দিরাই (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি : আগামী ২৮ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সুনামগঞ্জের দিরাই পৌরসভা নির্বাচন। আসন্ন নির্বাচনে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আ.লীগ ও বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেতে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তবে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামীলীগ থেকে সাবেক দুই ছাত্রলীগ নেতা আসাদ উল্লাহ ও বিশ্বজিৎ রায় ও বিএনপি থেকে সাবেক যুবদল নেতা মঈন উদ্দিন চৌধুরী মাসুক ও বিএনপি নেতা আব্দুল কাইয়ুম।
এছাড়াও আওয়ামীলীগ থেকে বর্তমান মেয়র আলোচিত তিন খুনের মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামী মোশাররফ মিয়া ও বিএনপি থেকে সাবেক ছাত্রদল নেতা অ্যাডভোকেট ইকবাল হোসেন চৌধুরী দলীয় মনোনয়ন পেতে জোর লবিং করছেন বলে জানা গেছে। এদিকে জাতীয় পার্টি থেকে অনন্ত মল্লিককে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষনা করা হয়েছে।
স্থানীয় আওয়ামীলীগের একাধিক সুত্রে জানাগেছে, জাতীয় নেতা প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জীবদ্দশায় বিগত পৌর নির্বাচনে পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি তৎকালীন পৌর মেয়র আজিজুর রহমান বুলবুল নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে কপাল খোলে বর্তমান মেয়র মোশাররফ মিয়ার। দলীয় মনোয়ন নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিগত দিনে নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন মেয়র মোশারফ মিয়া ও তার স্বজনরা।
বিগত উপজেলা নির্বাচনে দিরাই-শাল্লার সাংসদ ড. জয়া সেনগুপ্তাকে চ্যালেঞ্চ ছুঁড়ে বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রকাশ্য বিরোধীতায় মাঠে নামেন তিনি। এরপর থেকে দলের তৃনমুল নেতাকর্মী, জেলা আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় সাংসদ ড.জয়া সেনগুপ্তার সাথে মোশাররফ মিয়াসহ তার অনুসারীদের দুরত্ব সৃষ্টি হয়। মোশারফ মিয়া দলে অনুপ্রবেশকারি ও নৌকার বিরোধীতাকারিদের নিয়ে আওয়ামীলীগের ভেতর নিজস্ব বলয় সৃষ্টি করেন। আলোচিত তিন খুনের মামলায় অভিযুক্ত বর্তমান মেয়র মোশাররফ মিয়া আদালতের পরোয়ানার কারণে বর্তমানে আত্মগোপনে থাকলেও মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পেতে দৌঁড়ঝাপ করছেন।
আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ৬৯ সালে দিরাই ইউনিট ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আসাদ উল্লাহ ও দিরাই কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি বিশ্বজিৎ রায় তুলনামূলক ক্লীন ইমেজের অধিকারী বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় ভোটারসহ বিভিন্ন সচেতন মহল।
এদিকে মেয়র পদে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুল কাইয়ুম, দিরাই পৌরসভার প্রতিষ্ঠাতা মেয়র আহমদ মিয়া, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মঈনুদ্দিন চৌধুরী মাসুক, পৌর ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইকবাল হোসেন চৌধুরী অন্যতম। তবে এক্ষেত্রে মঈনুদ্দিন চৌধুরী মাসুক ও আব্দুল কাইয়ুম কে এগিয়ে আছেন।
জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থী অনন্ত মল্লিক ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী চন্ডিপুর গ্রামের বাসিন্দা রশিদ মিয়া প্রচারণায় চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে জামায়াতে ইসলাম ও জমিয়তে উলাময়ে ইসলাম দলীয় ও কৌশলগতভাবেও মেয়র পদে কোন প্রার্থী দিবেন না বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে ভাটির হাওরের জনপদ দিরাই উপজেলা সদরকে পৌরসভায় উন্নীত করা হয়। উপজেলা সদরের ১৭ টি গ্রাম নিয়ে পৌরসভা গঠিত হয়। বর্তমানে ৯টি ওর্য়াডের দিরাই পৌরসভায় লোকসংখ্যা ৩২ হাজার ১৫৪ জন। ৬.৫ বর্গ মিটার আয়তনের এ পৌরসভায় বর্তমান ভোটার ২১ হাজার ৩৭৯ জন । এর মধ্যে পুরুষ ১০ হাজার ৫৫২ জন ও নারী ভোটার ১০ হাজার ৮২৭ জন।
২০১৫ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী হন বর্তমান মেয়র মোশাররফ মিয়া। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির দলীয় প্রার্থী মঈন উদ্দিন চৌধুরী মাসুক। এবার দিরাই পৌরসভার নির্বাচন আগামী ২৮ ডিসেম্বর। মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন ১ ডিসেম্বর।
Posted ৭:২৩ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৫ নভেম্বর ২০২০
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad