কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ, সুনামগঞ্জ : করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে শ্রমিক সংকট ও আগাম বন্যার আশংঙ্কার মধ্যেও হাওরাঞ্চল সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় ধান কাটা এখন প্রায় শেষের দিকে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জান।
হাওরে শ্রমিক সংকট থাকায় উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে ধান কাটতে মাঠে দেখা যায়। এছাড়াও দ্রুত ধান কাটার জন্য সরকারের দেয়া কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন থাকায় লাভবান হয়েছেন কৃষক। ফলে সোনার ফসল ঘরে তুলতে পারায় কৃষকের মুখে এখন হাসির ঝিলিক৷ বেশিরভাগ কৃষকদের ধান কাটা শেষ হওয়ায় এখন ধানশুকাতে ব্যস্থ সময় পার করছেন কৃষাণ-কৃষাণীরা৷
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর দক্ষিণ সুনামগঞ্জে বোরো আবাদ হয়েছে ২২ হাজার ৩ শত ৩৯ হেক্টর এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। বড় ধরণের প্রাকৃতিক বিপর্যয় না আসায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ধান তোলা সম্ভব হয়েছে। কৃষকরা যাতে দ্রুত ধান ঘরে তুলতে পারেন তার জন্য কৃষি বিভাগ সবসময় তাদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়েছে। এবং ধান কাটা তদারকির জন্য উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়নে একজন করে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিয়োজিত রয়েছেন। সরকারি ১৬ টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন কৃষকদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে।
কৃষি অফিস আরও জানায়, সরকারি খাদ্য গুদামে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্যে ধান কিনতে ৪ হাজার কৃষকের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। লটারির মাধ্যমে নির্বাচিতদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হবে।
কৃষক ছমক আলী বলেন, আমি এক হাল (১২ কেদার) জমি আবাদ করেছিলাম আমার ধান কাটা শেষ। এই মহামারীতেও ধান ঘরে তুলতে পারায় ভালো লাগছে।
আরেক কৃষক আব্দুল আলী বলেন, শ্রমিক সংকটের কারণে কিছুটা বিলম্ব হলেও আমার ধান কাটা এখন প্রায় শেষের দিকে। ইনশাআল্লাহ ২-৩ দিনের মধ্যেই ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান এ প্রতিবেদককে বলেন, ধান কাটা এখন শেষের দিকে৷ আর কিছু দিনের মধ্যেই সমস্ত ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে৷
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেবুন নাহার শাম্মী এ প্রতিবেদকে বলেন উপজেলার সর্বস্থরের মানুষ, রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও জেলা প্রশাসকের সার্বিক তত্ত্বাবধানে কোন রকম বাঁধা বিপত্তি ছাড়াই উপজেলার কৃষকরা সোনার ফসল ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি আরও বলেন কৃষকের জন্য সরকারি বরাদ্দ অব্যাহত রয়েছে।