কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পুর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের খাই হাওরের ৩২ নং পিআইসির ফসল রক্ষা বাঁধের কাজের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গত ২০ ফেব্রুয়ারী অভিযোগটি দায়ের করেছেন পূর্ব বীরগাঁও ইউপির বাসিন্দা ও বীরগাঁও ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ছালেক উদ্দিন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়িনের খাই হাওর বেড়িবাধ এলাকায় পূর্ব বীরগাঁও, জয়কলস, দরগাপাশা ও পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের বোরো জমি অবস্থিত। উক্ত বাঁধের যেকোন জায়গায় ভাঙ্গন ধরে পানি হাওরে পানি প্রবেশ করলে উলেখিত এলাকার বোরো জমি তলিয়ে যাবে৷ এই বাঁধের মধ্যেই রাঙ্গামাটির ঝুকিপূর্ণ বাঁধটি অবস্থিত। উক্ত বাঁধটির দক্ষিণ দিকে লাউয়া নদী উত্তরে জলাশয় এবং উভয় পাশেই অনেক গভীর জায়গা বিদ্যমান। এই ঝুকিপূর্ণ বাঁধের পিআইসির সভাপতি/ সম্পাদক মিলে বাঁধের বরাদ্ধের টাকা আত্মসাৎ করার উদ্দ্যেশ্যে বাঁধটির পুরাতন স্লোপ এক্সেভেটর মেশিন দিয়ে কেটে নতুন বাঁধ নির্মাণ করছেন যার ফলে অতিবৃষ্টি বা সামান্য পানি আসলেই বাঁধটি ভেঙ্গে সাধারণ কৃষকের জমির ফসল তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, অভিযোগকারী উক্ত বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ বরাবরে মোবাইল ফোনে পরপর দুইদিন বিষয়টি অবগত করলে তিনি প্রকল্প পরিদর্শন করে বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বাস দেন। কিন্তু ১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়ন কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে খাই হাওরের দিকে না গিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নুর কালামকে সাথে নিয়ে জামখলা হাওরের দিকে চলে যান এবং পরে এই বাঁধে না গিয়ে সরাসরি চলে আসেন উপজেলায়। এই সময়ে উক্ত বাঁধটি তিনি পরিদর্শণ না করায় এলাকার সাধারণ কৃষকরা এই বাঁধ নিয়ে মারাত্মক আশংকা বোধ করছেন।
অভিযোগে আরও উলেখ করা হয়, বাঁধের একদম কাছ থেকেই এক্সেভেটর দিয়ে প্রায় ২ লাখ ৩৫ হাজার ৪ শত টাকার মাটির কাজ করানো হয়। বর্তমানে বাঁধের কাজ শেষ করার জন্য কোন শ্রমিক বাঁধে কাজ করছে না। বর্নিত প্রকল্পে ইউপি চেয়ারম্যান নুর কালাম দু-একবার প্রকল্প এলাকায় যান এবং নামমাত্র মাটি কাটাইয়া বাঁধের কাজ সমাপ্তি করে তার খেয়াল খুশিমত এই বিরুপ অবস্থার সৃষ্টি করেছেন। এবং চেয়ারম্যানের আপন চাচাতো ভাই ও মামাকে কাগজে কলমে প্রকল্পের সভাপতি/সম্পাদক করলেও এখনো কেউ তাদেরকে বাঁধে দেখতে পায়নি। ফলে বাঁধের জন্য সরকারের দেয়া প্রায় ১৭ লাখ টাকার বরাদ্ধে নামমাত্র মাটি কেটে টাকা আত্মসাতের পায়তারা চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রকল্পের প্রাক্কলন মোতাবেক কাজ করার জন্য জেলা প্রশাসকের সু-দৃষ্টি কামনা করেন অভিযোগকারী।
এব্যাপারে হাওর রক্ষা বাঁধের ৩২ নং পিআইসির সভাপতি শয়েদ নুর বলেন, আমার বাধের কাজ শেষ, এখন শুধু দোবরা কাজ রয়েছে।
এব্যাপারে পূর্ব বীরগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান নুর কালাম বলেন, কাজের কোন অনিয়ম নেই। বাঁধের ৮০% কাজ শেষ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেবুন নাহার শাম্মী বলেন, আমি কাজ পরিদর্শন করে এসেছি আগামীকাল পর্যন্ত পিআইসিকে সময় দেওয়া হয়েছে। যদি আগামীকালের মধ্যে বাঁধের কাজে ত্রুটি থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Posted ১:০৫ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad