পি সি দাশ পীযূষ, শাল্লা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নবনির্মিত ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি। প্রায় ২ কোটি ৫১ লাখ টাকা ব্যয়ে শাল্লার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কাজ ২০১৬ সালে শুরু হয়। ২০১৮ সালে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনও কাজ শেষ হয়নি। এখনও প্রায় ২০ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে। অথচ ২০১৮ সালে কাজ অর্ধেক বাকী রেখেই প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে উদ্বোধন করানো হয় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন।
এ নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় বেশ কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে রোববার সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত সরেজমিনে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (বাজেট) মো. মমতাজ উদ্দিন এনডিসি। এসময় উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী মো. ফিরোজ হাসান, হুমায়রা বিনতে রেজা, শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মোক্তাদির হোসেন স্থানীয় সংবাদকর্মী সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ।
তদন্ত শেষে বিকালে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (বাজেট) মো: মমতাজ উদ্দিন এনডিসি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, এখনও ২০ শতাংশ কাজ বাকী রয়েছে। অথচ ২০১৮ সালে কাজ অর্ধেক বাকী রেখেই প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে মাধ্যমে এটির উদ্বোধন করা হয়েছে। পরে আবারও সময় বৃদ্ধি করা হয়। তার পর ও কাজ সমাপ্ত হয়নি। তিনি বলেন সরকারী অর্থ ব্যয় সঠিক ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে করতে হবে। যে বা যারা সরকারী অর্থের অপচয় করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা শীঘ্রই তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে দাখিল করবো।
শাল্লা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশিত হলে গত বছরের শেষ দিকে বিষয়টি তদন্তের জন্য জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়। কমিটির প্রধান করা হয় স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এমরান হোসেনকে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, ঠিকাদার ও কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে শাল্লা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণে বিলম্ব হচ্ছে। সেই তদন্তে এই ফায়ার সার্ভিস ৪০ ভাগ নির্মাণ হওয়ার পর ৮০ ভাগ বিল ঠিকাদারকে দেওয়া হয়। স্টেশনটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই কাজ শেষ হয়েছে দাবি করে ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করা হয়।
জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে হওয়া তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রদানের পর ১৫৬ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণের প্রকল্প পরিচালক রেজওয়ানুল হুদা সরেজমিনে দেখতে এসে বলেন, কাজটি দেখে আমারও মনে প্রশ্ন জেগেছে, এতগুলো ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কাজ হচ্ছে, এটি কেন নির্মাণের আগেই উদ্বোধন করতে হলো।
Posted ১:৩০ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad