সুমন আহমেদ বিজয়, লাখাই থেকে : লাখাইয়ে উপজেলা চত্বরের প্রাণি সম্পদ অফিস প্রাঙ্গনে কথিত মাজার নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়।একনজর কথিত মাজার দেখতে কৌতুহল বশে বিড় করছে স্হানীয় লোকজন। কেউ বলছে এখানে পূর্বে কোন মাজার ছিল না আবার কেউ বলছে অনেক বছর আগে এখানে একটা গাছ ছিল সেই গাছের নিচে মাজার ছিল।এ নিয়ে চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক সহ উপজেলার স্হানীয় জনগণের মধ্যে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়।
স্হানীয় সূত্রে জানা যায় সম্প্রতি লাখাই উপজেলার বামৈ পূর্ব গ্রামের জনৈক রেনু পাগলা নামক এক ব্যক্তি উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের বাউন্ডারির ভিতরের অফিস সংলগ্ন স্থানে মাটি দিয়ে মনগড়াভাবে কথিত মাজার তৈরি করে লাল ও সবুজ নিশান টানিয়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে মাজারের কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন।
এতে সেবা প্রার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নের উদ্ভব হচ্ছে প্রতিনিয়ত।অনেকে কৌতুহলী হয়ে সেখানে ভিড় জমাচ্ছে। এতে করে দপ্তরের স্বাভাবিক কার্যক্রমের বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।
প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায় কয়েকদিন যাবত উপজেলার বামৈ পূর্ব গ্রামের জনৈক রেনু পাগলা নামে এক ব্যক্তি মাঝে মধ্যে এসে মাটির তৈরি এই মাজারে মোমবাতি জ্বালিয়ে তার কর্মকাণ্ড চালায়। এ কাজ থেকে তাকে বিরত রাখার চেষ্টা করলে সে মারমুখী আচরণ করে। এমনকি কার্যালয়ের গেইট বন্ধ করে দিলে গেটের বাহির থেকে সে গেটে ছুরিকাঘাত করে। এতে করে গেইটের স্থানে স্থানে ছিদ্র হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডাক্তার মোঃ শাহাদাত হোসেন জানান, আমি নতুন এসেছি এসে বিষয়টি লক্ষ্য করে উপজেলা নির্বাহি অফিসার মহোদয় কে অবহিত করেছি।
তিনি আরো জানান এই অনধিকার প্রবেশ কারী ব্যক্তি মাঝে মধ্যে আসে এবং কথিত মাজারে মোমবাতি জ্বালিয়ে অবস্থান করে। এ অবস্থায় বাধা দিলে সে মারমুখী আচরণ করে এমনকি কোন কোন সময় সে ছুরি নিয়ে ধাওয়া করে। কয়েকবার অফিসের লোকজন এসব নিশান এবং ঢাকনা ছুঁড়ে ফেলে দিলেও সে আবারও এটি তৈরি করে।
বামৈ পূর্ব গ্রামের স্হানীয় আলাই মিয়া নামের এক ব্যক্তি বলেন রেনু পাগলা প্রায় ১৫ থেকে ২০ বছর যাবত আধ্যাতিক জগতে আছে এবং তার প্রায় দুইটি পুকুর সহ ২০ থেকে ২৫ বিঘা জমি আছে।
চার সন্তানের জনক রেনু পাগলা বলেন উপজেলা চত্বরের প্রাণী সম্পদ অফিসে সামনে অনেক বছর আগে একটা গাছ ছিল সেই গাছের নিচের মোমবাতি জালিয়ে মাজার দাবী করে আসছিলেন এক দরবেশ। সেই ঘঠনার সূত্র ধরেই তার সাত বছর বয়স থেকেই অদ্য পর্যন্ত প্রতিনিয়ত সকালে ও রাতে মোমবাতি ও আগর বাতি জালিয়ে আসছেন।
প্রতি বছর ২১ই ফাল্গুন বাৎসরিক ঔরস পালন করে আসছে এবং বাড়ী থেকে তবারক রান্না করে সে ঐ কথিত মাজারের সামনে তবারক বিতরণ করত বলে আমাদের প্রতিনিধিকে তিনি জানান।
মাজার ভক্ত রেনু মিয়া কে বাউল সাধক শাহ সুফি শেখ শফিক চান চিশতি( রহঃ) ওসিয়ত করেছিলেন যত বাধা আসুক না কেন কথিত মাজার থেকে যেন না সরে যায় এবং এই কথিত মাজারের যাবতীয় রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য তিনি তাকে নির্দেশ দেন, সেই ওসিয়ত মোতাবেক ২৭ বছর যাবত এই কথিত মাজারের রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছেন বলে তিনি আর ও জানান।
লাখাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুসিকান্ত হাজং বলেন যেহেতু উপজেলা পরিষদের জায়গা সেহেতু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এডভোকেট মোঃ মুশফিউল আলম আজাদ মহোদয়ের সাথে আলাপ করে আগামী আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় কথিত মাজার সম্পর্কে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।