জিয়াউল হক জিয়া, কুলাউড়া : কুলাউড়া উপজেলা যুবলীগের কমিটিতে ত্যাগি নেতারা উপেক্ষিত হওয়ায় তৃণমুলের নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। ত্যাগী ও আওয়ামী পরিবারের সদস্যদের মুল্যায়ন করা হয়নি বলে দাবি করছেন তৃণমুল নেতাকর্মীরা। কমিটিতে আর্থিক সুবিধা নিয়ে প্রবাসী ও বহিরাগতরা স্থান পেয়েছে কিন্তু ত্যাগিরা স্থান পায়নি বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তারা। যদিও নেতাকর্মীদের এসব অভিযোগ অস্বীকার করছেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
জানা যায়, সম্মেলনের ২ বছর পর কুলাউড়া উপজেলা যুবলীগের পুর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয় গত ২৮ নভেম্বর। মৌলভীবাজার জেলা যুবলীগের সভাপতি নাহিদ আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রেজাউর রহমান সুমন পুনাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেন। কমিটি ঘোষণার একমাস দশদিন অতিবাহিত হলেও বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না ঘোষিত কমিটির। উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা জুড়ে নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কোন কোন ইউনিয়ন কমিটির সভাপতিকে বাদ দিয়ে সাধারণ সম্পাদককে উপজেলা কমিটিতে বড় পদ দেয়া হয়েছে। আবার কোন কোন ইউনিয়নে সভাপতি সম্পাদককে বাদ দিয়ে সাধারণ সদস্যকে উপজেলা কমিটিতে রাখা হয়েছে। সিনিয়র জুনিয়র হিসেবে কোন মুল্যায়ন করা হয়নি। অভিযোগ রয়েছে কমিটিতে প্রবাসী, ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের লোকও স্থান পেয়েছে।
ভাটেরা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হেলাল সিদ্কিী বলেন, ইউনিয়নের সেক্রেটারিকে উপজেলা কমিটিতে পদ দেয়া হয়েছে। এতে পুরাতন ও পদ পদবী বঞ্চিত নেতাকর্মীদের সবার মনে ক্ষোভ বিরাজ করছে। উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক উসমান খান ফয়েজ বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে পায়ে হেটে গিয়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করেছি এবং নীতি আদর্শ ঠিক রেখে ছলেছি। আশা ছিলো আরও কিছুদিন নেতৃত্ব দেয়ার। যে কমিটি হয়েছে আমি মনে করি, যুবলীগের ইতিহাসে সবচেয়ে দুর্বল কমিটি। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মিরজান আলীর পুত্র জয়চন্ডি ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা আব্দুল মখলুদ জানান, ত্যাগী ও আওয়ামী পরিবারের নিবেদিত কর্মীরা কমিটিতে স্থান পায়নি। এতে সবাই ক্ষুব্ধ। একই ইউনিয়নের আরেক যুবলীগ নেতা রাসেল আহমদ জানান, ছাত্রলীগ থেকে যুবলীগে এসেছি। আমাকে কাউন্সিলার থেকে পরিকল্পিতভাবে বাদ দেয়া হয়। সভাপতি ও সম্পাদক তাদের পছন্দের লোককে কমিটিতে স্থান দিয়েছেন।
শরীফপুর ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা আলতাবুর রহমান জানান, যাদের টাকা আছে তারা কমিটিতে স্থান পেয়েছে। টাকাই যখন যোগ্যতার মাপকাটি তখন আর রাজনীতি করে লাভ কি? পৃথিমপাশা ইউনিয় যুবলীগের সভাপতি আব্দুল বাছিত জানান, বানিজ্য হলে ত্যাগীদের কি করার আছে? পৃথিমপাশা থেকে যে ছেলেকে কমিটিতে রাখা হয়েছে তাদের একজন ছাত্রশিবির নেতা ও অন্যজন ছাত্রদল নেতা। এরা কিভাবে স্থান পেলো? কমিটি গঠনকালে নেত্রীর নির্দেশ উপেক্ষিত হয়েছে। টাকার কাছে বিলীন হয়েছে নীতি আদর্শ। কর্মধা ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা আব্দুল বাছিত জানান, যারা স্থান পাওয়ার তারা পায়নি। সৌদিআরব প্রবাসী রুহুল নামক একজন কমিটিতে স্থান পেয়েছে।
দলীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে কুলাউড়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম সবুজ জানান, যারা প্রকৃত যুবলীগ করে তাদের মুল্যায়ন করেছি। যাদের মুল্যায়ন করা সম্ভব হয়নি তাদের পরবর্তীতে করা হবে। আর্থিক লেনদেনের কোন ভিত্তি নেই। এটা কেউ প্রমাণ করতে পারবে না।
উপজেলা যুবলীগ সভাপতি আব্দুস সহিদ জানান, আমরা সবাইকে মূল্যায়ন করার চেষ্টা করেছি। পদ পদবি প্রতিটি ইউনিয়নে বন্টন করে দিয়েছি। কমিটি গঠনকালে উপজেলা আওয়ামী লীগর সভাপতি সেক্রেটারিসহ সকলের মতামত ও সমন্বয়ের ভিত্তিতে করেছি।
Posted ৯:১৯ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৮ জানুয়ারি ২০২০
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad