আশিক মিয়া, দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি :
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে দাপনের ২৪দিন পর আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে মোশারফ হোসেন মাসেক (৬৫)-এর লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার(১৯ ডিসেম্বর) সকাল সারে ১০ ঘটিকার সময় উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের কলাউড়া গ্রামের কলাউড়া মাদ্রাসার কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে নেয়া হয়েছে।
আদালতের নির্দেশে লাশ উত্তোলন করান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাহুল চন্দ্র, এসময় উপস্থিত ছিলেন দোয়ারাবাজার থানার এসআই রাকিবুল হাসান, স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন সহ সাংবাদিকবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন। এসময় সাংবাদিকদের নিকট মোশারফ হোসেন মাসেকের মৃত্যুর সঠিক রহস্য উদঘাটন ও ন্যায় বিচার দাবি করেন স্থানীয়রা।
উল্লেখ্য,সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের রামসাইরগাও গ্রামের মৃত হাজী সুরুজ মিয়ার পুত্র মোশারফ হোসেন মাসেক গত ২৬ নভেম্বর কুমিল্লা শহরের শাসনগাছা মাইজবাড়ীকোট এলাকায় দ্বিতীয় স্ত্রী রাবিয়া আক্তার লাকীর পিত্রালয়ে মারা যান । ঐদিনই মৃত মোশারফ হোসেন মাসেকের লাশ তার নিজ বাড়ী দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের রামসাইরগাও নিয়ে আসেন। ২৬ নভেম্বর স্থানীয় কলাউড়া মাদ্রাসা কবরস্থানে দাফন করা হয়।
তবে এ মৃত্যুকে পরিকল্পিত হত্যা উল্লেখ করে মোশারফ হোসেন মাসেকের মেয়ে মোছাঃজান্নাতুল ফেরদৌস আক্তার রুমি গত ৫ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ আমল গ্রহণকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা (সি আর ৩১৫/১৯ দোয়ারাবাজার স্বারক নং ৮৭৯ তারিখ ৫/১২/১৯ দায়ের করেন। মামলায় মোশারফ হোসেন মাসুক মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী রাবিয়া আক্তার লাকী(৪০), বাংলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য ভাওয়ালীপাড়া গ্রামের মৃত মুসলিম আলীর পুত্র মোজাম্মেল হোসেন(৪০),কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানার পূর্ব অসততলা বাগমারা(শাসনগাছা মাজন বাড়ী )গ্রামের নকসুদ আলীর স্ত্রী হাসি আক্তার(৫৫),মৃত রমজান আলীর পুত্র মকসুদ আলী(৬০),মকসুদ আলীর পুত্র ছোটন মিয়া(৩৫)সহ অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়।
নিহত মোশারফ হোসেন মাসেকের মেয়ের জামাতা দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রেনু মিয়া বলেন, আমার শশুর বিদেশে থাকবস্তায় সৎ শাশুড়ী উনার নামে কুমিল্লায় একটা বাড়ি করেন। আমার শশুড় দেশে আসার পর জানতে পারেন কুমিল্লায় যে বাড়ি কিনা হয়েছে সেই বাড়ি উনি উনার নামে করে নিয়েছেন। এর পরেই আমার শশুড় অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই সুযোগে আমাদের এলাকার ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হোসেনের যোগ সাজসে যা জমি জমা ছিল সু কৌশলে উনার নামে নিয়া গেছেন এবং জমি জমা বিক্রি করে সম্পুর্ন টাকা পয়সা আত্মসাৎ করেছেন।
দোয়ারাবাজার থানার এসআই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান বলেন, মামলাটি আদালতের আমলে নিয়ে এফ আই আর হিসাবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওসি দোয়ারাবাজার থানা কে নির্দেশ দেন।আদালতের আদেশ পেয়ে গত ১৫/১২/২০১৯ তারিখে মামলাটি রুজু করা হয়। দোয়ারাবাজার থানার মামলা নং ১২ তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯।
বিজ্ঞ আদালতে লাশ উত্তোলনের জন্য আবেদন করি। আবেদনের প্রেক্ষিত্বে আদালতের আদেশে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করলে জেলা প্রশাসক মহোদয় লাশ উত্তোলনের জন্য ম্যাজিষ্ট্রিরিয়াল দায়িত্ব পালনের জন্য রাহুল চন্দ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সুনামগঞ্জকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাহুল চন্দের সার্বিক তত্ত্বাবধানে লাশ উত্তোলন করে সুরুত হাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়না তদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।