়, বছর। প্রায় ৮/১০ বৎসর পূর্বে রাজা মিয়া শায়েস্তাগঞ্জ এলাকায় আসেন। ভিক্ষা করে শায়েস্তাগঞ্জ রেলস্টেশনের পাশে একচি ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করতেন। নিঃসঙ্গ অবস্থায় স্টেশনে বসেই ভিক্ষা করতেন। তার সাথে থাকতো একটি চিরকুট। চিরকুটে লেখা তার নাম রাজা মিয়া এবং একটি মোবাইল নং ০১৭২৪-৫২১৪০৭. তিনি অসুস্থ’ তা এই নাম্বারে জানিয়ে দেয়ার আবেদন।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভিক্ষুক রাজা মিয়া শায়েস্তাগঞ্জ স্টেশনের পাশে ঝুপড়ি ঘরে শ্বাস-কষ্ট জনিত কারনে অসুস্থ’ হয়ে পড়লে স্টেশনে থাকা তার প্রতিবেশী ভিক্ষুক তাকে সিএনজি করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে সেখানে তার মৃত্যু হয়। মৃত ভিক্ষুক রাজা মিয়ার কোন স্ব-জন না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুক আলীকে অবহিত করেন। তিনি থানার এসআই খোরশেদ আলমসহ হাসপাতালে গিয়ে মৃত রাজা মিয়ার কাছে থাকা চিরকুটের মোবাইল নাম্বারে ফোন দিলে কুষ্টিয়া থেকে তার স্ত্রী ফোন ধরেন। তার স্ত্রীকে মৃত্যুর সংবাদ জানানো হয়। তার স্ত্রী রাজা মিয়ার পূর্ব থেকে অসুস্থ্যতার বিষয়টি জানান ।
রাজা মিয়ার স্ত্রী জানান, মৃতদেহ হবিগঞ্জ থেকে কুষ্টিয়ায় নেওয়ার মত তাদের সামর্থ নাই। পরবর্তীতে অফিসার ইনচার্জ বিষয়টি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল রবিউল ইসলাম, পিপিএম এবং পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা, বিপিএম, পিপিএমকে অবহিত করেন। পুলিশ সুপারের অনুমতিক্রমে অফিসার ইনচার্জ মানবিক কারনে থানার অন্যান্য অফিসারদের নিকট থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়ে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি এ্যাম্বুল্যান্স রিজার্ভ করে থানার একজন পুলিশ সদস্যসহ মৃতদেহ কুষ্টিয়ার কুমারখালিতে প্রেরন করেন।
কুমারখালি থানা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে ওইদিন সকাল বেলা মৃতদেহ রাজা মিয়ার বাড়ীতে নিয়ে গেলে কুমারখালি থানা পুলিশের উপস্থিতিতে মৃতদেহ তার পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয় এবং দাফন কাফন সম্পন্ন হয়। হবিগঞ্জ পুলিশের মহানুভবতা ও সহযোগীতায় রাজা মিয়ার মত একজন অসহায় ভিক্ষুক সুদূর কুষ্টিয়ায় তার নিজ বাড়ীতে লাশ দাফনের সুযোগ পাওয়ায় তার পরিবার ও আত্মীয় স্বজন হবিগঞ্জ পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
Posted ১:১১ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad