এভাবেই বিভিন্ন জায়গায় সড়কটির বেহাল অবস্থা। ছবি- সিলেটের জনপদ
প্রতি বছরেই বর্ষায় পাহাড়ী ঢলে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কটি ব্যাপক ভাঙনের কবলে পড়ে। বর্তমানে যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা পায়ে হেটে চলাই কষ্টের হয়ে দাড়িয়েছে। স্বাধীনতার ৪৮বছর পার হলেও এই সড়কটি চলাচলের উপযোগী না হওয়ায় উপজেলাবাসীর গলারকাটা হয়ে দাঁড়িছে।
উপজেলার তাহিরপুর-বাদাঘাট দূরত্ব ৮কিলোমিটার। উপজেলার ব্যাবসা বানিজ্যের প্রাণকেন্দ্র বাদাঘাট বাজার, ৪টি ইউনিয়ন, ৩টি শুল্ক ষ্টেশনে যেতে ও উপজেলা সদর কিংবা হাসপাতালে আসতে হলে এই সড়কটি ব্যবহার করতে হয় সর্বসাধারনকে। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দ্রুত সংস্কারে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষেকে বারবার তাগিদ দেবার পরও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে এলাকাবাসীসহ ভুক্তভোগীর মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর(এলজিইডি) তাহিরপুর উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়- ১৯৯৩সালে এলজিইডি তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কটি নির্মানের উদ্যোগ গ্রহন করেন। পরে বিভিন্ন চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ২০১১-১২অর্থ বছর পর্যন্ত সড়কের ৬কিলোমিটার কাজ পাকা করা হয়েছে। এরপর ২০১৮সালের শুরুর দিকে এই সড়কটিতে তিনটি ভাগে ভাগ করে মেরামতের জন্য প্রায় ৪কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয় সরকার। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অংশে কোন কাজই হয়নি। যা হয়েছে তাা লোক দেখানো কাজের নামে সরকারের টাকা লুটপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
শফিকুল মিয়া, রহিম উদ্দিনসহ স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ করে বলেন, ‘এই সড়কে সরকার প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্ধ দিলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত কন্ট্রাকটার এই সড়কের বৌলাই নদী উপর নির্মিত ব্রীজ থেকে সূর্যেরগাঁও ৪০-৪৫ফুট পাকা সড়ক নির্মাণ কাজ হয়েছে তাও একবারেই নিন্ম মানের, ব্রীজ থেকে টাকাটুকিয়া গ্রাম পর্যন্ত কাজ করার কথা ছিল কিন্তু কোন কাজ হয়নি। টাকাটুকিয়া ব্রীজে দুই পাশে মিলিয়ে বল্ক দিয়ে ২৫ফুট সড়কের কাজ হয়েছে একবারেই নিন্ম মানের। (টাকাটুকিয়ার ব্রীজ থেকে পাতারগাঁও ইসলামপুর পর্যন্ত সড়কের কাজ করার কথা কিন্তু কোন কাজ হয়নি। এবং পাতারগাঁও(ইসলামপুর)থেকে বাদাঘাট পর্যন্ত ৩কিলোমিটার সড়কে ঢালাইয়ে কাজ হয়েছে তাও নিন্ম মানের । ফলে ভাঙ্গা অংশে কাজ না হওয়ায় বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। আর বর্ষায় নৌকার উপরেই ভরসা করতে হচ্ছে সর্বস্থরের জনসাধরনকে।’
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রাম থেকে তাহিরপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কলেজ আসা শিক্ষক,ছাত্র-ছাত্রী,অভিবাবক,ব্যবসায়ী ও স্থানীয় এলাকাবাসী ক্ষোভের সাথে জানান- ‘তাহিরপুর-বাদাঘাট রাস্তাটি খুবেই গুরুত্বপূর্ন। গুরুত্বপূর্ন অংশে দায়িত্বপ্রাপ্তরা কাজের নামে টাকা লুটপাট করেছে। এই রাস্তা ভাঙ্গা-ছোড়া থাকায় যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ আর পরিবহনে অতিরিক্ত টাকা দিতে হচ্ছে। আর বৃষ্টি হলে চলাচল করা যায় না। জোড়াতালি দিয়ে চলাচল করলেও এখন চলাচল করা এবারেই বন্ধ রয়েছে। নৌকা দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর(এলজিইডি)সাইদুল্লাহ মিয়া জানান, ‘এই সড়কে ভাঙ্গনের বিষয় উর্ধবতন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জনসাধারনের চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল জানান- ‘তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়ক একটি গুরুত্বপূর্ন সড়ক। এ সড়কে কয়েকটি স্থানে ভাঙ্গনের কারনে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে ৪টি ইউনিয়নবাসীকে। জনস্বার্থে দ্রুত মেরামত করা খুবই প্রয়োজন।’
Posted ৬:২৩ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৫ আগস্ট ২০১৯
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad