ছবি- সিলেটের জনপদ
বানিয়াচং উপজেলার ১৫নং পৈলারকান্দি ইউনিয়নের কুমড়ী-দুরগাহপুর ও ফেরেঙ্গিটিলা গ্রামের মাঝখানে খালের উপর নির্মিত ব্রিজটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ব্রিজের পূর্ব পাড়ে অবস্থিত কুমড়ী-দুরগাহপুর বাজার। বিকল্প পথ না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই কয়েক গ্রামের মানুষ এই ব্রিজটির উপর দিয়ে বাজারে আসা-যাওয়া করতে হয়। ব্রিজের উপর দিয়ে যাতায়াত করা যেমন ঝুঁকিপূর্ণ ঠিক তেমনি বর্ষাকালে ব্রিজের নিজ দিয়ে নৌকা চলাচলও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ব্রিজটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়ে বড় ধরণের কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। বিশেষ করে ফেরেঙ্গিটিলার স্কুল-মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের র্ঝুঁকিপূর্ণ এই ব্রিজ দিয়েই যাতায়াত করতে হয়।
জানা গেছে, কুমড়ী-দুরগাহপুর ও ফেরেঙ্গিটিলা গ্রামের মাঝখানে খালের উপর ২৫ বছর আগে ব্রিজটি নির্মিত হয়। এখন থেকে প্রায় ১০ বছর আগে ব্রিজের দুই পাশ থেকে মাঠি সরে যায়। এরপর থেকেই মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ শুরু হয়। বর্ষাকাল আসলে প্রতিবছর ব্রিজে ওঠার জন্য দুই মাথায় বাঁশের সাঁকো তৈরি করতে হয়। এভাবেই চলছে ১০ বছর ধরে। আর বিগত ৩ বছর ধরে ব্রিজের অবস্থা একেবারে নড়বড়ে।
এনিয়ে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘নির্বাচন আসলে সবাই ব্রিজটি নতুন করে নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু ভোটের পর আর কেউ খবর রাখেন না।’ ফেরেঙ্গিটিলার বাসিন্দা ডা. আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমরা খুব ঝুঁকি নিয়ে এই ব্রিজটি দিয়ে যাতায়াত করি। এটার অবস্থা খুবই খারাপ। যেকোনো সময় ভেঙে পড়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।এআমরা অনেক দিন ধরেই পুরাতন ব্রিজটি ভেঙে আরেকটি নতুন ব্রিজ করার দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’ দুরগাহপুরের বাসিন্দা ও হবিগঞ্জ জজকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট আইয়ুব আল আনসারী বলেন, ‘ব্রিজটি এখন এলাকার মানুষের জন্য মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। যেকোনো সময় অনাকাঙ্খিত কোনো ঘটনা ঘটতে পারে’
সংরক্ষিত আসনের মহিলা মেম্বার রাশেদা বেগম বলেন, ‘ব্রিজটি আসলেই ঝুঁকিপূর্ণ, স্থানীয় সমাজ সেবক কাইয়ুম মোহাম্মদের অনুদানের টাকা দিয়ে একবার ব্রিজটির দুইপাশে মাটি ভরাট করা হয়েছি, বর্ষাতে মাটিগুলো সরে গেছে পরে ব্রিজে ওঠার জন্য আমি একটা ঘাটলা করে দিয়েছি, আমার পক্ষেতো আর এর বেশি কিছু করা সম্ভব না তবে, ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে ’ এবিষয়ে কথা বললে-বানিয়াচং উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনের পর আমাদের নতুন পরিষদ গঠিত হয়েছে, ব্রিজটি আমি দেখেছ। যেকোনো সময় ব্রিজটি ভেঙে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এটা সত্য, কিভাবে দ্রুত ব্রিজটি ভেঙে এখানে নতুন করে আরেকটি ব্রিজ করা যায় এনিয়ে আমি তৎপরতা চালাচ্ছি ’
ব্রিজটির বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সংসদ সদস্য এডভোকেট আব্দুল মজিদ খান জানান ‘ব্রিজটির বিষয়ে আমিও অবহিত আছি, এটা মূলত দুই গ্রামের মানুষের যাতায়াতের জন্য মাঝখানে খালের উপর নির্মিত, এটা নিয়ে আমি কাজ করতেছ ।’ তিনি আরোও বলেন, ‘আমরা ওই এলাকায় বেশ কিছু কাজ করেছি, বিশেষ করে কুমড়ী-দুরগাহপুর বাজার থেকে বাল্লা পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার পাকা রাস্তা নির্মাণ করেছি, যার ফলে শুকনা মৌসুমে হবিগঞ্জে যাতায়াত তাদের জন্য অনেক সহজ হয়েছে, এখন ফেরেঙ্গিটিলা পর্যন্ত আমরা রাস্তার অন্তর্ভুক্ত করেছি, এটা পাস হয়ে গেলেই এখানে নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হবে, ধরতে পারেন এটা এখন প্রক্রিয়াধীন।’
Posted ৮:০৫ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৫ আগস্ট ২০১৯
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad