সিলেটের বিশ্বনাথে এক লন্ডন প্রবাসীকে ডাব খাওয়াতে গিয়ে প্রাণ গেল শফিক আলী (৪০) নামের এক বাবুর্চির। তিনি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের দশপাইকা গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে। ময়নাতদন্ত ছাড়াই গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় দশপাইকা ঈদগাঁহ মাঠে জানাজা শেষে তাকে তার পঞ্চায়েতি কবর স্থানে দাফন করা হয়েছে। আগেরদিন রোববার পার্শ্ববর্তি ধনপুর গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী জিলু মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, প্রতি বছর ধনপুরের যুক্তরাজ্য প্রবাসী জিলু মিয়া দেশে ফিরলে ৪সন্তানের জনক শফিক নামের ওই বাবুর্চি শ্রমিক হিসেবে তাদের সেবা দেন। রান্না থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের কাজও তিনি করেন। সম্প্রতি ওই প্রবাসী জিলু মিয়া দেশে ফিরলে প্রতিবারের মতো বাবুর্চি শফিক প্রবাসীর বাড়িতে কাজে যোগদেন। অনেক সময় নিজের ইচ্ছায় প্রবাসীদের জন্য অনেক খাবারও তৈরী করেন। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার প্রচন্ড গরম থাকায় প্রবাসী জিলু মিয়াকে ডাব খাওয়াতে ওইদিন দুপুরে নারিকেল গাছে ওঠেন। এসময় নারিকেল গাছ থেকে মাটিতে পড়ে গুরুতর আহত হন ও জ্ঞান হারান। পরে প্রবাসী ও স্বজনরা প্রথমে তাকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে ভর্তি করেন। প্রায় ৪ঘন্টা চিকিৎসাধীন থাকার পর সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর তার স্বজনরা লাশ নিয়ে বাড়িতে ফিরে যান এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশে খবর দেন। রাত ৮টারদিকে থানা পুলিশের এসআই দিদার আলম ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করেন। অবশেষে সোমবার সকালে বিশ্বনাথ থানার ওসি শামীম মুসা ও এসআই দিদার আলমের অনুমতি সাপেক্ষে ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করা হয়।
ধনপুর গ্রামের ইউপি সদস্য ওয়াহাব আলী ও দশপাইকা গ্রামের ব্যবসায়ী উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা বশির উদ্দিন বলেন, প্রবাসী জিলু মিয়া যতবারই দেশে ফিরেছেন ততবারই দরিদ্র বাবুর্চি তাদের সেবা দেওয়ার জন্য প্রবাসীর বাড়িতে দিনরাত সময় দিয়েছেন। এবারও এর ব্যাতিক্রম হয়নি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, প্রবাসীকে ডাব খাওয়াতে গিয়েই শাফিক বাবুর্চি প্রাণ হারাণ।
বিশ্বনাথ থানার ওসি শামীম মুসা ও এসআই দিদার আলম বলেন, নিহতের পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় ময়না তদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়েছে।
Posted ১০:৪৫ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৫ আগস্ট ২০১৯
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad