মোঃ আব্দুর রকিব, হবিগঞ্জ থেকে : বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস মহামারীর প্রভাবে বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রা হুমকির সম্মুখীন। মারাত্মক আর্থিক সংকট ও চরম দুর্দশায় রয়েছেন কর্মহীন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। এসব বিষয় বিবেচনা করে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত এনজিও ঋণের কিস্তি শিথিল করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি।
দেশের এনজিও বা ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছেন সেসব প্রতিষ্ঠান, ৩০জুন পর্যন্ত কোনো কিস্তি জোর করে আদায় করা যাবে না। তবে কেউ স্বেচ্ছায় দিলে নিতে পারবেন উল্লেখ করে এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সংস্থাটি। তবে এসব প্রজ্ঞাপনের তোয়াক্কা না করে শায়েস্তাগঞ্জে, হবিগঞ্জ উন্নয়ন সংস্থা, নিশান, বিডিএস, আশা, টিএমএসএস, ব্র্যাক, গ্রামীণ ব্যাংক, এর মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা ঋণ পরিশোধের জন্য ঋণগ্রহীতাদের চাপ প্রয়োগ করছেন।
জানা যায়, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার অলিপুর, সুতাং, ব্রাক্ষণডুরা, জগতপুর, শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকাসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলে গ্রাহকদেরকে কিস্তির টাকা পরিশোধ করার জন্য দোকানে ও বাড়িতে গিয়ে দিয়ে চাপ দিচ্ছেন এসব এনজিও সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারা। আবার কেউ কেউ সময়মত কিস্তি প্রদান করার জন্য ফোন করে তাগদা দিচ্ছেন।
উপজেলার নুরপুর ইউনিয়নের সুরাবই গ্রামের সৈয়দ ঝিনুক আহমেদ বলেন, স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন ব্যবসা করে সংসার খরচ ও সপ্তাহে ১৫০০ টাকা এনজিও ঋণের কিস্তি পরিশোধ করেছি। প্রায় দুই মাস করোনাভাইরাসের কারণে এনজিও’র কিস্তি বন্ধ ছিল। কিন্তু ঈদের পর থেকে এনজিও সংস্থা আশা কিস্তির টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দেওয়া শুরু করেছে।
অলিপুরের টেলিকম ব্যবসায়ী সুজন মিয়া বলেন, টানা লকডাউনের জন্য দোকান খুলতে পারিনাই এ কারণে আমাদের আয়-রোজগার কমে গেছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকদিন ধরে হবিগঞ্জ উন্নয়ন সংস্থার কর্মীরা ঋণের কিস্তির জন্য দোকানে এসে চাপ প্রদান করছেন।
শায়েস্তাগঞ্জ ইউনিয়নের জগতপুর গ্রামের সোয়েব মিয়া জানান, শায়েস্তাগঞ্জ এর বিডিএস একটি সংস্থা থেকে নিয়মিত কিস্তি দেয়ার জন্য তাগদা দিচ্ছেন, যা আমার মানসিক চাপ বাড়িয়ে দিচ্ছে, কি করব ভেবে উঠতে পারছিনা।
এ বিষয়ে এনজিও সংস্থা আশা শায়েস্তাগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক জিয়াউল করিম বলেন, আমাদের মাঠকর্মীরা গ্রাহকদের কাছে যাচ্ছে যারা সেচ্ছায় কিস্তি দেন তাদের কিস্তি নিচ্ছি। কোন প্রকারের চাপ সৃষ্টি করা হয় না। আমাদের শাখার প্রায় আড়াই হাজার গ্রাহক রয়েছেন করোনা পরিস্থিতিতে অর্ধেক গ্রাহকও কিস্তি দেন নাই।
এ ব্যাপারে এনজিও সংস্থা টিএমএসএস শায়েস্তাগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলাম বলেন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী আমাদের কার্যক্রম চলছে। কোন জোড় জবরদস্তি করা হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুমি আক্তার বলেন এ বিষয়ে কোন অভিযোগ এখনো পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে এনজিও গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ না মানলে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।
Posted ১২:৫৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১১ জুন ২০২০
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad