কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ , সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় বহুল আলোচিত নুরুল ইসলাম মোড়লের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাসিঁর দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার দুপুর ১২টায় উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামবাসীর আয়োজনে একটি বিক্ষোভ মিছিল জেলা শহরে এসে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ট্রাফিক পয়েন্টে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় হাজারো নারী পূরুষ খনীদের গ্রেফতার ও ফাসিঁর দাবীতে শ্লোগান দিতে থাকেন।
নিহতের স্বজন মোঃ আব্দুর রাজ্জাকের সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য রাখেন, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও সুরমা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আমির হোসেন রেজা, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সার্জেন্ট মোঃ দুলাল মিয়া, সুরমা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ তাজুল ইসলাম, প্রবীন মুরুব্বী মোঃ রমজান আলী, জেলা তথ্য ও প্রযুক্তিলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ জাকির হোসেন শাহীন, সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ মোমিনুল ইসলাম মবিন, নিহতের ছোটভাই মোঃ আমির মিয়া, মোঃ বুরহান উদ্দিন প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দরা বলেন, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও সৈযদপুর গ্রামের বাসিন্দা কুখ্যাত ডাকাত সর্দার মোঃ আব্দুস ছত্তারের স্বজন সন্ত্রাসী মাদক ও ইয়াবা ব্যবসায়ী খুনীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শান্তি প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ সুপারের নিকট জোর দাবী জানান। মানববন্ধন শেষে পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান বরাবরে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য সৈয়দপুর গ্রামের নিহত নুরুল ইসলামের নিকট একই গ্রামের মোঃ আব্দুল মন্নানের ছেলে মোঃ শিমুল মিয়ার দোকান বাকির ৭০ টাকার পাওনা ছিল । সে ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামের ছত্তার বাহিনী ও মালেক বাহিনীর সন্ত্রাসী ইয়াবা ব্যবসায়ীরা গত ৬ জানুয়ারী দোকান বাকির ৭০ টাকা পাওনা বিষয়টি সালিশে নিস্পত্তির কথা বলে নুরুল ইসলাম মোড়লকে সালিশ বৈঠকের কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে গ্রামের রাস্তায় প্রকাশ্যে দিবালোক দাড়াঁলো অন্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে এবং এ সময় দাড়াঁলো অস্ত্রের আঘাতে নিহতের আরো ১০ জন স্বজন গুরুতর আহত হন। নুরুল ইসলাম মোড়লকে তাৎক্ষনিক সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে অবস্থার আরো অবনতি হওয়ায় ঘটনার দিন রাতেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর গত ৯ জানুয়ারী তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
এ ঘটনায় নিহতের স্বজন গাজী আবুল কালাম বাদি হয়ে গত ৭ জানুয়ারী একই গ্রামের প্রতিপক্ষ মৃত হাজী একরাম হোসেনের ছেলে মোঃ আব্দুল মালেক (৫০), তার সহোদর নাদির শাহ (৪৫), মৃত মফিজ আলীর ছেলে নুরুল ইসলাম (৫৫), মোঃ দুলাল মিয়া (৪২), মোঃ আব্দুল মালেকের ছেলে গফ্ফার মিয়া (২১), রবি মিয়া (২৬), সোহেল মিয়া (২৮), জুবায়ের (২০), নাদির শাহ’র ছেলে নাজমুল হোসেন (৩০), আব্দুস ছত্তারের ছেলে আলম মিয়া (৩৮), মন্টু মিয়ার ছেলে মণির মিয়া (২২), ছাদিরের ছেলে সামি মিয়া (২২), মৃত হাজী একরাম হোসেনের ছেলে ছাদির মিয়া (৪৫), আব্দুল মালেকের ছেলে লাদেন মিয়া (১৯), মৃত সাজু মিয়ার ছেলে আলীনুর (৩০) সহ এই ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাতনামা ১০ জনকে আসামী করে সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং জি আর ১১/২০ সদর।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আসামীরা দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকায় চোরকারবারী, মাদক, ইয়াবার ব্যবসা সহ অনেক অপকর্মের সাথে জড়িত থেকে এলাকার যুবসমাজকে ধবংসের বিষয়টি বুঝতে পেরেই নিহত নুরুল ইসলাম সব সময়ই এর প্রতিবাদ করে আসছিলেন। এরই জেরে প্রকাশ্যে দিবালোকে নুরুল ইসলামকে দাড়ালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এছাড়াও এই সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা ২০১৮ সালে নিহত নুরুল ইসলামের আপন বড়ভাই মোঃ সুুরুজ আলীকে ও একই জায়গাতে ডেকে নিয়ে শ্বাসরোদ্ধ করে হত্যা করে। তারা নিহতের এক বোনকে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষনের পর হত্যা করা হয় বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
Posted ১০:৩৫ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১৩ জানুয়ারি ২০২০
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad