সুমন আহমেদ বিজয়, লাখাই থেকেঃ ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য সালাম, রফিক, জব্বার, ও বরকত সহ আর ও নাম না জানা অনেকেই তাদের জীবন দিতে হয়। তাদের জীবন দিয়ে বাংলায় কথা বলার অধিকার আদায়ের জন্য তারা শহীদ হন।
ভাষা আন্দোলনের শহীদ স্মরণে প্রতি বছর পালিত হয় একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। সারা দেশের ন্যায় লাখাই উপজেলায় প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হলে ও লাখাই উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার।
অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকার কারনে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস থেকে। লাখাই উপজেলার ৭২ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৭১ টি বিদ্যালয়ে এবং ১৪ টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০ টি তেই নেই মায়ের ভাষা বাংলা ভাষার জন্য জীবনকারী শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শহীদ মিনার।
২১ শে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এলে বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার না থাকায় অস্হায়ী ভাবে নির্মিত শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে চলে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। তে করে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য ও ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন থেকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে, লাখাই উপজেলার ৬নং বুল্লা ইউনিয়নের মাদনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়া অন্য কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই শহীদ মিনার। বুল্লা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র ইমরান আহমেদ বলেন আমাদের বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই এবং শহীদ মিনারের ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞান আমার নেই।
লাখাই উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আরিছ মিয়া আমাদের প্রতিনিধি কে জানান,লাখাই উপজেলার মোট ৭২ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে একমাত্র মাদনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে।তিনি আর ও বলেন কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে প্রতিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
লাখাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জীবন কুমার দে এর সাথে আমাদের প্রতিনিধি আলাপকালে তিনি মটোফোনে জানায় যে,লাখাই উপজেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ে স্কুল কলেজ মাদ্রাসা সহ মোট ১৪ টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪ টি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকলে ও ১০ টিতেই নেই শহীদ মিনার, তবে সদিচ্ছা নিয়ে প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান নিজস্ব উদ্যোগে শহীদ মিনার স্হাপন করা সম্ভব এতে করে শিক্ষার্থীরা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারবে।
এব্যাপারে লাখাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) সঞ্জিতা কর্মকার বলেন শহীদ মিনার স্হাপনে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মাতৃভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য ও গুরুত্ব অনুধাবনে শহীদ মিনার স্হাপনে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা রাখে।
ইতিমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্হাপনের লক্ষে বিভিন্ন প্রদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে এবং তা বাস্তবায়নের কাজ ও শুরু হয়েছে।
তিনি আর ও জানান পর্যায়ক্রমে উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্হাপনের আওতায় আনা হবে।