মঙ্গলবার ৩০শে মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি দক্ষিণ সুনামগঞ্জের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ: কৃষকের মনে আতঙ্ক

শনিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০     153 ভিউ
নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি দক্ষিণ সুনামগঞ্জের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ: কৃষকের মনে আতঙ্ক

কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার কৃষকদের একমাত্র ভরসা বোরো ফসল। বর্তমান সরকার খাদ্য সংকট মোকাবিলা করতে সুনামগঞ্জের অন্যতম শস্য-ভান্ডার বোর ফসল রক্ষার্থে ক্রুটিপুর্ণ বাঁধ নির্মান ও ক্লোজার (ভাঙ্গা) মেরামতের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করার নিয়মনীতি বেঁধে দিলেও দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ৫০ টি বাঁধের মধ্যে অধিকাংশ বাঁধের মাটি কাটার কাজ শেষ হলেও রয়ে গেছে স্লুপ, দুরমুছ ও ঘাস লাগনোর কাজ। আর অধিক ঝুকিপূর্ণ দরগাপাশা ইউনিয়নের জামলখলা হাওরের ০৪ নং পিআইসির জামখলা বাঁধ ও পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের ০১ নং পিআইসির শল্লাদাইড় বাঁধের মাটি কাজ শেষ হয়নি এখনও।

পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের ঝুকিপূর্ণ ৩২ নং পিআইসির রাঙ্গামটির বাঁধ,৩৩ নং পিআইসির বাঁধে নামমাত্র মাটি ফেলে অগোচালো অবস্থায় রাখা হয়েছে। এছাড়া পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের কাউয়াজুড়ী হাওরের ৪৮,৪৯ ও ৫০ নং পিআইসি এবং খাই হাওরের ২৭ নং পিআইসির বাঁধের মাটি কাটা শেষ হয়নি। উপজেলার অন্যান্য বাঁধের মাটি কাটার কাজ শেষ হলেও নামমাত্র কয়েকটি বাঁধের  স্লুপ এবং দুবরা ঘাস লাগনোর কাজ চললে ও অধিকাংশ বাঁধের  স্লুপ, কম্প্রেসার এবং দুবরা ঘাস লাগানো শুরুই হয়নি। যার ফলে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার দেখার হাওর, সাংহাই হাওর,কাচিভাঙ্গাঁ হাওর,জামখলা হাওর ও খাইহাওরের কৃষকদের ২২ হাজার হেক্টর জমির একমাত্র বোরো ফসল হুমকির মুখে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, জামখলা হাওরের জামখলা বাঁধ, শল্লাদাইড় বাঁধ, খাই হাওরের রাঙ্গামাটি বাঁধ, পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের কাউয়াজুরী হাওরের ৪৮,৪৯,৫০ ও খাই হাওরের ঝুকিপূর্ণ ২৭ নং পিআইসির বাঁধের মাটি কাটা সহ অন্যান্য কাজে যথেষ্ট পরিমান ত্রুটি রয়েছে। এছাড়া উপজেলার অন্যান্য বাঁধগুলোর মাটি কাটার কাজ শেষ হলেও দুরমুচ,কম্প্রেসার,দুবরা ঘাষ লাগানোর কাজের ধীরগতি দেখা দিয়েছে। তবে উপজেলার দেখার হাওর,কাচিভাঙ্গা,খাই হাওর ও সাংহাই হাওরের কয়েকেটি পিআইসির বাঁধের কাজ বিগত বছরের চেয়ে তুলনামূলক ভাল হয়েছে।

আবার বিগত বছরগুলিতে বিপদগ্রস্থ জামখলা,শল্লাদাইড় ও রাঙ্গামটি এবং বেধাখালির বাঁধগুলোর যে অংশ দিয়ে হাওরে পানি ঢুকে সোনালী ফসল তলিয়ে গিয়ে ছিল এবারো সেই অংশগুলোই বিপদগ্রস্থ বলে মত প্রকাশ করছেন অনেক কৃষক। বোর মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ী ঢল হলে মহাসিং নদীর পানি বিপদ সীমার কাছাকাছি চলে আসে। যা পানির প্রথম ধাক্কায় বাঁধগুলো হুমকির সম্মুখীন। পাউবো’র নিয়ম অনুযায়ী যে মাপের ভিত্তিতে কাজ করার কথা ছিল সে অনুযায়ী কিছু কিছু পিআইসি কাজ করলে ও কয়েকটি পিআইসি তা না করে বাঁধের একেবারে নিকট থেকেই বড় বড় গর্ত করে এসকেবেটর দিয়ে মাটি তুলে বাঁধ নিমার্ণ করেছে যা বাঁধের জন্য বিরাট হুমকি স্বরুপ।

সরকার প্রতিবছর ফসল রক্ষা বাধঁ নিমার্ণের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিলে ও বিগত বছরগুলোতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু সুযোগ সন্ধানী দূনীর্তিবাজ কর্মকতা ও ঠিকাদারদের ব্যাপক অনিয়ম-দূনীতির কারণে সময়মতো সুনামগঞ্জ জেলার হাওর ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মানের নামে লুকোচুরি, অসমাপ্ত কাজ, টেকসই বাধঁ নির্মান না হওয়া, সময় কালক্ষেপন ইত্যাদি কারণে আাগাম বন্যায় কৃষকরা তাদের সোনালী ফসল হারাতে হয়েছিল। এ বছর কৃষকরা তাদের স্বপ্নের সোনালী ফসল পিআইসিদের অবহেলায় ও খামখেয়ালীর কারণে হারাতে চান না।

উপজেলা পানি বোর্ডের অফিস সূত্রে জানা যায়: সরকার চলতি বছরে নির্ধারিত সময়ে বাঁধ নির্মানের জন্য টাকা বরাদ্দ দিলেও কাজের প্রাক্কালন করতে বিলস্ব হওয়ায় কাজ শুরুর কথা ১৫ ডিসেম্বর হলেও কাজ শুরু হয় জানুয়ারীর প্রথম দিকে তা আবার ২৮ ফেব্র“য়ারীর মধ্যে কাজ শেষ করার নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়। ফলে এখন পর্যন্ত কিছু বাঁধের কাজ শেষ হয়নি। এদিকে বাঁধের কাজ কবে সম্পন্ন হবে কি হবেনা এ নিয়ে চরম হতাশা আর শঙ্কায় রয়েছেন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার প্রায় পৌনে একলাখ কৃষক। কৃষকরা আরও জানান এবারে বাঁধের কাজ সময়মত শেষ না হলে আগাম বন্যার কবল থেকে তাদের ফসল রক্ষা করতে পারবে কিনা এ নিয়ে ও রয়েছে তাদের মাঝে চরম হতাশা আর আতংঙ্ক।

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেবুন্নাহার শাম্মী জানান, ‘কাজের সময়সীমা অনুযায়ী বাঁধের কাজের প্রথম দিকে পিআইসিদেরকে দ্রুত শেষ করার জন্য বার বার তদারকি করেছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অধিকাংশ বাঁধের কাজ শেষ হয়েছে কিছু সংখ্যক বাঁধের কাজে যে সমস্ত পিআইসিরা গাফিলতি করেছে তাদেরকে সাজা দেওয়া হয়েছে এবং কয়েকটি পিআইসির কমিটি বদল করে নতুর কমিটি দেওয়া হয়েছে যাহাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হয়। আশা করি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বাঁধের কাজ শেষ করা হবে।‘ এছাড়া যেসকল বাঁধের স্লূপ,কম্প্রেসার কম হয়েছে এবং দুবরা লাগাতে দেরী হচ্ছে এই সকল বাঁধের সকল পিআইসিকে বলে দেওয়া হয়েছে দ্রুত সময়ের মধ্যে নীতিমালা অনুযায়ী কাজ শেষ করার জন্য। মাদ্রাসায় আগুন

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৮:১৪ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

Sylheter Janapad |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
সম্পাদক ও প্রকাশক
গোবিন্দ লাল রায় সুমন
প্রধান কার্যালয়
আখরা মার্কেট (২য় তলা) হবিগঞ্জ রোড, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার
ফোন
+88 01618 320 606
+88 01719 149 849
Email
sjanapad@gmail.com