ফাইল ছবি
সুনামগঞ্জে চাঞ্চল্যকর গলাকাটা লাশ উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে সদর থানা পুলিশের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার বিকেলে সুনামগঞ্জ সদর থানার হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্টিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করে মডেল থানার ওসি সহিদুর রহমান জানান, গত ২১ জুলাই সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর উপজেলার অচিন্তপুর এলাকায় সড়কের পাশের ডোবা থেকে এক যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় গলাকাটা গুজব ছিল ভয়াবহ পর্যায়ে এবং সেই সুবিধা কাজে লাগাতে চেয়েছে খুনিচক্র। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, ওই যুবকের বাড়ি জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নের আসামমোড়া গ্রামে। তার নাম অলিউর রহমান । সে ওই গ্রামের গোলাপ মিয়ার ছেলে। ঘটনার পর নিহতের পিতা ৬ জনকে আসামি করে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি মামলা দয়ের করেন। কিন্তু পুলিশ যখন খুনের রহস্য উদ্ঘাটনে অধিকতর তদন্ত নামে তখন একের পর এক চাঞ্চল্যকর সব তথ্য বেরিয়ে আসতে থাকে। ভাড়াটিয়া খুনিদের দিয়ে এই হত্যাকা- সংঘটিত হলেও এর মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন নিহতের ভগ্নিপতি ফখর উদ্দিন। এই পরিকল্পনায় শামিল ছিলেন নিহতের মা জয়ফুল বেগম ও স্থানীয় ইউপি সদস্য রওশন আলী। পুলিশ আরও জানায়, ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারি বালিশচাপা দিয়ে হত্যার পর লাশ পুকুরে ফেলে দেয় অলিউর এবং ওই মামলায় অলিউরসহ ভগ্নিপতি ফখর উদ্দিন ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের আসামি করা হয়। মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে। এর পর থেকেই শুরু হয় পারিবারিক কলহ। পথের কাঁটা অলিউরকে সরাতে পরিকল্পনা শুরু করেন মা, ভগ্নিপতি ও স্থানীয় এক ইউপি সদস্য। এর পর থেকে অলিউর বাড়ি ছেড়ে গাঢাকা দেয়। পরিবারের সঙ্গেও সব ধরণের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। কিছুদিন পরেই তার শ্বাশুড়িকে ফোন করে স্ত্রী হত্যায় সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে অলিউর। এতে মামলার অপরাপর আসামি ফখরসহ তার পরিবারের সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এই দ্বন্দ্বের জেরেই অলিউরকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে হত্যা করায় স্থানীয় দলকুতুব গ্রামের তার ভগ্নিপতি ফখর উদ্দিন। ভাড়াটে খুনি শহরের বড়পাড়ার বাসিন্দা এনাম ও কুতুবপুর গ্রামের রাজমিস্ত্রী মুহিতুল এবং খুনের পরিকল্পনাকারী ভগ্নিপতি দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া ইউনিয়নের ধলকুতুব গ্রামের ফখর উদ্দিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত তিনজনই হত্যাকা-ে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়নাল আবেদীন, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুর রহমান, সদর মডেল থানার ওসি তদন্ত মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, পরিদর্শক অপারেশ আহমদ মঞ্জুর মোরশেদ ও তদন্তকারী কর্মকর্তা জিন্নাতুল তালুকদার ও এস আই মোঃ জালাম উদ্দিন প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ আরো জানায়, চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকা-ের তদন্ত চলমান রয়েছে। হত্যাকা-ের সঙ্গে আর কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাদেরও গ্রেফতার করা হবে।
Posted ১১:১৮ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৫ আগস্ট ২০১৯
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad