পি সি দাশ, শাল্লা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের হাওর বেষ্টিত শাল্লা উপজেলায় ঝড়-বৃষ্টি- আর বজ্র ধব্বনি উপেক্ষা করে পাকা ধান কাটতে ব্যস্তদিন কাটাচ্ছে কৃষকরা। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় উপজেলার বৃহৎ ছায়ার হাওরে ধান কাটার দৃশ্য দেখে মনে হল কেউ কারো দিকে নজর দেয়ার সময় নাই।
প্রশাসন জানিয়েছেন ২৭ শে এপ্রিল উজান থেকে নেমে আসে পাহাড়ি ঢলে আগাম বন্যার পূর্বাভাস রয়েছে। সেই খবরে কৃষক/কৃষাণীরা মরিয়া হয়ে তাদের এক মাত্র বোরো ফসল ঘরে তুলার কাজে দিন রাত শ্রম দিচ্ছে। ছায়ার হাওর পাড়ের উজানগাঁও গ্রামের বেলাল মিয়া বলেন, উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের এক কৃষক বজ্রপাতে মারা গেছে। এছাড়াও প্রতি দিন ঝড় বৃষ্টি লেগে ই আছে। এ সবের মাঝে জীবনবাজি রেখে ফসল কাটাছি।
মামুদনগরের কৃষক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন। ফসল ভাল হয়েছে। মানুষ দিন রাত পরিশ্রম করে ধান কাটাছে। তিনি বলেন করোনা প্রভাবে বাহিরের জেলার কৃষি শ্রমিক কম এসে। তবে এলাকার বাহিরে থাকা স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা ফসল তুলার কাজে অংশগ্রহণ করায় এবার কৃষকরা বাঁচাবে। আর মাত্র সপ্তাহ দশ দিন সময় পেলে ফসল কাটা শেষ হবে বলে তিনি জানান।
আনন্দপুর গ্রামের কৃষক কুমেদ দাস, অলক রায়, অঞ্জন দাস, শুধাংশু দাস, রতীন্দ্র রায়, পান্ডব দাস,অজিত রায় বলেন ধান কাটা প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে। দিন ভাল থাকলে এক সপ্তাহের মধ্যে কাটা শেষ হয়ে যাবে । তবে তারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন সরকার দেশে বহু কাজ করছে, কিন্তু কৃষকের এক মাত্র বোরো ফসল বাড়ি নেওয়ার জন্য হাওরের রাস্তাগুলোর কাজ না করায় কৃষকের দুর্ভোগের অন্তনেই।
হাওরের পাকাধানের শীষ দোলছে। ঝড়বৃষ্টি ও অকাল বন্যার শঙ্কাসহ করোনা ভাইরাসের প্রভাবে নিয়ে বাঁচার লড়াইয়ে থেমে নেই হাওর পাড়ের কৃষকরা । ভান্ডাবিল হাওরের হবিবপুর গ্রামের কৃষক মন্জু দাস, মনোরঞ্জন দাস, হরিনগর গ্রামের শিমুল দাস হরলাল দাস, জানায় হাওরের জমির ফসল পেকে গেছে, তবে ধান কাটছি করোনার ভয়ে শ্রমিকের কিছুটা সংকট হয়েছে। দিনের অবস্থা ভাল থাকলে আগামী ৮/১০ দিনের মধ্যে ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে।
এনিয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আল আমিন চৌধুরী বলেন এখন কৃষি শ্রমিকের তেমন কোন সংকট নেই। এলাকার মানুষ যেভাবে হাওরে নেমেছে অল্প কয়েক দিনের মধ্যে ই ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে। তিনি বলেন ফসল ভাল হয়েছে আল্লাহর রহমতে ৭/৮ দিন ভাল থাকলে কৃষকের সোনার ফসল গোলায় উটবে। তবে তিনি উল্লেখ করেন ঢাকা নারায়নগঞ্জ, গাজীপুর সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মানুষজন নিয়ে করোনা আতংকের মধ্যে রয়েছে এলাকার কৃষকরা।