শায়েস্তাগঞ্জসহ হবিগঞ্জের সর্বত্র অবৈধ পাখি নিধনের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশের উপকারী পাখি ও দেশের জীববৈচিত্র। কারণ এমনিতেই হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের চির পরিচিত ও উপকারী পাখি শালিক, চড়ুই, বাবুই, দোয়েল, কোয়েল, ময়না, শামা, ঘুঘু, মাছরাঙা, হলদে পাখি, বউকথা কও পাখিসহ নাম না জানা হাজারো প্রজাতির পাখি। এসব পাখিদের মধ্যে গ্রাম বাংলার মাঠে ঘাটে সব সময় চোখে পড়তো বিভিন্ন প্রজাতির শালিক ও ঘুঘু পাখি। এ শালিক, ঘুঘু পাখিগুলি কৃষকদের ক্ষেতের ক্ষতিকারক পোকামাকড় খেয়ে কৃষি পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করতো। এই শালিকের রয়েছে বাহারী নাম যেমন, গো-শালিক, গাঙ শালিক, ভাস-শালিক ধান-শালিক ইত্যাদি। এই উপকারী পাখিগুলির কিচির মিচির শব্দে মুখরিত হতো পল্লী গায়ের ঝোঁপঝাড় আর বাঁশবাগানগ। প্রকাশ পেতো আবহমান বাংলার নৈস্বর্গিক রূপ।
সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে শায়েস্তাগঞ্জসহ হবিগঞ্জের যত্রতত্র অবাধে চলছে পাখি শিকার। উপজেলার বিভিন্ন জলাশয় এবং হাওর থেকে এসব শিকারীরা পাখি শিকার করে হবিগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের সামনে, শায়েস্তাগঞ্জ আন্তজেলা বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে বিক্রি করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। হবিগঞ্জ সদর উপজেলার শরীফপুর গ্রামের মশাজান এলাকায় আল আমিন নামে এক পাখি শিকারীকে প্রকাশ্যে বক পাখি বিক্রি করতে দেখা গেছে। তার সাথে আলাপকালে জানা যায়, ওই অঞ্চলের লোকজন হাওরে জাল দিয়ে ফাঁদ পেতে বক, শালিকসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি শিকার করে। তারা প্রতিদিন গড়ে ২০/৩০ জোড়া পাখি বিক্রি করে। পাখি শিকার এবং বিক্রিকে স্বাভাবিক ব্যাপার বলে মনে করে তারা। একটি বক পাখি ১শ টাকায় বিক্রি হয় বলে জানা গেছে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, পাখি শিকার আইনত অপরাধ, কিন্তু মানছে না শিকারিরা।
এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের। শীতের সময় হবিগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় বক ও পেরি হাঁস, শালিকসহ নানান জাতের অতিথি পাখি শিকার করে তারাই। এদিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে পাখি বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ বলেন, পাখি শিকারের বিরুদ্ধে এর আগেও অভিযান হয়েছে এবং এ অভিযান অব্যহত থাকবে। তাই পাখি শিকার নিষিদ্ধ আইনের বাস্তব প্রয়োগ ঘটিয়ে পাখি নিধন বন্ধের পাশা-পাশি পাখিদের অভয়াশ্রম সৃষ্টি করে পরিবেশের ভারসম্য রক্ষার দাবী সচেতন ও সুধীজনদের।
Posted ১০:৩৭ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট ২০১৯
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad