বুধবার ২৯শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

পাহাড়পুর  অগ্নি কান্ডে স্বর্গপুরী শ্মশানে পরিনত, ক্ষয়ক্ষতি ৩০ কোটি 

শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০     148 ভিউ
পাহাড়পুর  অগ্নি কান্ডে স্বর্গপুরী শ্মশানে পরিনত, ক্ষয়ক্ষতি ৩০ কোটি 

পি সি দাশ, শাল্লা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি : হাওর অঞ্চলের জেলাগুলোতে অতিতে এত বড় ভয়াবহ অগ্নি কান্ডের ঘটনা ঘটেনি।  শুক্রবার বেলা ৩.২৮ ঘটিকায় হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পাহাড়পুর বাজার আগুনে পুড়ে ছাঁই হয়ে গেছে।

আগুনে পুড়ে ধ্বংস হয় গেছে প্রায় ৬২ টি দোকান ঘর। এতে প্রায় ৩০ কোটি টাকার মালামালসহ দোকান ঘর বিনষ্ট হয়ে গেছে । শুক্রবার হঠাৎ ৩.২৮ ঘটিকায় আগুনের সুত্রপাত  হলে এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় সবার  অক্লান্ত প্রচেষ্টায় রাত ৮ টায় আগুন  নিয়ন্ত্রনে আসে । দীর্ঘ ৫ ঘন্টার  আগুনে  বহু পরিবারের লালিত  স্বপ্ন বিলিন হয়েছে। সেই আগুনে সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলার ব্যবসায়ীদের ও প্রায় ৪ কোটি টাকার  ক্ষতিগ্রস্থ  হয়েছে।
শনিবার সকালে সরজমিন গিয়ে দেখা যায় যেন স্বর্গপুরী শ্মশানে পরিনত। আগুনের দাবানলে বিলিন করে দিয়েছে ছোট বড় ৬২ টি দোকান ঘর। এমন সময় অনেকেই ধ্বংস হয়ে যাওয়া দোকানের সামনে কাঁদতে দেখা যায়। নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে  থাকা বাজারের বড় ব্যবসায়ী মাটিয়ারখারার গ্রামের  বিশ্বজিৎ দাস জানান তার প্রায়  ২ কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ছাঁই হয়ে গেছে বলেই তিনি কেঁদে ফেলেন।
অগ্নিকান্ডে পাহার পুর বাজারের ব্যবসায়ী শাল্লা উপজেলার প্রতাপপুর গ্রামের রাসমনি দাসের ২৭ লাখ, বড় ব্যবসায়ী হরিপদ দাসের প্রায় দেড় কোটি, বিষ্ণু দাসের ২৪ লাখ, বিধান দাসের প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।  বেড়াডহরসহ আরো ছোট ছোট বহু ব্যবসায়ীর দোকান  আগুনে পুড়েছে।
এঘটনায় প্রতাপপুর গ্রামের  বড় ব্যবসায়ী হরিপদ দাস বলেন , আমি কি করি ভাই বুঝতে পরছিনা,  আমার কথা বলার ভাষা নাই। তিনি বলেন আমার ৪ টি ঘর নিয়ে একত্রে একটি ঘর তৈরি করে তিলে তিলে  প্রায় ২ কোটি টাকার ব্যবসায় উন্নতি  করেছিলাম। আগুনে সব শেষ হয়ে গেছে বলেই হাউ মাউ করে কাঁদতে থাকেন। একই গ্রামের রাসমনি দাস বলেন, আমার সব শেষ কি করে যে বাঁচবো জানিনা। তিনি জানান নগদ টাকাসহ  তার প্রায়  ২৭  লাখ  টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।  তিনি এ চিন্তায় সংবাদ লিখা পর্যন্ত কিছুই আহার করেননি।  অন্য একজন ব্যবসায়ী বিষ্ণুপদ দাসের ৩০ লাখ, বিধান দাসের ২৪ লাখ টাকার মাালামালসহ শাল্লার কয়েকটি  গ্রামের লোকজনের
দোকান আগুনে পুড়ে শেষ হয়ে গেছে বলে তারা জানান।
এনিয়ে শাল্লা উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বলেন এত বড় আগুনের তান্ডব আমি অতিতে দেখিনি। আগুনে পুড়ে যে ক্ষতি হয়েছে তা অনেকেই পুরণ করতে পারবেনা। অনেকই পথে নেমে যাবে। এঘটনায় এলাকাজোরে অন্ধকার নেমে এসেছে।
শাল্পার প্রতাপপুর গ্রামের  পাহাড়পুর বাজার ব্যবসায়ী তরনী কান্ত দাস বলেন। তিনি লামা বাজারের ব্যবসায়ী হওয়ায় তার কোন ক্ষতি হয়নি। তবে মূল বাজারে যে ক্ষতি হয়েছে তা কখনোই পুরণ হবার নয়। তিনি বলেন এখন ও ক্ষতিগ্রস্থ অনেক পরিবারে রান্নাই হয়নি এ চিন্তায়। সবাই কান্নাকাটি করছে।
এনিয়ে কথা হয় শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদির হোসেন এর সাথে তিনি বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখ জনক। পাহাড়পুর বাজার আমাদের শাল্লার পাশাপাশি হওয়ায় সেখানে শাল্লা প্রতাপপুর গ্রামের বেশ কয়েকজন  বড় বড়  ব্যবসায়ী ছিল। আগুনে  তাদের ও ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে শুনেছি। শাল্লা প্রশাসন  তাদের ক্ষয়ক্ষতি হিসেব করে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করবো। সেই  আলোকে সরকার কর্তৃক  ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্যের  জন্য  প্রয়োজনীয়  পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
এদিকে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার প্রশাসন ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন বলে সূত্রে জানা যায়। এলাকাবাসী বলছে হাওর অঞ্চল হওয়ায় এখানে ফায়ার সার্ভিসের কোন ষ্টেশন নাই। থাকলে এত বিশাল পরিমানের ক্ষয়ক্ষতি হতো না। এবিষয়ে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য এলাকাবাসী দাবী জানান।
Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৮:৫৬ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

Sylheter Janapad |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০  
সম্পাদক ও প্রকাশক
গোবিন্দ লাল রায় সুমন
প্রধান কার্যালয়
আখরা মার্কেট (২য় তলা) হবিগঞ্জ রোড, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার
ফোন
+88 01618 320 606
+88 01719 149 849
Email
sjanapad@gmail.com