বুধবার ২৯শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

মুক্তিযুদ্ধে পাক-বাহিনীর হাতে কানাইঘাটে গণহত্যায় শহীদ ২২জনের পরিবার সরকারী সুবিধা বঞ্চিত

মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯     165 ভিউ
মুক্তিযুদ্ধে পাক-বাহিনীর হাতে কানাইঘাটে গণহত্যায় শহীদ ২২জনের পরিবার সরকারী সুবিধা বঞ্চিত

আলিম উদ্দিন, কানাইঘাট প্রতিনিধি : ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে কানাইঘাটের প্রায় সাড়ে ৪’শ মুক্তিযোদ্ধা অংশ নিয়েছিল। পাক হানাদারদের সাথে সম্মূখযুদ্ধে প্রায় দেড় শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এরমধ্যে পাক বাহিনীর হাতে গণহত্যায় শহীদ হওয়া কানাইঘাটের মালিগ্রামের ২২ জন গ্রামবাসীর পরিবার পরিজনরা আজও রয়েছেন সরকারের সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত। গণহত্যায় শহীদ হওয়া এসব পরিবারে বিরাজ করছে মারাক্তক অভাব অনটন। এসব পরিবারের পক্ষথেকে দাবী উঠেছে তাদেরকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করে ভাতা প্রদানের।

মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে কানাইঘাটের বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে মোকাবিলা করেছিলো ১৯৭১ সালের ভাদ্র মাসের ১৫ তারিখ। তখন কানাইঘাটের সর্বত্র ঢুকে পড়েছে পাকিস্থানী হায়েনারা। পাক বাহিনীর ক্যাপটিন বশারতের নেতৃত্বে একটি হানাদার বাহিনী অবস্থান নেয় কানাইঘাট ডাক বাংলোয়। এখান থেকে ক্যাপটিন বশারত মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমন করার নানা কৌশল অবলম্বন করে। অপরদিকে কানাইঘাটের মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদারদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে তাদের বিভিন্ন কৌশলের অংশ হিসাবে ভেঙ্গে ফেলে দরবস্ত-কানাইঘাট সড়কের উপর নির্মিত বিষ্ণুপুর ব্রীজ এবং ঐদিন আক্রমন চালিয়ে হত্যাকরে স্থানীয় ৩ জন আলবদর রাজাকারকে। এতে ক্যাপটিন বশারত মালিগ্রামের মুক্তিযোদ্ধাদের উপর ক্ষীপ্ত হয়ে (১৯৭১ সালের ৩১শে আগষ্ট) সেই ৩ রাজাকারকে হত্যার প্রতিশোধ নিতে ছুটে যায় উপজেলার ৫নং বড়চতুল ইউপির মালিগ্রামে। সেখান থেকে ২৪ জন গ্রামবাসীকে ধরে এনে বিষ্ণুপুর খালের পারে তাদেরকে দিয়ে গণকবর খনন করিয়ে জীবন্ত ১৯ জনকে মাটি চাপা দেয় বিষ্ণুপুর খালের পারে।

এছাড়া বাকী ৩ জনকে গুলি করে হত্যা করে মাটি চাপা দেয় একটু অদুরেই। পরে ক্যাপটিন বশারতের নেতৃত্বে পাকিস্থানী হায়নারা মালিগ্রামে গিয়ে আরো ৭৪টি বসতঘর পুড়িয়ে দেয়। এছাড়া ঐ গ্রামের নিরীহ জনসাধারণের উপর চালায় পাশবিক নির্যাতন। ১৯৭১ সালের ১লা সেপ্টেম্বর পাক বাহিনীর জল্লাদ ক্যাপ্টিন বশারতের হাতে কানাইঘাটের মালিগ্রামের শাহাদাৎ বরণকারীরা হলেন- ৫নং বড়চতুল ইউপির মালিগ্রামের বতু মিয়া, চান্দ আলী, খলিলুর রহমান, আব্দুল ওহাব, আব্দুল কাদির, আব্দুল মুতলিব, জহির আলী, তবারক আলী, ইসরাক আলী, মোবারক আলী, তুতা মিয়া, শওকত আলী, আব্দুল খালিক, আব্দুর রশিদ, শামছুল হক, খুরশেদ আলী, ছিফত উল্লাহ, ওয়াজি উল্লাহ, কনু মিয়া, খুরবান আলী, আরব আলী, ইউসুফ আলী।

এদিকে কানাইঘাাটের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নজমুল হক ও নুরুল হক জানান, ১৯৭১ সালে পাকবাহীনি এদেরকে বাড়ী থেকে ধরে এনে গণকবর দিয়েছিল। তাই তারা মুক্তিযোদ্ধার আওতায় পড়েনা। তারা বলেন ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু উক্ত গণকবরে গণহত্যায় শাহাদাৎ বরণকারী ২২ জনের পরিবারকে ২ হাজার টাকা করে আর্থিক সহযোগীতা দিয়েছিলেন এরপর তাদের পরিবার পরিজনরা সরকারী ভাবে আর কোন সহযোগীতা পায়নী।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১:১৭ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯

Sylheter Janapad |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
সম্পাদক ও প্রকাশক
গোবিন্দ লাল রায় সুমন
প্রধান কার্যালয়
আখরা মার্কেট (২য় তলা) হবিগঞ্জ রোড, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার
ফোন
+88 01618 320 606
+88 01719 149 849
Email
sjanapad@gmail.com